Category: ভূগোল

শিলা কি, কাকে বলে, শিলার প্রকারভেদ, বৈশিষ্ট্য এবং উপাদান

শিলা কি শিলা বলতে এক বা একাধিক খনিজের সংমিশ্রণকে বুঝায়। এর ধর্ম, বর্ণ ও গঠনের ওপর নির্ভর করে পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের মৃত্তিকা পরিলক্ষিত হয়। ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রকার শিলা দেখা যায়। গঠন ও উৎপত্তি অনুসারে শিলা তিন ধরনের হয়ে থাকে অর্থাৎ আগ্নেয়, পাললিক ও রূপান্তরিত। এগুলো ভূপৃষ্ঠের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শিলা ভূপৃষ্ঠ বিভিন্ন পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। এখানে কোথাও আছে নরম কদম, কোথাও আছে শক্ত পাথর আবার কোথাও রয়েছে বালুকণাময় মরুভূমি। নানা স্থানে এসব পদার্থের সাথে আবার প্রাণী ও উদ্ভিদের মৃতদেহও মিশে রয়েছে। এসব ধর্ম ও বর্ণের বিভিন্ন পদার্থের সংমিশ্রণে ভূপৃষ্ঠ গঠিত হয়েছে, তাদের সাধারণ নাম শিলা। শিলা মূলত পাথর, কাদা, নুড়ি, বালি প্রভৃতি খনিজের সংমিশ্রণ। প্রাকৃতিক উপায়ে দুই বা ততোধিক খনিজ সংমিশ্রিত হয়ে যে পদার্থের সৃষ্টি হয় তাকে শিলা বলে। শিলা বলতে কেবলমাত্র কঠিন পদার্থকেই বুঝানো হয় না; বরং ব্যাপক অর্থে ধূলিকণা হতে আরম্ভ করে নরম কাদা, নুড়ি, কাঁকর, বালি, কঠিন পাথর প্রভৃতি সবই শিলার অন্তর্ভুক্ত। শিলা কাকে বলে অধ্যাপক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের মতে, “বিভিন্ন প্রকার খনিজ প্রাকৃতিক উপায়ে সংমিশ্রিত হয়ে যে পদার্থের সৃষ্টি হয়, তাকে শিলা বলে।“ প্রখ্যাত ভূগোলবিদ Sabinda Sing এর মতে, “The solid materil of the earth crust and earth interior is called rocks.” অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরীর মতে, “বিভিন্ন প্রকার খনিজ প্রাকৃতিক উপায়ে একত্রিত হয়ে যে পদার্থ গঠন করে তাকে শিলা বলে।“ শিলার প্রকারভেদ গঠন ও উৎপত্তি অনুসারে শিলাকে প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত করা যায়। এই তিন ধরনের শিলায় আবার কতিপয় ভিন্ন ভিন্ন ধরনের শিলা বিদ্যমান থাকে। ক. আগ্নেয় শিলা কতিপয় আগ্নেয় শিলার নাম নিম্নে দেওয়া হলো : ১. পেগমাটাইট, ২. ডোলোরাইট, ৩. রায়ে লাইট, ৪ ওবসিডিয়ান ৫. গ্রাব্রো, ৬. এন্ডেসাইট ৭. ডায়োরাইট, ৮. সায়েনাইট, ৯. গ্রানাইট ও ১০, ব্যাসল্ট খ. পাললিক শিলা নিম্নে কতিপয় পাললিক শিলার নাম দেওয়া হলো : ১. কয়লা, ২. কদম, ৩. জিপসাম, ৪. ডলোমাইট, ৫. লোয়েস, ৬. কংগ্লোমারেট, ৭. শেল, ৮. খড়িমাটি, ৯. চুনাপাথর ও ১০.বেলেপাথর গ. রূপান্তরিত শিলা নিম্নে কতিপয় রূপান্তরিত শিলার নাম দেওয়া হলো : ১. এম্ফিবোলাইট, ২. ল্যাটেরাইট, ৩. সিস্ট, ৪. ফাইলাইট, ৫. নীস, ৬. কোয়ার্টজাইট, ৭. স্লেট ও ৮. মার্বেল শিলার বৈশিষ্ট্য সামগ্রিকভাবে শিলার কিছু বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে। শিলার বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো। ১. কেলাসন : কেলাসন শিলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা কেলাসিত কিন্তু পাললিক শিলা কেলাসিত নয়। ২. জীবাশ্মের উপস্থিতি : রূপান্তরিত ও আগ্নেয় শিলা জীবাশ্মবিহীন। শুধুমাত্র পাললিক শিলা স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে গঠিত বলে জীবাশ্মবিশিষ্ট। ৩. কাঠিন্যতা : কাঠিন্যতা শিলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা অত্যন্ত মজবুত ও শক্ত।  কিন্তু সে তুলনায় পাললিক শিলা অত্যন্ত কোমল ও হালকা। ৪. বিক্রিয়া : কোনো শিলাই রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। ৫. ক্ষয়কার্যতা : আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। কিন্তু পাললিক শিলা অতি দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। শিলা গঠনকারী কতিপয় খনিজ পদার্থ পৃথিবীতে অগণিত খনিজ রয়েছে। রাসায়নিক সংযুক্ত ও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে খনিজসমূহ বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। আর এসব খনিজ দ্বারাই শিলা গঠিত হয়। নিম্নে শিলা গঠনকারী কতিপয় খনিজের বিবরণ দেওয়া হলো। ১. কোয়ার্টজ কোয়ার্টজ সিলিকন ও অক্সিজেনের সংমিশ্রণে গঠিত একটি খনিজ। এটি দেখতে ফিটকিরির মতো। অর্থাৎ, সাদা বর্ণহীন। শিলায় অবস্থিত বালুকণার মধ্যে এর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। শেল, বেলেপাথর ও গ্রানাইটে কোয়ার্টজ থাকে। এর কাঠিন্য ৭ এবং আপেক্ষিক গুরুত্ব ২.৬৫। অনেক সময় অন্যান্য খনিজের মিশ্রণে কোয়ার্টজ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন: গোলাপী ধূসর, ধোঁয়াটে, জেসপার, এগেট কোয়ার্টজ প্রভৃতি। ব্যবহার : পার্সেলিন, রং, সাবান, কাচ, সিমেন্ট প্রভৃতি প্রস্তুত করতে কোয়ার্টজ ব্যবহৃত হয়। ২. অভ্র ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম ও লৌহ যোগে গঠিত খনিজ হলো অভ্র। গঠিত বর্ণের ওপর ভিত্তি করে অভ্র দুই ভাগে বিভক্ত। যথা : ক. মাস্কোভাইট ও খ. বায়োটাইট।         ক. মাস্কোভাইট : মাস্কোভাইট পটাসিয়াম ও অ্যালুমিনিয়ামের সমন্বয়ে গঠিত। একে শ্বেত অভ্রও বলা হয়। মাস্কোভাইট পাতলা অবস্থায় স্বচ্ছ ও উজ্জ্বল দেখায়। এর কাঠিন্য ৬ থেকে ২.৫ এবং আপেক্ষিক গুরুত্ব ২.৭৬ হতে ৩।    […]

ভূত্বক কী, কাকে বলে এবং ভূত্বকের গঠন ও উপাদানের বিবরণ

ভূত্বক কী বায়ুমণ্ডলের অভ্যন্তরীণ উত্তপ্ত তরল পদার্থ শীতল হয়ে দুধের সরের মতো এক ধরনের আবরণ সৃষ্টি করে। অভ্যন্তরীণ তাপ ও ক্রমাগত সংকোচনের প্রভাবে পাতলা আবরণটির উপরিভাগ কুঁকড়ে উঁচুনিচু হয়ে কার্বন ভূমিরূপ সৃষ্টি করে। ইহা ভূত্বক নামে পরিচিত। ভূত্বক হলো পৃথিবীর সমগ্র প্রাণিজগতের আবাসস্থল। এখানে সভ্যতার যাবতীয় বস্তু প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যার কারণে ভূত্বক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এ ভূত্বকের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। […]

প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের প্রয়োজনীয়তা

প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের প্রয়োজনীয়তা সংক্ষেপে আলোচনা কর ভূগোল একটি গতিশীল বিজ্ঞান। অতি প্রাচীনকাল হতে মানুষ ভূগোল সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও পর্যালোচনার মাধ্যমে সম্যক জ্ঞান লাভ করে আসছে। পার্থিব পরিবেশ তথা পৃথিবীর বর্ণনা ভূগোল শাস্ত্রে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। ফলে এর ক্ষেত্র ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভূগোলের অনেক শাখার মধ্যে প্রাকৃতিক ভূগোল অন্যতম। প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের প্রয়োজনীয়তা নিম্নে প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের প্রয়োজনীয়তা সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো। […]

প্রাকৃতিক ভূগোল কি, কাকে বলে এবং এর বিষয়বস্তু

প্রাকৃতিক ভূগোল কি বা কাকে বলে প্রাকৃতিক ভূগোল বা Physical Geography কথাটির অর্থ হচ্ছে ‘Physical basic of Geography’ অর্থাৎ ভূগোলের বুনিয়াদ বা প্রধান উপাদান; যা প্রকৃতি বা প্রাকৃতিক ভূগোল ভূগোলের একটি প্রধান শাখা। প্রাকৃতিক ভূগোলকে বাদ দিয়ে ভূগোলকে কল্পনাই করা যায় না। পরিবেশের সেসব বিষয় নিয়ে প্রাকৃতিক ভূগোল প্রাকৃতিক আলোচনা করে; যা জীবজগতের সমস্ত প্রাণীর জীবনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। প্রাণীজগত ও […]

পানি চক্র কী, কাকে বলে এবং পানি চক্র কীভাবে সংঘটিত হয়

পানি চক্র কী পানির বিভিন্ন উৎপত্তিস্থল থেকে পানি নানাভাবে রূপান্তরিত হয়ে আবার মূল উৎসে ফিরে এলে তাকে পানি চক্র বলে। পৃথিবীর যাবতীয় পানি অর্থাৎ সমুদ্র, বায়ুমণ্ডল ও ভূপৃষ্ঠের পানি সর্বদা একটি পরস্পর সম্পর্কিত জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার ভৌত ও ভৌগোলিক অবস্থানের পরিবর্তন ঘটিয়ে থাকে। পানি চক্র কাকে বলে পৃথিবী পৃষ্ঠ প্রধানত পানির সমন্বয়ে গঠিত। যার অংশ পানি দ্বারা […]

বাস্তুতন্ত্র কাকে বলে | বাস্তুতন্ত্র কি | বাস্তুতন্ত্রের মূলনীতি

বাস্তুতন্ত্র কাকে বলে ইংরেজি Ecosystem শব্দের বাংলা রূপ হলো বাস্তুতন্ত্র। ১৯৩৫ সালে Ecosystem শব্দটি A. B. Tansely নামক একজন ব্রিটিশ পরিবেশবিজ্ঞানী সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন। মানবজীবনের নানান প্রকৃতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাস্তব্যবিদ্যার সাথে সম্পর্কযুক্ত। কেননা বাস্তুগত উপাদানগুলোর সমন্বয়ে পরিবেশ গঠিত হয়। যেকোনো বাহ্যিক শক্তি, অবস্থা যা জীবের জীবনযাত্রাকে কোনো না কোনো মাধ্যমে প্রভাবিত করে তাই ঐ জীব পরিবেশের উপাদান বা […]

মৃত্তিকা বা মাটি কী এবং মৃত্তিকার প্রকারভেদ

মৃত্তিকা বা মাটি কী পৃথিবীর জীবজগৎ তথা উদ্ভিদ এ প্রাণীকূলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান মৃত্তিকা। মানুষ তার প্রয়োজনীয় সবকিছুই মৃত্রিকা (মাটি) থেকে লাভ করে থাকে। এর গুণাগুণের ওপর একটি দেশের কৃষিকার্যের উন্নতি নির্ভরশীল। মৃত্তিকা বা মাটি হলো মানুষের একটি মৌলিক সম্পদ। এর উৎপত্তি প্রধানত আদি শিলা হতে এবং এতে উদ্ভিদ জন্মগ্রহণ করতে সক্ষম। মৃত্তিকা পৃথিবীর উপরিভাগে এক পরিবর্তনশীল […]

পানি দূষণ কী | পানি দূষণের কারণ, ফলাফল ও নিয়ন্ত্রণে উপায়সমূহ

পানি দূষণ কী পানি একটি অমূল্য সম্পদ জীবজগতের প্রাণরক্ষাকারী উপাদান হিসেবে বিবেচিত। সাগর, নদীনালা, হ্রদ ইত্যাদির অন্যতম উৎস পানি। বর্তমানে প্রতিনিয়ত মানুষ এ পানিকে দূষিত করছে। পানি দূষণ হলো পানির উপাদানগত পরিবর্তন সাধন। পানির সদ্ব্যব্যবহার সংরক্ষণ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ অতীব জরুরি। কেননা ভূপৃষ্ঠের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে পানির গুরুত্ব অনেক। পানি দূষণ কাকে বলে যে কোনো কারণে পানির […]

ভূগোলের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর

মানুষের আবাসভূমি হিসেবে পৃথিবীর বর্ণনাই হচ্ছে ভূগোল। ভূগোল এ পৃথিবী সম্পর্কে ধারণা দেয়। প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে মানুষ এ পৃথিবীতে বাঁচতে পারে না। ভূতত্ত্ববিদ্যার বিভিন্ন শাখার মধ্যে এ ভূগোলই ‘দৃশ্যমান’ এবং এর গুরুত্ব অত্যধিক। এটি পরিবেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গড়ে ওঠেছে। তাই ভূগোলের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক অনবদ্য। ভূগোলের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক গতিশীল বিজ্ঞান হিসেবে বিশ্বে প্রতিনিয়ত যা ঘটছে তার সাথে ভূগোলের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কেননা ভূগোল পৃথিবী ও তার পৃষ্ঠদেশ সম্পর্কে ধারণা দেয়। আর পরিবেশের কোনো স্থানের যাবতীয় পরিস্থিতি, সমষ্টির রূপ, মানবসমাজ ও মানবগোষ্ঠী সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনার স্বার্থে পরিবেশ সম্পর্কিত ধারণা রাখা অত্যন্ত জরুরি। ভূগোল পৃথিবী ও পৃথিবী পৃষ্ঠের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উপাদান নিয়ে আলোচনা করে। আর এসব উপাদান দ্বারাই পরিবেশ গঠিত। তাছাড়া মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। তাই ভূগোল ও পরিবেশের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। নিম্নে ভূগোলের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করা হলো। ১. ভূতত্ত্ব বিদ্যা ভূপৃষ্ঠ বাহ্যিক ও অদৃশ্যমান যাবতীয় জৈব ও অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। আর পরিবেশগত অজৈব দৃশ্যমান পদার্থের মধ্যে পানি, শিলা, মৃত্তিকা প্রভৃতি ভূমিরূপের গঠন অন্যতম। এসব বিষয়ের ওপর আলোচনা ভূগোলের অন্যতম ক্ষেত্র বা পরিধি। ২. জীববিদ্যা উদ্ভিদ ও প্রাণীর বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করে জীববিদ্যা। এ উদ্ভিদ ও প্রাণী পৃথিবীর পার্থিব পরিবেশেই বাস করে। উদ্ভিদবিদ্যা বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ, জলবায়ুভেদে এদের বণ্টন, তারতম্য এবং এদের অবস্থান, কার্যকলাপ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। ভূগোল যেহেতু পৃথিবী ও তার পার্থিব পরিবেশ নিয়ে আলোচনা করে, সেহেতু উদ্ভিদের এসব বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করাও এর অন্তর্ভুক্ত। আবার প্রাণিবিদ্যা বিভিন্ন প্রকার প্রাণি ও তাদের অবস্থান, কার্যকলাপ, বিচরণ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। বিভিন্ন প্রকার ভূপ্রকৃতি এবং আবহাওয়া ও জলবায়ুতে প্রাণীদের বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। ৩. পদার্থবিদ্যা ভূগোলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পদার্থবিদ্যা। কেননা এ বিদ্যা কাজ, শক্তি, পানি, বিদ্যুৎ, আলো ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। এগুলোর মধ্য আলো পদার্থবিদ্যার অন্যতম আলোচ্য বিষয়। আর এ আলো হচ্ছে পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আলো না থাকলে এ পৃথিবীর রূপ পরিপূর্ণ হতো না। যার ফলে পৃথিবীর পরিবেশ সৃষ্টি হতো না। যেমন, সবুজ উদ্ভিদ আলোর উপস্থিতিতেই খাদ্য উৎপাদন করে। আর এ উদ্ভিদ পরিবেশেরই জীবন। কাজেই আলোর বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আলোচিত হয় পদার্থবিদ্যায়। আর পৃথিবীতে বাসযোগ্য উপাদান হিসেবে সবকিছুর বর্ণনাই হচ্ছে ভূগোল । তাই বলা যায় পরিবেশ ও ভূগোলের মাঝে সম্পর্ক রয়েছে। ৪. জ্যোতির্বিদ্যা ভূগোলের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ জ্যোতির্বিদ্যা। এটি সৌরজগৎ ও তার গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র, নীহারিকা, ধূমকেতু, ঋতু পরিবর্তন, দিবারাত্রির হ্রাসবৃদ্ধি প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা করে। বিভিন্ন গ্রহের তথ্য নিয়ে জ্যোতির্বিদ্যার অন্তর্ভুক্ত অংশ ভূগোলেও আলোচিত হয়। পৃথিবী একটি গ্রহ, যা জ্যোতির্বিদ্যার প্রধান আলোচ্য বিষয়। জ্যোতির্বিদ্যার এসব বিষয় পরিবেশকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে। আর এ কারণেই বলা যায় ভূগোল ও পরিবেশের সম্পর্ক গভীর।

পরিবেশ কী | পরিবেশ কাকে বলে

পরিবেশ কী পরিবেশ মানুষের জীবনকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। আর এ পরিবেশ কোনো স্থানের অবস্থা বা পরিস্থিতির সমষ্টির রূপ। মানব সমাজ ও সমাজবদ্ধ মানবগোষ্ঠী সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ আলোচনার স্বার্থে পরিবেশ সম্পর্কিত জ্ঞানার্জন অত্যন্ত জরুরি। পরিবেশ কোনো স্থানের সার্বিক অবস্থা বা পরিস্থিতির সমষ্টিগত রূপ। পরিবেশের তারতম্যের জন্য পৃথিবীতে বসবাসরত যেকোনো অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান বিভিন্ন হয়। আর যেসব অবস্থাসমূহ এবং বস্তুসমূহ জীবকে প্রভাবিত করে তাই পরিবেশ। একটি অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ওপরও পরিবেশ যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। পরিবেশ কাকে বলে সাধারণভাবে বলা যায় আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তার সমন্বিত রূপ হচ্ছে পরিবেশ। পরিবেশ আমাদের চতুষ্পার্শ্বস্থ অবস্থা অর্থাৎ যে পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে মানুষ তার জীবনযাত্রা নির্বাহ করে, তাকে পরিবেশ বলে। পরিবেশের বিভিন্ন সংজ্ঞা অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর মতে, “যে সমগ্র অবস্থা, শক্তি ও বস্তুসমূহ জীবনকে পরিবর্তিত অথবা প্রভাবিত করে তাকে পরিবেশ (Environment) বলে।” অধ্যাপক ম্যাকাইভার ও পেজ (Prof. MacIver and Page) এর মতে, […]

Back To Top