বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারিক কাজের জন্য তৈরি করা যেসব প্রােগ্রাম বাজারে কিনতে পাওয়া যায়, তাকে
প্যাকেজ প্রােগ্রাম বা প্যাকেজ সফটওয়্যার বলা হয়। বাণিজ্যিকভাবে সফলতা লাভের জন্য বড় বড় সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে প্যাকেজ প্রােগ্রাম তৈরি করে থাকে। এক্ষেত্রে তারা একাধিক সফটওয়্যারকে সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে সমন্বিত বা ইন্টিগ্রেশন করে বাজারজাত করে থাকেন। যেমন- মাইক্রোসফট অফিস প্যাকেজ। এ প্যাকেজটিতে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট এক্সেল, মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট এমনি আরও অনেক আলাদা আলাদা সফটওয়্যার আছে। সবগুলো সফটওয়্যারের জন্যে কিছু সাধারন বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন- নতুন কোন ফাইল খোলা, ফাইল সংরক্ষণ করা, গ্রাফের ব্যবহার, বিভিন্ন ড্রইং অবজেক্টের ব্যবহার ইত্যাদি। ব্যবহারকারী এ সকল প্রােগ্রামের কোনরূপ পরিবর্তন, সংযােজন বা সংকোচন করতে পারেন না।
প্যাকেজ সফটওয়্যারের বৈশিষ্ট্য
- পাকেজ সফটওয়্যারগুলো সাধারণত কমন কোন কাজ বা সমস্যা সমাধানের জন্য তৈরি করা হয়। এতে করে অনেকেই প্যাকেজ সফটওয়্যার কিনে তাদের কাজ করতে পারেন।
- কাস্টমাইজড বা ব্যবহারকারী লিখিত প্রোগ্রামের মতো দক্ষ যেকোন কম্পিউটার ব্যবহারকারী প্যকেজ সফটওয়্যারও তৈরি করতে পারেন। তবে এককভাবে কারো পক্ষে প্যাকেজ সফটওয়্যার তৈরি করা অনেক সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। কারণ প্যাকেজ সফটওয়্যারগুলোর কারিগরি দক্ষতা অনেক বেশি হয় এবং আকারেও এগুলো অনেক বড় হয়।
- প্যাকেজ সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিয়মিত তার ক্রেতাদের চাহিদা যাচাই করে প্যাকেজ সফটওয়্যারের নতুন ভার্সন বাজারে ছাড়েন।
- বহুলােকে ব্যবহার করতে পারে বলে এসব সফটওয়্যারের জনপ্রিয়তাও বেশি।
- এসব সফটওয়্যার সহজেই বাজারে কিনতে পাওয়া যায়।
প্যাকেজ সফটওয়্যারের সুবিধা
- কাস্টমাইজড সফটওয়্যার তৈরির ঝামেলা ও খরচ থেকে মুক্ত পাওয়া যায়।
- ছােট প্রতিষ্ঠানসমূহ কম্পিউটার কেনার সময় এসব সফটওয়্যার কিনে সাথে সাথেই তাদের এপ্লিকেশন চালাতে পারে।
- এসব সফটওয়্যার তৈরি করার পর বহুবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় বলে এর গ্রহণযােগ্যতা অনেক বেশি।
- তাছাড়া এগুলো কেনার সাথে সাথেই ব্যবহার করা যায়।
প্যাকেজ সফটওয়্যারের অসুবিধা
- এটি ব্যবহারকারীর চাহিদার সবটুকু পূরণ করতে নাও পারে। কিন্তু ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী বিক্রেতা পরিবর্তন করে দিতে বাধ্য নয়।
- প্যাকেজ সরবরাহকারীর কাজের গুণাগুণ এবং সেবার উপর ব্যবহারকারীর খুব কম নিয়ন্ত্রণ থাকে।
- কিছু কিছু প্যাকেজের মাঝে মধ্যেই পরিবর্তন করার প্রয়ােজন হতে পারে (যেমনঃ বেতন তৈরির প্রোগ্রাম)। সেক্ষেত্রে ব্যবহারকারী খুব বেশি মাত্রায় প্যাকেজ সরবরাহকারীর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
কয়েকটি প্যাকেজ সফটওয়্যার
কয়েকটি প্যাকেজ সফটওয়্যারের উদাহরণ ও তাদের কাজের ধরন সম্পর্কে নিচে দেয়া হলােঃ
মাইক্রোসফট অফিসঃ ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ের কাজে, গাণিতিক হিসাব-নিকাশ, ডাটাবেজের কাজ, প্রেজেন্টেশন তৈরি সবকিছুই করা যায়। এর মধ্যে আছে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট এক্সেল, মাইক্রোসফট একসেস, মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট এবং আরও বিভিন্ন প্রােগ্রাম।
এডােবি ফটোশপ সিএস-২ঃ গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজে এডােবি ফটোশপ জনপ্রিয় একটি সফটওয়্যার। এর মধ্যে রয়েছে এডোবি ফটোশপ, এডােবি ইমেজরেভি, এডােবি ব্রিজ।
নর্টন এন্টিভাইরাসঃ ভাইরাস নির্মুলের কাজ ও কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা (Performance) বাড়ানাে কাজ করে। এর মধ্যে আছে নর্টন এন্টিভাইরাস, নর্টন টুলকিট ইত্যাদি।