সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ১ম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১। ব্যাকটেরিয়া কী?

উত্তরঃ আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত অসবুজ ও এককোষী আণুবীক্ষণিক জীবই হলো ব্যাকটেরিয়া।

প্রশ্ন-২। ক্ষণপদ কী?

উত্তরঃ ক্ষণপদ হলো অ্যামিবার দেহ থেকে আঙ্গুলের ন্যায় তৈরি অভিক্ষেপ।

প্রশ্ন-৩। অণুজীব কাকে বলে?

উত্তরঃ যেসব জীব খালি চোখে দেখা যায় না, দেখতে হলে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন হয় তাদেরকে অণুজীব বলে।

প্রশ্ন-৪। আমাশয় রোগ কয় ধরনের?

উত্তরঃ আমাশয় রোগ দু’ধরনের।

প্রশ্ন-৫। পাটের আঁশ ছাড়াতে কোন অণুজীবটি সাহায্য করে?

উত্তরঃ পাটের আঁশ ছাড়াতে ব্যাকটেরিয়া সাহায্য করে।

প্রশ্ন-৬। এমিবিক আমাশয় কাকে বলে?

উত্তরঃ এন্টামিবা নামক অণুজীব দ্বারা আক্রান্ত আমাশয়কে এমিবিক আমাশয় বলে।

প্রশ্ন-৭। এক্যারিওটা কী?

উত্তরঃ যে সকল অকোষীয় অণুজীব ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া দেখা যায় না, তাই এক্যারিওটা।

প্রশ্ন-৮। কক্কাস ব্যাকটেরিয়া কী?

উত্তরঃ যে সব ব্যাকটেরিয়ার কোষের আকৃতি গোলাকার তারাই কক্কাস ব্যাকটেরিয়া।

প্রশ্ন-৯। সিস্ট কি?

উত্তরঃ প্রোটিস্টা রাজ্যভুক্ত এককোষী জীব প্রতিকূল পরিবেশে কখনো কখনো নিজেদের দেহের ওপর যে গোলাকার শক্ত আবরণযুক্ত অবস্থার সৃষ্টি করে তাই সিস্ট।

প্রশ্ন-১০। ভাইরাস জীবনের লক্ষণ হারিয়ে ফেলে কখন?

উত্তরঃ ভাইরাসের আমিষ আবরণ থেকে নিউক্লিক এসিড বের হয়ে গেলে ভাইরাস জীবনের লক্ষণ হারিয়ে ফেলে।

প্রশ্ন-১১। ভাইরাস সৃষ্ট উদ্ভিদের দুটি রোগের নাম লেখো।

উত্তরঃ উদ্ভিদদেহে সৃষ্ট ভাইরাস ঘটিত দুটি রোগ নিম্নরূপঃ

১। ধানের টুংরো রোগ।

২। তামাকের মোজাইক রোগ।

প্রশ্ন-১২। ভাইরাসকে সরলতম জীব বলা হয় কেন?

উত্তরঃ জীবনের বৈশিষ্ট্য প্রদর্শনকারী নিউক্লিক এসিডের (DNA বা RNA) উপস্থিতির কারণে ভাইরাসকে জীব বলা হলেও এর দেহে কোষপ্রাচীর, প্লাজমালেমা, সুসংগঠিত নিউক্লিয়াস বা সাইটোপ্লাজন কিছুই নেই। এ সকল অঙ্গাণুর অনুপস্থিতির কারণে ভাইরাসকে সরলতম জীব বলে।

প্রশ্ন-১৩। দাদ বা ছুলি রোগীকে সুস্থ মানুষ থেকে আলাদা রাখা হয় কেন?

উত্তরঃ দাদ বা ছুলি ছত্রাকের সংক্রমণজনিত রোগ। ছত্রাকের সংক্রমণে হয় বলে এই রোগ অত্যন্ত ছোঁয়াচে। এ রোগীর সংস্পর্শে এলে কিংবা রোগীর ব্যবহৃত কাপড়-চোপড়, চিরুনি ব্যবহার করলেও এই রোগ সংক্রমিত হতে পারে। তাই দাদ বা ছুলি আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ মানুষ থেকে আলাদা রাখা হয়।

প্রশ্ন-১৪। প্রোক্যারিওটা ও ইউক্যারিওটা রাজ্যের মধ্যে ২টি পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ প্রোক্যারিওটা ও ইউক্যারিওটা রাজ্যের মধ্যে ২টি পার্থক্য হলো—

i. প্রোক্যারিওটা রাজ্যের অণুজীবের কোষের কেন্দ্রিকা সুগঠিত নয়। অপরদিকে ইউক্যারিওটা রাজ্যের অণুজীবের কোষের কেন্দ্রিকা সুগঠিত।

ii. প্রোক্যারিওটা রাজ্যের অণুজীবের দেহ আদিকোষের তৈরি। পক্ষান্তরে ইউক্যারিওটা রাজ্যের অণুজীবের দেহে প্রকৃত কোষ থাকে।

প্রশ্ন-১৫। ব্যাকটেরিয়ার উপকারী দিকগুলো কী কী?

উত্তরঃ ব্যাকটেরিয়ার উপকারী দিকগুলো হলো-

  • মৃত জীবদেহ ও আবর্জনা পচাতে সাহায্য করে।
  • প্রকৃতি থেকে মাটিতে নাইট্রোজেন সংরক্ষণ করে।
  • পাট থেকে আঁশ ছাড়াতে ব্যাকটেরিয়া সাহায্য করে।
  • দই তৈরিতেও ব্যাকটেরিয়ার সাহায্য নিতে হয়।
  • বিভিন্ন জীবন রক্ষাকারী এন্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি হয়।
  • অধিকাংশ রোগের প্রতিষেধক (যেমন- ডিপিটি টিকা) ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি হয়।
  • জিন প্রকৌশলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া মূল ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

 

প্রশ্ন-১৬। ব্যাকটেরিয়াকে উদ্ভিদ বলা হয় কেন?

উত্তরঃ উদ্ভিদের মতো নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের কারণে ব্যাকটেরিয়াকে উদ্ভিদ বলা হয়:

  • ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীর দৃঢ় প্রকৃতির। কিছু কিছু প্রজাতিতে সেলুলোজ পদার্থ উপস্থিত থাকে।
  • কিছু ব্যাকটেরিয়া স্বভোজী এবং অজৈব যৌগ থেকে জৈব খাদ্য সংশ্লেষণ ক্ষমতাসম্পন্ন।
  • ব্যাকটেরিয়ার খাদ্যগ্রহন পদ্ধতি উদ্ভিদের মতো। কোষপ্রাচীরের মাধ্যমে তরলাবস্থায় খাদ্য গ্রহণে সক্ষম।
  • ব্যাকটেরিয়া কোষের গঠন অনেকটা থ্যালোফাইটার মতো।
  • ব্যাকটেরিয়া ছত্রাকের সাথে সম্পর্কযুক্ত বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে।

 

প্রশ্ন-১৭। ভাইরাসকে প্রকৃত পরজীবী বলা হয় কেন?

উত্তরঃ ভাইরাস আমিষ আবরণ ও নিউক্লিক এসিড নিয়ে গঠিত। এদের আমিষ আবরণ থেকে নিউক্লিক এসিড বের হয়ে গেলে জীবনের সকল লক্ষণ হারিয়ে ফেলে। অর্থাৎ, জীবদেহের বাইরে এদের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। তাই ভাইরাসকে প্রকৃত পরজীবী বলা হয়।

প্রশ্ন-১৮। জিনগত পরিবর্তনে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহৃত হয় কেন?

উত্তরঃ কোনো উদ্ভিদ বা প্রাণীর মাঝে কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য পাওয়ার জন্য জিনগত পরিবর্তন দরকার। ব্যাকটেরিয়ার প্লাজমিড নামক অংশের সাহায্যে একটি জীবের কাঙ্ক্ষিত জিন অন্য জীবে স্থাপন করা হয়। তাই জিনগত পরিবর্তনে ব্যাকটেরিয়া সর্বক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন-১৯। ভাইরাস সুস্থ দেহে কীভাবে প্রবেশ করে?

উত্তরঃ ভাইরাস সাধারণত বায়ুর মাধ্যমে ছড়ায়। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে, রক্তগ্রহণ, মাদক গ্রহণ, একই সিরিঞ্জ ব্যবহার করে ইনজেকশন গ্রহণ এবং নানারকম অসামাজিক কর্মকাণ্ডে এই রোগ ছড়ায়। এভাবে নানা মাধ্যমে ভাইরাস সুস্থ দেহে প্রবেশ করে।

প্রশ্ন-২০। শেওলাযুক্ত পুকুরে মাছ মারা যায় কেন?

উত্তরঃ যে সকল পুকুরে অনেক বেশি শৈবাল জন্মায় সে সকল পুকুরের পানিতে সূর্যের আলো পৌছাতে পারে না। সূর্যের আলোর অপর্যাপ্ততার কারণে পুকুরের তলায় থাকা উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য ও অক্সিজেন উৎপাদন করতে পারে না। ফলে পুকুরের পানিতে অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দেয়। এই অক্সিজেনের অভাবে পুকুরের মাছ মারা যায়।

প্রশ্ন-২১। ভাইরাস উদ্ভিদের কোন কোন রোগ সৃষ্টি করে তা ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ ভাইরাস উদ্ভিদের নিম্নোক্ত রোগসমূহ সৃষ্টি করেঃ

  • তামাক গাছ – টোবাকো মোজেইক ভাইরাস
  • আলু গাছ – পোটাটো মোজেইক ভাইরাস
  • বিন গাছ – বিন মোজেইক ভাইরাস
  • ফুলকপি গাছ – ফুলকপির মোজেইক ভাইরাস

 

প্রশ্ন-২২। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে পার্থক্য লিখ।

উত্তরঃ নিচে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করা হলো-

ভাইরাস

  • এরা অকোষীয়, সরলতম জীব।
  • এদের দেহ শুধুমাত্র নিউক্লিক এসিড ও প্রোটিন দ্বারা গঠিত।
  • জীবদেহের বাইরে এরা জীবনের কোনো লক্ষণ প্রকাশ করে না।
  • এদের দেখতে ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন।

 

ব্যাকটেরিয়া

  • এরা এককোষী বা আদিকোষী জীব।
  • এদের দেহ নিউক্লিক এসিড, প্রোটিন এবং জৈব উপাদান দ্বারা গঠিত।
  • ব্যাকটেরিয়া স্বতন্ত্রভাবেই জীবনের লক্ষণ প্রকাশ করে।
  • আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে এদের দেখা যায়।
এন্টামিবা সিস্ট গঠন করে কেন?
উত্তরঃ প্রতিকূল পরিবেশে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এন্টামিবা সিস্ট গঠন করে। এটি গঠনের শুরুতে এরা গোলাকার শক্ত আবরণ তৈরি করে নিজেদের দেহ ঢেকে ফেলে। সিস্ট গঠন অবস্থায় এন্টামিবা স্পোরুলেশন পদ্ধতিতে বংশ বিস্তার করে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *