অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর
ব্যাপন বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ কোনো মাধ্যমে কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় বস্তুর স্বতঃস্ফুর্ত ও সমভাবে পরিব্যাপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে। যেমনঃ একটি পাকা কাঁঠাল ঘরের একটি কক্ষে রেখে দিলে তার গন্ধ বিভিন্ন কক্ষে ছড়িয়ে পড়ে। এটিই হল ব্যাপন।
ইমবাইবিশন কাকে বলে?
উত্তরঃ কলয়েডধর্মী বিভিন্ন পদার্থ (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে কোষপ্রাচীর) যে প্রক্রিয়ায় নানা ধরনের তরল পদার্থ (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পানি) শোষণ করে তাকে ইমবাইবিশন বলে। অধিকাংশ কলয়েডধর্মী পদার্থই পানিগ্রাহী। উদ্ভিদদেহে বিভিন্ন ধরনের কলয়েডধর্মী পদার্থ বিদ্যমান। যেমন স্টার্চ, সেলুলোজ, জিলেটিন ইত্যাদি।
অভেদ্য পর্দা কাকে বলে?
উত্তরঃ যে পর্দা দিয়ে দ্রাবক ও দ্রাব উভয় প্রকার পদার্থের অণুগুলো চলাচল করতে পারে না তাকে অভেদ্য পর্দা বলে। যেমন- পলিথিন, কিউটিনযুক্ত কোষপ্রাচীর।
ভেদ্য পর্দা কাকে বলে?
উত্তরঃ যে পর্দা দিয়ে দ্রাবক ও দ্রাব উভয়েরই অণু সহজে চলাচল করতে পারে তাকে ভেদ্য পর্দা বলে। যেমন- কোষপ্রাচীর।
অর্ধভেদ্য পর্দা কাকে বলে?
উত্তরঃ যে পর্দা দিয়ে কেবল দ্রবণের দ্রাবক অণু (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পানি) চলাচল করতে পারে কিন্তু দ্রাব অণু চলাচল করতে পারে না তাকে অর্ধভেদ্য পর্দা বলে। যেমন- কোষপর্দা, ডিমের খোসার ভিতরের পর্দা, মাছের পটকার পর্দা ইত্যাদি।
স্থলজ চাপ কাকে বলে?
উত্তরঃ অভিস্রবণ পদ্ধতিতে পানি শোষণের সময় কোষের স্ফীত ও শ্লথ হওয়ার ফলে যে চাপের সৃষ্টি হয় তাকে স্থলজ চাপ বলে।
কোষ রস কাকে বলে?
উত্তর : কোষস্থিত পানি ও দ্রবীভূত খনিজ লবণকে একত্রে কোষ রস বলে।
অভিস্রবণ কাকে বলে?
উত্তর : একই দ্রব ও দ্রাবকবিশিষ্ট দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একটি অর্ধভেদ্য পর্দা দ্বারা পৃথক থাকলে যে ভৌত প্রক্রিয়ায় দ্রাবক কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে অধিক ঘনত্বের দ্রবণের দিকে ব্যাপিত হয় তাকে অভিস্রবণ বলে।
প্রস্বেদনকে Necessary evil বলা হয় কেন?
উত্তর : উদ্ভিদ জীবনে প্রস্বেদন একটি অনিবার্য প্রক্রিয়া। প্রস্বেদনের ফলে উদ্ভিদ তার দেহ থেকে পানিকে বের করে অতিরিক্ত পানির চাপ থেকে মুক্ত করে। প্রস্বেদনের ফলে কোষরসের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। কোষরসের ঘনত্ব বৃদ্ধি অন্ত অভিস্রবণের সহায়ক হয়ে উদ্ভিদকে পানি ও খনিজ লবণ শোষণে সাহায্য করে। প্রস্বেদনের ফলে উদ্ভিদদেহ থেকে প্রচুর পানি বাষ্পাকারে বেরিয়ে যায়। এতে উদ্ভিদের মৃত্যুও হতে পারে। তাই আপাতদৃষ্টিতে উদ্ভিদের জীবনে প্রস্বেদনকে ক্ষতিকর প্রক্রিয়া বলেই মনে হয়। এ জন্য প্রস্বেদনকে উদ্ভিদের জন্য necessary evil বলা হয়।
উত্তর : নিচে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার শর্ত দেওয়া হলোঃ
- অভিস্রবণের জন্য দুটি দ্রবণ থাকতে হবে, একটির ঘনত্ব কম এবং অন্যটির ঘনত্ব বেশি হবে।
- ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ দুটি একটি অর্ধভেদ্য ঝিল্লি দ্বারা পরস্পর পৃথক থাকবে।
- দুটি দ্রবণ একই দ্রাবক (পানি) বিশিষ্ট হবে।
- একই তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলীয় চাপ হতে হবে।
শুকনো কাঠ পানিগ্রাহী- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : কাঠ সেলুলোজ জাতীয় পদার্থ দ্বারা গঠিত। আর সেলুলোজ হচ্ছে কলয়েডধর্মী পদার্থ। বেশির ভাগ কলয়েডধর্মী পদার্থই পানিগ্রাহী। আর শুকনো কাঠ পানির ঘাটতি থাকায় এবং তাদের কলয়েডধর্মী গুণের কারণে ইমবাইবিশন প্রক্রিয়ায় পানি শোষণ করে। তাই শুকনো কাঠ পানিগ্রাহী।