স্কুল কর্তৃপক্ষের ভুলে ২৮ শিক্ষার্থী ফেল
স্কুল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ২৮ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে! এজন্য রাজশাহী মহানগরীর লোকনাথ উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চরম উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে। ওই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৬০ জন।
এর মধ্যে পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের ব্যববহারিক পরীক্ষায় ২৮ জনের নম্বরপত্র কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাঠায়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ওই ২৮ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অকৃতকার্য দেখিয়েছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকালেও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে বিষয়টির সমাধান দাবি করেছেন।
কারিগরি শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন গাফিলতি ও উদাসীনতা মানার মত নয়। তবে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত জড়িত থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ সমস্যাটি উপস্থাপন করলে তা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ ডিসেম্বর এসএসসি (ভোকেশাল) পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী লোকনাথ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ভোকেশনালের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনের ২৮ জন শিক্ষার্থীর সবাই অকৃতকার্য হয়। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ ফল পুনঃনিরীক্ষার জন্য আবেদন করে। কিন্তু পুনঃনিরীক্ষার ফলাফলেও এই ২৮ শিক্ষার্থীকে অকৃতকার্য দেখানো হয়। এরপর অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে লোকনাথ স্কুলের দুজন শিক্ষক কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সংশ্লিষ্ট শাখায় গিয়ে খোঁজ-খবর নেন। তখন জানা যায় এই শিক্ষার্থীদের পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয়পত্রের ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরপত্র যুক্ত না হওয়ায় তাদের অকৃতকার্য করা হয়েছে।
এরপর সোমবার সকালে লোকনাথ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফিরোজা বেগমের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ সময় প্রধান শিক্ষক তাদের আশ্বস্ত করেন যে, শিগগিরই তারা এই সমস্যার সমাধান করে দেবেন।
এমন অবহেলার প্রশ্নে রাজশাহীর লোকনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজা বেগম বলেন, তারাও কোনোভাবে এই হিসাব মেলাতে পারছিলেন না। কারণ একসঙ্গে ২৮ শিক্ষার্থী ফেল করার কথা নয়। পরে তারা সমস্যাটি চিহ্নিত করেন।
তবে ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরপত্র মেইল করেছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, কোনো কারণবশতঃ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড সেই মেইল পায়নি। হয়তো সার্ভার ডাউন কিংবা অন্য কোনো সমস্যার কারণে বোর্ডের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তাদের মেইল পৌঁছায়নি। এজন্য তারা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। এরই মধ্যে বোর্ড চেয়ারম্যানের সাথে ভুলের বিষয়ে কথা বলেছেন। ২-৩ দিনের মধ্যে তারা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে যাবেন এবং শিক্ষার্থীদের এই বিষয়টি দ্রুতই সমাধান করা হবে বলেও উল্লেখ করেন এই স্কুল প্রধান।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবদুর রহমান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে স্কুলের এমন দাবি মেনে নেওয়ার মতো নয়। মেইল পাঠালে তা আসতোই। এরপরও এখানে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত জড়িত। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষ ভুল স্বীকার করে নম্বরপত্র যুক্ত করে এ বিষয়ে আবেদন দিলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।