ভূ-পৃষ্ঠের উপর অবস্থিত ভূমিরূপগুলিকে উচ্চতার তারতম্য অনুসারে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয় – পর্বত, মালভূমি ও সমভূমি। এছাড়া মালভূমির থেকে সামান্য উঁচু কিন্তু পর্বতের থেকে কম উচ্চতাবিশিষ্ট এক বিশেষ ধরনের ভূমিরূপ দেখা যায়, যা পাহাড় নামে পরিচিত। পাহাড় ও পর্বতের মধ্যে যে সব পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
পাহাড় ও পর্বতের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল–
১) সংজ্ঞা
- পারিপার্শ্বিক ভূপৃষ্ঠ থেকে সামান্য উচ্চতা বিশিষ্ট ও অল্প দূর বিস্তৃত শিলাস্তুপকে পাহাড় বলে।
- সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে অধিক উচ্চতা বিশিষ্ট ও একটানা বহুদূর বিস্তৃত শিলাময় ভূমিরূপকে পর্বত বলে।
২) উদাহরণ
- পাহাড়ের উদাহরণ হল – পরেশনাথ পাহাড়, রাজমহল পাহাড়, অজন্তা পাহাড় প্রভৃতি।
- পর্বতের উদাহরণ হল – মাউন্ট এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা প্রভৃতি।
৩) উচ্চতা
- 300 মিটারের অধিক কিন্তু 1000 মিটারের কম উচ্চতা বিশিষ্ট ভূমিরূপ গুলোকে পাহাড় হিসাবে গণ্য করা হয়।
- সাধারণত 1000 মিটারের অধিক উচ্চতা বিশিষ্ট ভূমিরূপগুলিকে পর্বত বলে।
৪) শীর্ষদেশ
- পাহাড় শীর্ষদেশগুলি ছোটো এবং মূলত সামান্য গোলাকৃতি হয়ে থাকে।
- পর্বতের শীর্ষদেশ খুব তীক্ষ্ম ও উঁচু হয়।
৫) ঢাল
- পাহাড়ের ঢাল বেশি খাড়া হয় না।
- পর্বতগুলি খাড়া ঢাল বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
৬) বরফের অবস্থান
- উচ্চতা কম হওয়ায় পাহাড়ে বরফের উপস্থিতি দেখা যায় না।
- উচ্চতা খুব বেশি হওয়ায় পর্বতের উপরিভাগ অনেক সময় বরফ দ্বারা আবৃত থাকে।
৭) বস্তুতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য
- পাহাড়ের সর্বত্র প্রায় একই রকম উদ্ভিদ প্রাণীর উপস্থিতি দেখা যায়।
- ভূ-সমতল থেকে পর্বত অনেক উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় পর্বতের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর উপস্থিতি দেখা যায়।