প্রতিধ্বনি (Echo) কাকে বলে? প্রতিধ্বনি সৃষ্টির শর্তসমূহ কি কি? প্রতিধ্বনির ব্যবহার।

প্রতিধ্বনি কি বা কাকে বলে? (What is an Echo in Bengali/Bangla?)
কোন শব্দ উৎস থেকে শব্দ করা হলে তা কোন কঠিন তলে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে আবার যদি শব্দের উৎসের নিকট ফিরে আসে, তখন সেই শব্দের পুনরাবৃত্তি শোনা যায়। শব্দের এই পুনরাবৃত্তিকেই শব্দের প্রতিধ্বনি বলে।

প্রতিধ্বনি কীভাবে সৃষ্টি হয়?
আমরা জানি, কোনো উৎস থেকে সৃষ্ট শব্দ যদি দূরবর্তী কোনো মাধ্যমে বাধা পেয়ে উৎসের কাছে ফিরে আসে তখন মূল ধ্বনির যে পুনরাবৃত্তি হয় তাকে শব্দের প্রতিধ্বনি বলে। তবে শব্দ কোনো মাধ্যমে বাধা পেয়ে ফিরে এলেই প্রতিধ্বনি শোনা যাবে এমন নয়। প্রতিধ্বনি শুনতে হলে শ্রোতা এবং প্রতিফলকের মধ্যে একটা ন্যূনতম দূরত্ব বজায় থাকতে হবে। আবার শব্দ শোনার পর প্রায় ০.১ সেকেন্ড সময় পর্যন্ত ঐ শব্দের রেশ মস্তিষ্কে থেকে যায়। কাজেই প্রতিধ্বনি শোনার জন্য মূলধ্বনি ও প্রতিধ্বনি শোনার মধ্যবর্তী সময়ের পার্থক্য ০.১ সেকেন্ড হওয়া প্রয়োজন।

প্রতিধ্বনি সৃষ্টির শর্তসমূহ কি কি?

প্রতিধ্বনি সৃষ্টির শর্তসমূহ নিচে দেওয়া হলো :
১. উৎস এবং প্রতিফলকের মধ্যবর্তী দূরত্ব 0°C তাপমাত্রায় কমপক্ষে 16.6 m হতে হবে।
২. মূল শব্দ এবং প্রতিধ্বনির মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান 0.1s হতে হবে।
৩. একটি ভালো প্রতিফলক মাধ্যম থাকতে হবে।

প্রতিধ্বনির ব্যবহার

প্রতিধ্বনির ব্যবহার তুলে ধরা হলো–
১. হিমশৈল জাহাজের অস্তিত্ব নির্ণয়ে;
২. বিভিন্ন মাধ্যমে শব্দের বেগ নির্ণয়ে;
৩. পাতলা পাতের পুরুত্ব নির্ণয়ে;
৪. ক্ষতিকারক অণুজীব ধ্বংস করতে প্রতিধ্বনি ব্যবহার করা হয়।

প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয় করার পদ্ধতিঃ

প্রতিধ্বনিকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয় করা যায়। এর জন্য আমাদের প্রয়োজন একটি প্রেরক যন্ত্র, একটি গ্রাহক যন্ত্র ও একটি ইলেকট্রনিক স্টপ ঘড়ি। প্রেরক যন্ত্র থেকে শব্দ প্রেরণ করা হয়। প্রেরক যন্ত্রের কাছে একটি গ্রাহক যন্ত্রের হাইড্রোফোনের সাহায্যে সমুদ্রের তলা থেকে প্রতিফলিত শব্দ গ্রহণ করা হয় এবং ইলেকট্রনিক ঘড়ির সাহায্যে শব্দ প্রেরণ ও গ্রহণের মধ্যবর্তী সময় নির্ণয় করা হয়।

ধরি, সমুদ্রের গভীরতা = h
সুতরাং, শব্দ কর্তৃক অতিক্রান্ত মোট দূরত্ব = 2h
এ দূরত্ব অতিক্রম করতে মোট সময় = t
পানিতে শব্দের বেগ = v
অতএব, শব্দের বেগ = দূরত্ব / সময়
বা, দূরত্ব = শব্দের বেগ × সময়
বা, 2h = v × t
বা, h = (v × t) /
উপরিউক্ত সমীকরণে v এবং t এর মান বসিয়ে সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয় করা যায়।

 

শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “প্রতিধ্বনি (Echo) কাকে বলে?” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।

Similar Posts