রোজার ফজিলত ও গুরুত্ব কোরআন ও হাদিসের আলোকে

আমরা সকলেই জানি ইসলামের পাঁচটি মৌলিক স্তম্ভ রয়েছে।  আর এই স্তম্ভ গুলোর মধ্যে রমজান মাসের রোজা অন্যতম ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  আল কুরআনের আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দ্বিতীয় হিজরীতে তার বান্দাদের ওপর রোজা ফরজ করেছেন। তাই আমাদের সকলের উচিত রোজার ফজিলত গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানা এবং সতর্ক হওয়া।  তাই আমাদের আজকের আর্টিকেলের বিষয়টি হলো রোজার ফজিলত…

সাওম এর শাব্দিক ও পারিভাষিক পরিচয়

সাওম এর আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থ কী? সাওমের ধর্মীয় ও সামাজিক গুরত্ব আলোচনা সাওম এর আভিধানিক অর্থ ‘সিয়ামুন’ শব্দটি ‘সাওমুন’-এর বহুবচন। এটি একটি আরবি শব্দ এবং ইসলামের ধর্মীয় পরিভাষাগুলোর অন্যতম। যার আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা। সাওম এর পারিভাষিক অর্থ আর পারিভাষিক অর্থে সাওম বা সিয়াম বলতে কোনো মুমিন ব্যক্তি মহান আল্লাহর নির্দেশ পালনের নিয়তে তাঁরই নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে সুবহে সাদিক উদিত হওয়ার পূর্ব থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য-পানীয় ও যৌনতা থেকে বিরত থাকাকে বোঝায়। সাওমকে আমরা বাংলা ভাষাভাষী মানুষ রোজা বলে জানি।রমজান বা রমাদানের ফরজ হওয়া সম্পর্কে মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কালামে সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন: হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো। ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে সালাতের গুরুত্ব হাদিসের ভাষায়, ‘রমজান মাসে বেহেশতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। অপরদিকে দোজখের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়’ (বুখারি ও মুসলিম)।  রোজা মুসলিম সমাজের ঐতিহ্য-সমৃদ্ধির স্মারক। রোজার মাসেই বিশ্ববাসীর জন্য…

রোজা সম্পর্কে হাদিস

রোজার ফজিলত সম্পর্কে ৮ হাদিস হিজরি সনের সেরা মাস রমজান। এ মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত রোজা। রোজা আল্লাহর অত্যন্ত প্রিয় ইবাদত। এর প্রতিদান তিনি নিজ হাতেই দেবেন। রোজার ফজিলত-মর্যাদা সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এখানে এ সম্পর্কিত ৮টি হাদিস তুলে ধরা হলো— ১। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হাদিসে কুদসিতে রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, আল্লাহ…

কুরআন মজীদ ও সহীহ হাদীসের আলোকে রোযার গুরুত্ব ও ফযীলত

রমযনের রোযা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। ঈমান, নামায ও যাকাতের পরই রোযার স্থান। রোযার আরবি শব্দ সওম, যার আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা। পরিভাষায় সওম বলা হয়-প্রত্যেক সজ্ঞান, বালেগ মুসলমান নর-নারীর সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযার নিয়তে পানাহার, স্ত্রী সহবাস ও রোযাভঙ্গকারী সকল কাজ থেকে বিরত থাকা। সুতরাং রমযান মাসের চাঁদ উদিত হলেই প্রত্যেক সুস্থ, মুকীম প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এবং হায়েয-নেফাসমুক্ত প্রাপ্তবয়স্কা নারীর উপর পূর্ণ রমযান রোযা রাখা ফরয। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন- يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ (তরজমা) হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার।-সূরা বাকারা (২) : ১৮৩ অন্য আয়াতে ইরশাদ করেছেন- فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ (তরজমা) সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ মাস পাবে, সে যেন অবশ্যই রোযা রাখে।- সূরা বাকারা (২) : ১৮৫ হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- إذا رأيتم الهلال فصوموا وإذا رأيتموه فافطروا، فإن غم عليكم فصوموا ثلاثين، وفي رواية : صوموا لرؤيته وأفطروا لرويته، فإن عم عليكم فاكملوا العدد. যখন তোমরা (রমযানের) চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোযা রাখবে আর যখন (শাওয়ালের) চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোযা বন্ধ করবে। আকাশ যদি মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে ত্রিশ দিন রোযা রাখবে।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৯০৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১০৮০ (১৭-১৮) উল্লেখিত আয়াত ও হাদীস এবং এ বিষয়ক অন্যান্য দলীলের আলোকে প্রমাণিত যে, রমযান মাসের রোযা রাখা ফরয, ইসলামের আবশ্যক বিধানরূপে রোযা পালন করা ও বিশ্বাস করাও ফরয। তাছাড়া কোনো শরয়ী ওযর ছাড়া কোন মুসলমান যদি রমযান মাসের একটি রোযাও ইচ্ছাকৃতভাবে পরিত্যাগ করে তাহলে সে বড় পাপী ও জঘন্য অপরাধীরূপে গণ্য হবে। দ্বীনের মৌলিক বিধান লঙ্ঘনকারী ও ঈমান-ইসলামের ভিত্তি বিনষ্টকারী হিসেবে পরিগণিত হবে। হাদীস শরীফে ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা ত্যাগকারী ও ভঙ্গকারীর জন্য কঠিন শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে। হযরত আবু উমামা রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,…

সাওম এর গুরুত্ব

প্রশ্নঃ সাওমের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা কর। সাওমে বিসালের ব্যাপারে যা জান লিখ।মুসাফিরের রোযার ব্যাপারে যা জান লিখ। রোযা রাখার ব্যাপারে চাঁদ দেখার ব্যাপারে ইসলামী মনোভাব ব্যক্ত কর। ভূমিকা আল্লাহ সুবাহানাওতায়ালা বলেন, “তোমাদের উপর সাওম ফরয করা হল যেমন ফরয করা হয়েছিল পূর্ববর্তী উম্মাতগণের উপর যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।”      [বাকারাঃ১৮৩]   সাওম একটি তাৎপর্যমণ্ডিত ইবাদত।এর…

রোজার উপকারিতা

রোজার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টি, পরহেজগারি (খোদাভীতি) ও নৈকট্যলাভ করতে সক্ষম হয়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে ইমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকের ওপর; যেন তোমরা পরহেজগারি অর্জন করতে পার।’ সুরা বাকারা : ১৮৩ রোজার উপকার সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা, রোজা রেখে সারা দিন উপবাস থাকলে…

রোজার শারীরিক ও মানসিক উপকারিতা

রোজা ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। প্রতিবছর রমজানে প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান মহান সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ লাভের জন্য ধর্মীয় ইবাদত রোজা পালন করে থাকেন। রোজা শুধু ধর্মীয় বিধিবিধানের অংশ নয়; বরং এটি বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যনীতিরও একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে। এর রয়েছে শারীরিক ও মানসিক উপকারিতাও। প্রথমেই আসি রোজার শারীরিক উপকারিতার কথায়। রোজা থাকলে দিনের বেশিরভাগ সময় না খেয়ে থাকতে…

রোজা কী? রোজার শর্ত, প্রকারভেদ, রোজা ভঙ্গের কারণ ও করণীয়, বিধিনিষেধ, উদ্দেশ্য ও উপকারিতা

‘রোজা’ একটি ফারসি শব্দ যার আরবি প্রতিশব্দ হলো ‘সাউম’ বা ‘সাওম’, এর অর্থ হলো সংযম। রোজা পালন বা সিয়াম হলো ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল ভিত্তির একটি। সুবহে সাদিক বা ভোরের সূক্ষ আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,পাপাচার, কামাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম রোজা। রোজা প্রসঙ্গে বিস্তারিত এখানে…

রোজার গুরুত্ব

❑ মহান আল্লাহ তাআলার বাণী- “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের মত তোমাদের উপরও রোযা ফরজ করা হয়েছে, যাতে তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হতে পার।” (সুরা বাকারা-১৮৩ ❑ রাসুল (সাঃ) বলেছেন,যে ব্যাক্তি রমজান মাস পেল অথচ নিজের গোনাহ মাফ করাতে পারলো না, সেই ব্যাক্তি ধ্বংস হোক। ❑ রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বলেনঃ বিনা ওযরে রামাযানের সিয়াম ত্যাগকারী কাফির। [আবূ ইয়ালা,…

রোজা সম্পর্কে কুরআনের আয়াত

মাহে রমজান ও রোজা বিষয়ক কুরআনের আয়াত সমূহ  হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য রােযা ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তােমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। আশা করা যায় তােমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুণ ও বৈশিষ্ট্য জাগ্রত হবে। (২ সূরা বাকারা : ১৮৩)   তোমাদের জন্য রােযা ফরয করা হয়েছে। রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে আল কুরআন নাযিল করা হয়েছে,…