স্থায়ী চুম্বক কি? What is Permanent magent in Bangla?

এমন কিছু চৌম্বক পদার্থ আছে যা দ্বারা কৃত্রিম চুম্বক তৈরি করলে চুম্বকত্ব সহজে বিলুপ্ত হয় না। এই সকল চুম্বকই স্থায়ী চুম্বক। ইস্পাত দ্বারা তৈরি চুম্বকই প্রথম স্থায়ী চুম্বক। এমন অনেক পদার্থ দিয়ে শক্তিশালী চুম্বক তৈরি করা হচ্ছে যাদের চুম্বকত্ব অনেক স্থায়ী এবং শক্তিশালী। যেমন সিরামিক চুম্বক ও লোহা, নিকেল, তামা, অ্যালুমিনিয়াম মিশ্রণে সংকর চুম্বক।

যে চৌম্বক পদার্থ নিয়ে স্থায়ী চুম্বক তৈরি করা হবে তার তিনটি গুণের দিকে অবশ্যই আমাদের লক্ষ রাখতে হবে। (i) উচ্চমানের নিগ্রহ সহনশীলতা (ii) উচ্চমানের ধারণ ক্ষমতা এবং (iii) হিস্টেরেসিস লুপের ক্ষেত্রফল বেশি হওয়া প্রয়োজন। ইস্পাতের ধারণক্ষমতা কম হলেও নিগ্রহ সহনশীলতা ও হিস্টেরেসিস লুপের ক্ষেত্রফল বেশি হওয়ায় ইস্পাত স্থায়ী চুম্বক তৈরির জন্য সবচেয়ে উপযোগী। অপরদিকে নরম লোহার ধারণ ক্ষমতা বেশি অথচ নিগ্রহ সহনশীলতা ও হিস্টেরেসিস লুপের ক্ষেত্রফল কম হওয়ায় স্থায়ী চুম্বক গঠনে একেবারেই উপযোগী নয়। কোবাল্ট ইস্পাত, টাংস্টেন প্রভৃতি কিছু সংকর ধাতু স্থায়ী চুম্বক গঠনের উপযোগী। ইস্পাত দ্বারা তৈরি চুম্বকই প্রথম স্থায়ী চুম্বক। সিরামিক ও সংকর ধাতু দিয়ে আজকাল স্থায়ী চুম্বক তৈরি করা হচ্ছে। এরূপ কয়েকটি চুম্বক নিম্নে বর্ণনা করা হলো।

সিরামিক চুম্বক : আয়রন অক্সাইড ও বেরিয়াম অক্সাইডের মিশ্রণে তৈরি সিরামিক চুম্বক বহুল প্রচলিত। সম্প্রতি উদ্ভাবিত সবচেয়ে শক্তিশালী স্থায়ী চুম্বক হলো নিয়োডিমিয়াম বোরন আয়রনের চুম্বক। নিকেল দিয়ে সর্ব প্রথম স্থায়ী চুম্বক তৈরি করা হয়। আয়রন অক্সাইড ও বেরিয়াম অক্সাইড মিশ্রণে সিরামিক চুম্বক তৈরি হয়। সিরামিক চুম্বক ফ্যারাইট নামে পরিচিত।

সংকর চুম্বক : সংকর ধাতু যেমন— লোহা, নিকেল, কোবাল্ট, তামা ও অ্যালুমিনিয়াম মিশ্রণে তৈরি করা হয় শক্তিশালী স্থায়ী চুম্বক। এদেরকে সংকর চুম্বক বলে। আয়রনের সংকরের মধ্যে ০.৮ ভাগ বা ৮০% এর বেশি কার্বন থাকলে তা স্থায়ী চুম্বক তৈরি করে।

স্থায়ী চুম্বকের ব্যবহার (Use of Permanent magnet)

স্থায়ী চুম্বকের চুম্বকত্ব সহজে বিলুপ্ত হয় না। তাই একে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হয়। খুব শক্তিশালী স্থায়ী চুম্বকের জন্য অ্যালিনিফো, টেপরেকর্ডিং এর ফিতার জন্য ভিক্যালর, লাউড স্পিকারের চুম্বকের জন্য দিকোনাল ব্যবহৃত হয়।

বহুল পরিচিত স্থায়ী চুম্বক হলো সিরামিক চুম্বক। এই চুম্বক কম্পিউটারের স্মৃতির ফিতায়, টেপরেকর্ডারের ফিতায় এবং রেডিওর অ্যান্টেনা তৈরিতে বহুল ব্যবহৃত হয়।

খনিজ থেকে উত্তোলনকৃত প্রাকৃতিক চুম্বকের দিকদর্শী ধর্ম থাকায় দিক নির্ণয়ের কাজে ব্যবহৃত হয়। কতগুলি সংকর ধাতু যেমন পারমেলয় (লোহা ও নিকেলের সংকর ধাতু) এদের চৌম্বক প্রবেশ্যতা বেশি হওয়ায় তড়িৎ চুম্বক তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *