স্লাইড ক্যালিপার্স (Slide calipers) একটি পরিমাপক যন্ত্র যেটি সূক্ষ্ম পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা হয়। স্লাইড ক্যালিপার্সের অপর নাম ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স। কারণ এই যন্ত্রে মাপজোখের বেলায় ভার্নিয়ার পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। একটি আয়তকার ইস্পাত দণ্ডের গায়ে দাগ কেটে স্লাইড ক্যালিপার্সের মূল বা প্রধান স্কেল তৈরি করা হয়। প্রধান স্কেলের যে প্রান্তে শূন্য দাগ কাটা থাকে অর্থাৎ যে প্রান্ত থেকে স্কেলের সূচনা হয় সেই প্রান্তে একটি ধাতব চোয়াল আটকানো থাকে। মূল স্কেলের ক্ষুদ্রতম ভাগের ভগ্নাংশের নির্ভুল পরিমাপের জন্য মূল স্কেলের গায়ে চোয়ালযুক্ত একটি ছোট স্কেল পরানো থাকে। এর নামই ভার্নিয়ার স্কেল।
এই চোয়ালযুক্ত ভার্নিয়ার প্রধান স্কেলের উপর সামনে বা পেছনে সরানো যায়৷ এই স্কেলের সাথে একটি স্ক্রু থাকে। এই স্ক্রুর সাহায্যে ভার্নিয়ার স্কেলকে প্রধান স্কেলের গায়ে যে কোনো জায়গায় আটকিয়ে রাখা যায়৷ প্রধান স্কেলের চোয়াল এবং ভার্নিয়ার স্কেলের চোয়াল যখন লেগে থাকে তখন সাধারণত ভার্নিয়ার স্কেলের শূন্য দাগ প্রধান স্কেলের শূন্য দাগের সাথে মিলে যায়। ভার্নিয়ার স্কেল ব্যবহার করে মিলিমিটারের ভগ্নাংশ সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায়।
স্লাইড ক্যালিপার্সের সাহায্যে পরিমাপ : মনে করা যাক, কোনো একটি দণ্ডের দৈর্ঘ্য বের করতে হবে। দণ্ডটিকে স্লাইড ক্যালিপার্সের চোয়াল দুটির মাঝখানে বসাতে হয়। ভার্নিয়ার স্কেলের সাথে লাগানো চোয়াল ঠেলে সামনে আনতে হয় যাতে প্রধান স্কেলের চোয়াল ভার্নিয়ারের চোয়াল বস্তুটিকে বিপরীত দিক থেকে স্পর্শ করে। দণ্ডটির বাম প্রান্ত প্রধান স্কেলের শূন্য (০) দাগের সাথে মিলিয়ে ভার্নিয়ারটি সামনে বা পেছনে সরিয়ে দণ্ডের ডান প্রান্তের সাথে মিলানো হয়। মনে করা যাক, দণ্ডের ডান প্রান্ত স্কেলের M মিমি দাগ অতিক্রম করেছে। তাহলে এর দৈর্ঘ্য M ও (M + 1) মিমি এর মাঝামাঝি। এই M মিমি এর চেয়ে বাড়তি দৈর্ঘ্য ভার্নিয়ার ব্যবহার করে বের করতে হবে। এর দৈর্ঘ্যটুকু হবে ভার্নিয়ার পাঠ।
এবার দেখতে হবে ভার্নিয়ারের কোন দাগটি প্রধান স্কেলের কোনো একটি দাগের সাথে মিলেছে। যদি কোনো দাগ না মিলে থাকে, তাহলে দেখতে হবে ভার্নিয়ারের কোন দাগটি প্রধান স্কেলের কোনো একটি দাগের সাথে সবচেয়ে কাছাকাছি হয়েছে। ভার্নিয়ার স্কেলের এই দাগই হবে ভার্নিয়ারের সমপাতন।