এইচএসসি (HSC) ভূগোল ১ম পত্র ২য় অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১। নিফে (NiFe) কী?

উত্তরঃ কেন্দ্রমণ্ডলের মূল গঠন উপাদান নিকেল (Ni) ও লোহা (Fe); তাই কেন্দ্রমণ্ডল নিফে (NiFe) নামে পরিচিত।

প্রশ্ন-২। ভূত্বকের সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ পৃথিবীর উপরিভাগের পাতলা কঠিন আবরণকে ভূত্বক বলে।

প্রশ্ন-৩। বায়ুপ্রবাহ কাকে বলে?

উত্তরঃ ভূপৃষ্ঠের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে বায়ু চলাচলকে বায়ুপ্রবাহ বলে।

প্রশ্ন-৪। আবহাওয়া কী?

উত্তরঃ কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানের বায়ুর তাপ, চাপ, আদ্র৴তা, মেঘাচ্ছন্নতা, বৃষ্টিপাত ও বায়ুপ্রবাহের দৈনন্দিন সামগ্রিক অবস্থাই উক্ত স্থানের আবহাওয়া।

প্রশ্ন-৫। উত্তর এবং দক্ষিণ নাতিশীতোষ্ণমণ্ডল কাকে বলে?

উত্তরঃ উত্তরে কর্কটক্রান্তি রেখা থেকে সুমেরুবৃত্ত এবং দক্ষিণে মকরক্রান্তি রেখা থেকে কুমেরুবৃত্ত পর্যন্ত প্রসারিত স্থানকে যথাক্রমে উত্তর এবং দক্ষিণ নাতিশীতোষ্ণমণ্ডল বলে।

প্রশ্ন-৬। প্লাবন সমভূমি কী?

উত্তরঃ বন্যায় পানিবাহিত পলি সঞ্চিত হয়ে নদীতীরে যে ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, তাই প্লাবন সমভূমি। যেমন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের সমভূমি।

প্রশ্ন-৭। মালভূমি কাকে বলে?

উত্তরঃ পর্বত থেকে নিচু কিন্তু সমভূমি থেকে উঁচু খাড়া ঢালযুক্ত ঢেউ খেলানো বিস্তীর্ণ সমতলভূমিকে মালভূমি বলে।

প্রশ্ন-৮। ব্যাসল্ট স্তরকে মেফিক স্তর বলা হয় কেন?

উত্তরঃ ভূত্বকের ব্যাসল্ট স্তর মূলত মহাসাগরীয় ভূত্বক গঠন করে। এ স্তরে ম্যাগনেশিয়াম ও লৌহজাতীয় সিলিকেট, অতিক্ষারকীয় ব্যাসন্ট শিলা প্রধান উপাদান। তাই একে মেফিক স্তর বলা হয়।

প্রশ্ন-৯। বৃষ্টিপাত কত প্রকার ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ মেঘ ঘনীভূত হয়ে পানি বিন্দুতে পরিণত হয়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসাই বৃষ্টিপাত। প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য অনুসারে বৃষ্টিপাত চার প্রকার। যথা পরিচলন, শৈলোৎক্ষেপ, ঘূর্ণিঝড় ও সংঘর্ষ বৃষ্টিপাত।

প্রশ্ন-১০। নিয়ত বায়ু বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ বায়ুপ্রবাহের ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ভূপৃষ্ঠের উচ্চচাপ হতে নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যে বায়ু সারা বছর নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হয়, তাকে নিয়ত বায়ু বলে। নিয়ত বায়ুর অপর নাম প্রবহমান বায়ু বা স্থায়ী বায়ুপ্রবাহ। বায়ুপ্রবাহ উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাঁ দিকে বেঁকে যায়।

প্রশ্ন-১১। অশ্বঅক্ষাংশ বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর বিস্তৃত কর্কটীয় শান্তবলয় অশ্ব অক্ষাংশ নামে পরিচিত। আগের দিনে সমুদ্রে পালতোলা জাহাজ বায়ুপ্রবাহ ও সমুদ্রস্রোতের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলাচল করত। এ অঞ্চলে বায়ুর পার্শ্বপ্রবাহ না থাকায় প্রাচীনকালে পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ বা পূর্ব এলাকা থেকে উত্তর আমেরিকামুখী ঘোড়াবোঝাই জাহাজ এ অঞ্চলে এসে আটকা পড়ত। তখন খাদ্য ও পানীয় জলের অভাবে ঘোড়াগুলোকে সাগরবক্ষে নিক্ষেপ করে জাহাজ হালকা করা হতো। সেই থেকে এ অঞ্চলের নাম হয়েছে অশ্ব অক্ষাংশ।

প্রশ্ন-১২। বরেন্দ্রভূমির মৃত্তিকা লালচে বর্ণের হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ প্লাইস্টোসিনকালে (আনুমানিক ২৫,০০০ বছর পূর্বে) গঠিত বরেন্দ্রভূমির মৃত্তিকা তৎকালে পলল সঞ্চয়ে গঠিত। প্লাইস্টোসিনকালে শেষ বরফ যুগের সমাপ্তিলগ্নে এখানে যে পলল সঞ্চিত হয়, তা মধুপুর কর্দম (Madhupur clay) নামে পরিচিত। জারিত (oxidized) আঠালো এবং দৃঢ় এ কর্দম লৌহ উপাদান মিশ্রিত। উপরন্তু এ অঞ্চলের মৃত্তিকা প্লাবিত হয় না। তাই বরেন্দ্রভূমির মৃত্তিকা লালচে বর্ণের।

প্রশ্ন-১৩। পাহাড় ও পর্বতের বৈসাদৃশ্য লেখো।

উত্তরঃ ৬০০ থেকে ১০০০ মিটার উঁচু স্বল্প বিস্তৃত শিলাস্তূপকে পাহাড় বলে। যেমন ময়মনসিংহের গারো পাহাড়। পক্ষান্তরে ১০০০ মিটারের বেশি উঁচু সুবিস্তৃত ও খাড়া ঢালবিশিষ্ট শিলাস্তূপকে পর্বত বলে। যেমন ভারতের বিন্ধ্য পর্বত। পাহাড় সাধারণত গম্বুজাকৃতি হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে পর্বত দীর্ঘ সংকীর্ণ বা চূড়াবিশিষ্ট হয়।

প্রশ্ন-১৪। ভঙ্গিল পর্বত কীভাবে সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ সমুদ্র তলদেশের বিস্তৃত অবনমিত স্থানে দীর্ঘকাল ধরে বিপুল পরিমাণ পলি এসে জমা হওয়ায় এর চাপে অবনমিত স্থান আরও নিচে নেমে যায়। পরবর্তী সময়ে ভূ–আলোড়ন বা ভূমিকম্পের ফলে এবং পার্শ্ববর্তী সুদৃঢ় ভূমিখণ্ডের প্রবল পার্শ্বচাপের কারণে ঊর্ধ্বভাঁজ ও নিম্নভাঁজের সৃষ্টি হয়। বিস্তৃত এলাকাজুড়ে এসব ঊর্ধ্ব ও নিম্নভাঁজসংবলিত ভূমিরূপ মিলেই ভঙ্গিল পর্বত গঠিত হয়।

প্রশ্ন-১৫। ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ নিচে ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করা হলো:

i. গিরিজনি আলোড়নের ফলে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়েছে।

ii. ভূভাগের স্থান পরিবর্তনের ফলে প্রান্তভাগের অংশ বিশেষে ভাঁজের সৃষ্টি হয়ে এ পর্বত গঠিত হয়।

iii. ভঙ্গিল পর্বতে সুউচ্চ শৃঙ্গ থাকে।

iv. স্তরযুক্ত নরম পাললিক শিলা দ্বারা এ পর্বত গঠিত।

v. এ ধরনের পর্বতে জীবাশ্মের (পাললিক শিলায়) উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।

vi. এ পর্বতের শিলাস্তরের মধ্যে মাঝে মাঝে আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা দেখা যায়।

vii. এ পর্বতে দীর্ঘ চ্যুতিরেখা লক্ষ করা যায়।

প্রশ্ন-১৬। অশ্মমণ্ডলের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ অশ্মমণ্ডল মহাদেশের তলদেশে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি. এবং গড়ে প্রায় ৩৫ কিমি. পুরু। সমুদ্রের তলদেশে এ স্তর ৩ থেকে ১০ কিমি. এবং গড়ে ৫ কিমি. পর্যন্ত পুরু। অশ্মমণ্ডলকে ২টি স্তরে ভাগ করা হয়েছে, যথা ক) লঘু শিলাস্তর ও খ) গুরু শিলাস্তর। লঘু শিলাস্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে গড়ে ১২.৮ কিমি. গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত এবং গুরু শিলাস্তরটির ঘনত্ব ২.৯৫-৩ কি.গ্রা./ঘনমিটার।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *