অভাগীর স্বর্গ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১। ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের লেখক কে?

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

প্রশ্ন-২। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৬ সালে ১৫ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন-৩। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কোন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় দেবানন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন-৪। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কত সালে বার্মা যান?

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৯০৩ সালে বার্মা যান।

প্রশ্ন-৫। ‘শরৎ সাহিত্যসমগ্র’ গ্রন্থের সম্পাদক কে?

উত্তরঃ শরৎ সাহিত্যসমগ্র’ গ্রন্থের সম্পাদক সুকুমার সেন।

প্রশ্ন-৬। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে কোন পদক প্রদান করেছিল?

উত্তরঃ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে জগত্তারিণী পদক প্রদান করেছিল।

প্রশ্ন-৭। ‘গৃহদাহ’ উপন্যাস কার রচনা?

উত্তরঃ ‘গৃহদাহ’ উপন্যাসের রচয়িতা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

প্রশ্ন-৮। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৯৩৮ সালের ১৬ই জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।

প্রশ্ন-৯। কাঙালীর বাবার নাম কী?

উত্তরঃ কাঙালীর বাবার নাম রসিক বাঘ।

প্রশ্ন-১০। ‘অশন’ শব্দটির অর্থ কী?

উত্তরঃ অশন শব্দটির অর্থ হলো খাদ্যদ্রব্য।

প্রশ্ন-১১। ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের সবচেয়ে ক্রিয়াশীল চরিত্র কোনটি?

উত্তরঃ কাঙালী।

প্রশ্ন-১২। ঠাকুরদাস মুখুয্যের স্ত্রী কয়দিনের অসুখে মারা গেলেন?

উত্তরঃ ঠাকুরদাস মুখুয্যের স্ত্রী সাতদিনের অসুখে মারা গেলেন।

প্রশ্ন-১৩। ঠাকুরদাস মুখুয্যের সন্তান কতজন?

উত্তরঃ ঠাকুরদাস মুখুয্যের সন্তান সাতজন।

প্রশ্ন-১৪। মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের কীসের কারবার ছিল?

উত্তরঃ মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের ধানের কারবার ছিল।

প্রশ্ন-১৫। কাঙালীর মা কোথায় উঠে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া দেখতে লাগল?

উত্তরঃ কাঙালীর মা উঁচু ঢিপিতে উঠে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া দেখতে লাগল।

প্রশ্ন-১৬। দূর থেকে শবযাত্রার সঙ্গী হয়েছিল কে?

উত্তরঃ দূর থেকে শবযাত্রার সঙ্গী হয়েছিল কাঙালীর মা।

প্রশ্ন-১৭। মেয়েরা কাঁদতে কাঁদতে মায়ের দুই পায়ে কী লেপে দিয়েছিল?

উত্তরঃ মেয়েরা কাঁদতে কাঁদতে মায়ের দুই পায়ে আলতা লেপে দিয়েছিল।

প্রশ্ন-১৮। প্রজ্বলিত চিতার নীল রঙের ধোঁয়ার মধ্যে কাঙালীর মা কীসের চেহারা দেখতে পেয়েছিল?

উত্তরঃ প্রজ্বলিত চিতার নীল রঙের ধোঁয়ার মধ্যে কাঙালীর মা রথের চেহারা দেখতে পেয়েছিল।

প্রশ্ন-১৯। কাঙালীর মা কোন বংশের মেয়ে ছিল?

উত্তরঃ কাঙালীর মা দুলে বংশের মেয়ে ছিল।

প্রশ্ন-২০। কাঙালীকে জলপানির জন্য প্রতিদিন কয় পয়সা দেওয়া হতো?

উত্তরঃ কাঙালীকে জলপানির জন্য প্রতিদিন দুই পয়সা দেওয়া হতো।

প্রশ্ন-২১। কাঙালী কীসের কাজ শিখতে আরম্ভ করেছিল?

উত্তরঃ কাঙালী বেতের কাজ শিখতে আরম্ভ করেছিল।

প্রশ্ন-২২। বামুন মা রথে চড়ে কোথায় যাচ্ছেন?

উত্তরঃ বামুন মা রথে চড়ে স্বর্গে যাচ্ছেন।

প্রশ্ন-২৩। মাকে বিশ্বাস করা কার অভ্যাস?

উত্তরঃ মাকে বিশ্বাস করা কাঙালীর অভ্যাস।

প্রশ্ন-২৪। কার মতো সতী-লক্ষ্মী দুলে পাড়ায় আর নেই?

উত্তরঃ কাঙালীর মা’র মতো সতী-লক্ষ্মী দুলে পাড়ায় আর নেই।

প্রশ্ন-২৫। অভাগীর সন্তানের নাম কী?

উত্তরঃ অভাগীর সন্তানের নাম কাঙালী।

প্রশ্ন-২৬। কাঙালী কবিরাজকে কয় টাকা প্রণামী দিয়েছিল?

উত্তরঃ কাঙালী কবিরাজকে এক টাকা প্রণামী দিয়েছিল।

প্রশ্ন-২৭। কাঙালী ঘটি বাঁধা দিয়ে কী করেছিল?

উত্তরঃ কাঙালী ঘটি বাঁধা দিয়ে কবিরাজকে এক টাকা প্রণামী দিলো।

প্রশ্ন-২৮। কবিরাজ কাঙালীকে কয়টি বড়ি দিয়েছিল?

উত্তরঃ কবিরাজ কাঙালীকে গোটা চারেক বড়ি দিয়েছিল।

প্রশ্ন-২৯। কাঙালীদের ঘরের আঙিনায় কী গাছ ছিল?

উত্তরঃ কাঙালীদের ঘরের আঙিনায় বেলগাছ ছিল।

প্রশ্ন-৩০। গ্রামে কে নাড়ি দেখতে জানত?

উত্তরঃ গ্রামে ঈশ্বর নাপিত নাড়ি দেখতে জানত।

প্রশ্ন-৩১। জমিদারের দারোয়ান কাকে চড় মেরেছিল?

উত্তরঃ জমিদারের দারোয়ান রসিককে চড় মেরেছিল।

প্রশ্ন-৩২। কুটির প্রাঙ্গণে বেলগাছটা কে লাগিয়েছিল?

উত্তরঃ কুটির প্রাঙ্গণে বেলগাছটা লাগিয়েছিল কাঙালীর মা।

প্রশ্ন-৩৩। দারোয়ান কোন জাতের ছিল?

উত্তরঃ দারোয়ান হিন্দুস্থানি ছিল।

প্রশ্ন-৩৪। অধর রায় গাছের দাম কত টাকা দাবি করে?

উত্তরঃ অধর রায় গাছের দাম পাঁচ টাকা দাবি করে।

প্রশ্ন-৩৫। কাঙালীর কথায় কে বিস্মিত ও বিরক্ত হয়েছিল?

উত্তরঃ কাঙালীর কথায় মুখুয্যে মহাশয় বিস্মিত ও বিরক্ত হয়েছিল।

প্রশ্ন-৩৬। কাঙালীকে গলাধাক্কা দিয়েছিল কে?

উত্তরঃ কাঙালীকে গলাধাক্কা দিয়েছিল পাঁড়ে নামক জমিদারের এক কর্মচারী।

প্রশ্ন-৩৭। ‘সব ব্যাটারাই এখন বামুন কায়েত হতে চায়’—কথাটি কে বলেছিল?

উত্তরঃ মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের বড় ছেলে বলেছিল— ‘সব ব্যাটারাই এখন বামুন কায়েত হতে চায়’।

প্রশ্ন-৩৮। অভাগীকে নদীর চড়ায় মাটি দিতে বলেছিল কে?

উত্তরঃ অভাগীকে নদীর চড়ায় মাটি দিতে বলেছিল ভট্টাচার্য মহাশয়।

প্রশ্ন-৩৯। কে মুখুয্যে বাড়ির শ্রাদ্ধের আয়োজন তত্ত্বাবধান করেছিলেন?

উত্তরঃ বৃদ্ধ ঠাকুরদাস মুখুয্যে বাড়ির শ্রাদ্ধের আয়োজন তত্ত্বাবধান করেছিলেন।

প্রশ্ন-৪০। পাঁড়ে কার নাম?

উত্তরঃ জমিদারের পেয়াদার নাম পাঁড়ে।

প্রশ্ন-৪১। জমিদারের গোমস্তার নাম কী?

উত্তরঃ কাছারির গোমস্তার নাম অধর রায়।

প্রশ্ন-৪২। জমিদারের কাছারির কর্তা কে?

উত্তরঃ জমিদারের কাছারির কর্তা অধর রায়।

প্রশ্ন-৪৩। ‘যা যা, এখানে কিছু হবে না’ এ বাক্যে ঠাকুরদাস মুখোপাধ্যায়ের কোন মানসিকতা প্রকাশ পায়?

উত্তরঃ দাম্ভিকতা।

প্রশ্ন-৪৪। রসিক বেল গাছটি কী কাজে ব্যবহার করতে চেয়েছিল?

উত্তরঃ অভাগীর শবদাহ।

প্রশ্ন-৪৫। কোথায় গর্ত খুঁড়ে অভাগীকে শোয়ানো হলো?

উত্তরঃ নদীর চরে গর্ত খুঁড়ে অভাগীকে শোয়ানো হলো।

প্রশ্ন-৪৬। ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে অভাগীর মৃতদেহ কী করা হয়েছিল?

উত্তরঃ ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে অভাগীর মৃতদেহ নদীর চরে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে ফেলা হয়েছিল।

প্রশ্ন-৪৭। কোন নদীর তীরে শ্মশানঘাট অবস্থিত?

উত্তরঃ গরুড় নদীর তীরে শ্মশানঘাট অবস্থিত।

প্রশ্ন-৪৮। কাঙালীর হাতে খড়ের আটি জ্বেলে দিলো কে?

উত্তরঃ কাঙালীর হাতে খড়ের আটি জ্বেলে দিলো রাখালের মা।

প্রশ্ন-৪৯। ‘ক্রোড়’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘ক্রোড়’ শব্দের অর্থ কোল।

প্রশ্ন-৫০। ‘অন্তরীক্ষ’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘অন্তরীক্ষ’ শব্দের অর্থ আকাশ বা গগন।

প্রশ্ন-৫১। ‘ইন্দ্ৰজাল’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘ইন্দ্রজাল’ শব্দের অর্থ জাদুবিদ্যা।

প্রশ্ন-৫২। ‘রোমাঞ্চ’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘রোমাঞ্চ’ শব্দের অর্থ শিহরণ।

প্রশ্ন-৫৩। কাঙালী কোন শ্রেণির ছেলে?

উত্তরঃ গরিব-দুখী-নীচু শ্রেণির ছেলে কাঙালী।

প্রশ্ন-৫৪। ‘অভাগীর স্বর্গ’ নামক গল্পটি কোন গ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে?

উত্তরঃ ‘অভাগীর স্বর্গ’ নামক গল্পটি ‘শরৎ সাহিত্য সমগ্র’ গ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১। রসিক দুলে তার পায়ের ধুলা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলল কেন?

উত্তরঃ স্বামীর প্রতি অভাগীর শ্রদ্ধাপূর্ণ মনোভাব দেখে রসিক দুলে কেঁদে ফেলল।

রসিক দুলে অভাগীর স্বামী। কিন্তু স্ত্রীর প্রতি কোনো কর্তব্যই সে পালন করেনি। রসিক দুলে আর একটি বিয়ে করে অন্য এক গ্রামে অবস্থান করত। এদিকে অভাব-অনটনের মধ্যেই অভাগীর দিন কাটতে থাকে। অসুস্থ হয়ে পড়লে বিনা চিকিৎসায় অভাগী যখন মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়, তখন সে রসিক দুলের পায়ের ধুলা প্রত্যাশা করে। স্ত্রীর এই শ্রদ্ধাবোধ দেখে রসিক দুলে কেঁদে ফেলে।

প্রশ্ন-২. ঊর্ধ্বদৃষ্টে চাহিয়া কাঙালীর মায়ের চোখে অশ্রুর ধারা বহিতেছিল’ কেন?

উত্তরঃ ধর্মীয় অনুভূতির কারণে কাঙালীর মায়ের মনে হয় ঠাকুরদাস মুখুয্যের মৃত স্ত্রী রথে চড়ে স্বর্গে যাচ্ছে, এমন ভাবনায় কাঙালীর মায়ের চোখ পানি চলে আসে। সাতদিনের জ্বরে মুখুয্যের স্ত্রী মারা গেলেন। তার সৎকারের মহা আয়োজন হতে লাগল। পুষ্পে, পত্রে, গন্ধে, মাল্যে চারদিক মুখরিত হলো। মহাসমারোহে তাকে শ্মশান ঘাটে নিয়ে আসা হলো। কাঠের ভার, চন্দনের টুকরা, ঘৃত। মধু, ধূপ, ধুনা প্রভৃতি দিয়ে চিতায় মন্ত্রপূত অগ্নি সংযোজিত হলো। কাঙালীর মা দূরে থেকে এসব দৃশ্য দেখছিল। সদ্য-প্রজ্বলিত চিতার অজস্র ধুয়ার ভেতর রথে চড়ে বামুন মা স্বর্গে যাচ্ছে, কাঙালীর মায়ের কাছে এমন মনে হলো। তাই ঊর্ধ্বদৃষ্টে চেয়ে কাঙালীর মায়ের দুচোখে অশ্রুর ধারা বয়ে যাচ্ছিল।

প্রশ্ন-৩. অভাগী সন্তানের হাতে মুখাগ্নি চায় কেন?

উত্তরঃ মৃত্যুকালে সন্তানের হাতে মুখাগ্নি পাওয়া হিন্দুমতে সৌভাগ্যের বিষয়— এমন ধারণা থেকেই অভাগী সন্তানের হাতে মুখাগ্নি চায়। কাঙালীর অভাগী মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রীর মতো কেও একইরূপ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কামনা করে। মনে মনে সে মৃত্যুর পর কাঙালীর হাতের আগুন প্রার্থনা করে। তার বিশ্বাস, বাঙালীর হাতের আগুন পেলে সে স্বর্গবাসী হবে। এ কারণেই অভাগী সন্তানের হাতে মুখাগ্নি চায়।

প্রশ্ন-৪. ‘ইস ছেলের হাতের আগুন, রথকে যে আসতেই হবে — কেন?

উত্তরঃ ছেলের হাতের আগুন পেলে স্বর্গে যাবার রথ আসবেই এমন ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে কাঙালীর মা অভাগী মন্তব্যটি করেছিল। কাঙালীর মা অভাগী মনে করে, সে মারা গেলে যদি তার ছেলে মন্ত্রপূত আগুন দেয় তাহলে সেও স্বর্গে যাবে। আর তাহলে কেউ তাকে ছোট জাত বলে ঘৃণা করতে পারবে না। এমনকি দুঃখী বলে তাকে কেউ ঠেকিয়েও রাখতে পারবে না। এজন্য অভাগী প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছিলো।

প্রশ্ন-৫. ‘মড়া-পোড়ানো বলতে নেই, পাপ হয়।’- কেন?

উত্তরঃ প্রচলিত লোকবিশ্বাস থেকে মৃত ব্যক্তিকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য জাঁকজমকপূর্ণ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কথা সে তার পুত্র কাঙালিকে শোনাচ্ছিল। কাঙালি দেখল তার মায়ের শরীর গরম তাই সে জিজ্ঞেস অভাগী আলোচ্য উক্তিটি করে। অভাগী ঠাকুরদাস মুখুয্যের স্ত্রীর অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া স্বচক্ষে দেখেছিল। সেই করে এই শরীর নিয়ে সে কেন মড়া-পোড়া দেখেছে। তখন অভাগী সম্ভ্রমের সাথে কাঙালীকে বলে যে মরা-পোড়া বলতে নেই, পাপ হয়। এটি একটি প্রচলিত লোকবিশ্বাস যে, কেউ মারা গেলে বলতে হয় যে তিনি স্বর্গে গেছেন, এতে মৃতের প্রতি সম্মান দেখানো হয়।

প্রশ্ন-৬.‘তাই তাহাদের সমস্ত জীবনটা তাহাদের নিজের নামগুলোকেই যেন আমরণ ভ্যাঙচাইয়া চলিতে থাকে।’— কথাটি বুঝিয়ে লেখো।

উত্তরঃ প্রশ্নোত্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে অভাগী ও কাঙালির নামের সাথে।

তাদের ভাগ্য বিড়ম্বনার অদ্ভুত মিলের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। গরিব মানুষের নামকরণও যেন কষ্টের প্রলেপ দিয়ে মোড়ানো। অভাগী যখন জন্মগ্রহণ করে তার মা মারা যায়। ফলে বাবা রাগ করে তার নাম রাখে ‘অভাগী‘। এই নামটাই যেন তাকে আমরণ অভাগী করে রাখে। এমনকি মৃত্যুর সময়ও মিলে না পোড়ানোর মতো কাঠ। ফলে অভাগী তার নামের মতোই আজীবন ভাগ্যবস্থিত থেকে যায়। প্রশ্নোক্ত উক্তিটি দ্বারা এটাই বোঝানো হয়েছে।

প্রশ্ন-৭ জ্বরের ঘোরে কাঙালীর মা কাঙালীকে গল্পের ছলে কীসের গল্প বর্ণনা করেছিল?

উত্তরঃ জ্বরের ঘোরে কাঙালীর মা তার নিজের জীবনেরই গল্প রূপকথার আদলে ছেলের কাছে বলে গিয়েছে। জীবন সায়াহ্নে এসে অভাগী জ্বরের ঘোরে তার ছেলের কাছে রূপকথা বলতে শুরু করে। কাঙালীও তার মায়ের গল্প শুনে রোমাঞ্চিত হয় বার বার। কিন্তু এই রূপকথার আদলেই অভাগী বলে যায় এমন এক রূপকথা যা তার নিজের জীবনেরই প্রতিরূপ। যে গল্প তার অন্যের কাছে শেখা নয়, নিজের সৃষ্টি। জ্বরের ঘোরে মৃত্যুর আগে অভাগী তার নিজের জীবনের গল্পই বলে যায়।

প্রশ্ন-৮. কাঙালীর মা কেন কাঙালীকে ভাত রেঁধে খাওয়ার জন্য বলেছিল?

উত্তরঃ মৃত্যুর পূর্বে সাংসারিক কাজকর্মে ছেলে কতটা পারঙ্গম তা দেখতেই অভাগী তার ছেলেকে রেঁধে খাওয়ার নির্দেশ দেয়।

প্রত্যেক মা-ই চায় তার ছেলে স্বাবলম্বী হোক। কাঙালীর মা-ও তার ছেলের দক্ষতা দেখতে তাকে রেঁধে খাওয়ার জন্য বলে। কাঙালী অপটু হাতে রাঁধলেও তা স্বয়ংসম্পূর্ণতা পায়নি। তাই চোখের জল ফেলে দুঃখ প্রকাশ করে কাঙালীর মা কিভাবে রান্না করতে হয় তা শিখিয়ে দেয়।

প্রশ্ন-৯. ঈশ্বর নাপিতের মুখ গম্ভীর দেখে অভাগী কী বুঝতে পারল?

উত্তরঃ ঈশ্বর নাপিতের মুখ গম্ভীর দেখে অভাগী বুঝতে পারল, তার অন্তিম সময় এসে গিয়েছে।

অভাগীর অসুস্থতার সংবাদ গ্রামে প্রচারিত হলে ঈশ্বর নাপিত আসে তার নাড়ি পরীক্ষা করতে। গ্রামের মধ্যে সেই একমাত্র নাড়ি দেখতে জানতো। অভাগীর নাড়ি দেখে পরিস্থিতি বিবেচনায় সে মুখ গম্ভীর করে। ঈশ্বর নাপিতের মুখের এ গম্ভীর ভাব দেখে অভাগী বুঝতে পারে যে তার অন্তিম সময় এসে গেছে।

প্রশ্ন-১০. কাঙালীর ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে কাছারি বাড়ি যাওয়ার কারণ কী?

উত্তরঃ অত্যাচারের বিচার চাওয়া এবং গাছ কাটার অনুমতি পাওয়ার জন্য কাঙালী ঊর্ধ্বশ্বাসে জমিদারের কাছারি বাড়িতে যায়।

রসিক দুলে স্ত্রী অভাগীর সৎকারের জন্য নিজের বাড়ির বেলগাছ কাটতে যাওয়ায় জমিদারের দারোয়ান তাকে চড় মারে। কাঙালী ভেবেছিল, এ অন্যায়ের কথা যদি জমিদারের কানে পৌঁছানো যায়; তাহলে সুবিচার হবে এবং গাছ কাটার অনুমতি মিলবে। তাই কাঙালী ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে কাছারি বাড়িতে যায়।

প্রশ্ন-১১. রসিক দুলেকে জমিদারের দারোয়ানের চড় মারার কারণ কী?

উত্তরঃ নিজ আঙিনার বেলগাছ কাটতে যাওয়াই রসিক দুলেকে জমিদারের দারোয়ানের চড় মারার কারণ।

অভাগীর অন্তিম ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর তাকে যেন চিতায় পোড়ানো হয়। এ কারণে তার মৃত্যুর পর রসিক দুলে অভাগীর হাতে পোঁতা বেলগাছটা কাটতে যায়। জমিদারের অনুমতি ছাড়া কোনো গাছ কাটতে পারে না তারা। তাই জমিদারের বিনা অনুমতিতে গাছ কাটতে যাওয়ায় রসিক দুলেকে জমিদারের দারোয়ান চড় মারে।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর

১। ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে ঠাকুরদাস মুখুয্যের স্ত্রী কয়দিনের জ্বরে মারা গেলেন?

ক) চার    খ) পাঁচ

গ) ছয়    ঘ) সাত

উত্তরঃ ঘ) সাত

২। ঠাকুরদাস মুখোপাধ্যায়ের কতজন ছেলে-মেয়ে?

ক) তিন    খ) চার

গ) সাত    ঘ) আট

উত্তরঃ গ) সাত

৩। বৃদ্ধ মুখোপাধ্যায় কাদের সান্ত্বনা দিতে লাগলেন?

ক) ছেলে-মেয়েদের

খ) কন্যা ও বধূদের

গ) নাতি-নাতনিদের

ঘ) গ্রামবাসীদের

উত্তরঃ খ) কন্যা ও বধূদের

৪। ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে গ্রামের একান্তে কোন নদীর তীরে শ্মশান?

ক) কুমারখালী    খ) গঙ্গা

গ) গরুড়    ঘ) ময়ূরাক্ষী

উত্তরঃ গ) গরুড়

৫। কাঙালীর মা কোন জাতের মেয়ে?

ক) নাপিত    খ) বাগদি

গ) চণ্ডাল    ঘ) দুলে

উত্তরঃ ঘ) দুলে

৬। অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে সদ্য প্রজ্জ্বলিত চিতার অজস্র ধুঁয়া কোন রঙের ছায়া ফেলে ঘুরে ঘুরে আকাশে উঠছিল?

ক) নীল    খ) সাদা

গ) ধূসর    ঘ) কালো

উত্তরঃ ক) নীল

৭। কাঙালীর মায়ের অভাগী নামটি কে রেখেছিল?

ক) বাবা    খ) মা

গ) মুখুয্যের স্ত্রী    ঘ) বিন্দির পিসি

উত্তরঃ ক) বাবা

৮। কাঙালীর বয়স কত বছর?

ক) ১২ খ) ১৩   গ) ১৫  ঘ) ১৬

উত্তরঃ গ) ১৫

৯। কাকে বিশ্বাস করাই কাঙালীর অভ্যাস?

ক) মা    খ) বাবা    গ) বিন্দির মা    ঘ) খেলার সাথি

উত্তরঃ ক) মা

১০। কাঙালীর মা সকলের পাশাপাশি শবযাত্রায় যাওয়ার সাহস পেল না; কারণ সে—

ক) দরিদ্র    খ) ছোটজাত    গ) মুসলিম    ঘ) বৃদ্ধ

উত্তরঃ খ) ছোটজাত

১১। কাঙালীর মার দুচোখ জুড়িয়ে গেল যে কারণে—

ক) শবযাত্রা দেখে

খ) বামুন-মার সিঁথির সিঁদুর দেখে

গ) বামুন-মার রাঙা পা দেখে

ঘ) বামুন-মার চিতার ধোঁয়া দেখে

উত্তরঃ গ) বামুন-মার রাঙা পা দেখে

১২। কাঙালীর মা বামুন-মাকে ‘ভাগ্যিমানী’ বলার কারণ—

ক) স্বামীহস্তের মন্ত্রপুত অগ্নিপ্রাপ্তি

খ) পুত্রহস্তের মন্ত্রপুত অগ্নিপ্রাপ্তি

গ) স্বামীহস্তের মন্ত্রপুর সিঁদুরপ্রাপ্তি

ঘ) পুত্র ও কন্যাহস্তের মন্ত্রপুত অগ্নিপ্রাপ্তি

উত্তরঃ খ) পুত্রহস্তের মন্ত্রপুত অগ্নিপ্রাপ্তি

১৩। কাঙালীর মার দুই চোখে অশ্রু ধারা বইছিল কেন?

ক) বামুন-মার সৌভাগ্য দেখে

খ) বামুন-মার পুত্রভাগ্য দেখে

গ) বামুন-মার স্বামীভাগ্য দেখে

ঘ) বামুন-মার সুখের সংসার দেখে

উত্তরঃ ক) বামুন-মার সৌভাগ্য দেখে

১৪। ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে শ্মশান ঘাটে কাঙালীর মা চমকে উঠল যে কারণে—

ক) বামুন-মার রাঙা পা দেখে

খ) স্বামীকে দেখে

গ) কাঙালীর ডাক শুনে

ঘ) বামুন-মার সুখের সংসার দেখে

উত্তরঃ গ) কাঙালীর ডাক শুনে

১৫। ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে কাঙালীর মা মনে মনে লজ্জা পেল যে কারণে—

ক) পরের জন্য অশ্রুপাত করা

খ) ছোটজাতের মেয়ে বলে

গ) গরিবের মেয়ে বলে

ঘ) ছেলের শুষ্ক মুখ দেখে

উত্তরঃ ক) পরের জন্য অশ্রুপাত করা

উত্তর সমুহ:-১. ঘ; ২. গ; ৩. খ; ৪. গ; ৫. ঘ; ৬. ক; ৭. ক; ৮. গ; ৯. ক; ১০. খ; ১১. গ; ১২. খ; ১৩. ক; ১৪. গ; ১৫. ক;।

 

শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “অভাগীর স্বর্গ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।

Similar Posts