প্রশ্ন-১. ভূগোল কি?
উত্তর : ভূগোল (Geography) যেটি এসেছে গ্রীক শব্দ geographia, থেকে যার শাব্দিক অর্থ পৃথিবী সম্পর্কিত বর্ণনা বা আলোচনা। অর্থাৎ বিজ্ঞানের যে শাখায় পৃথিবীর ভূমি, এর গঠন বিন্যাস, এর অধিবাসী সম্পর্কিত সমস্ত প্রপঞ্চ সংক্রান্ত বিষয়াদি আলোচিত হয় তাকে ভূগোল বলে। এই শব্দটি খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতকে গ্রিক জ্ঞানবেত্তা এরাটোসথেনিস (২৭৬–১৯৪ খ্রিস্টপূর্ব) প্রথম ব্যবহার করেন। ভূগোলে মানুষের বসবাসের জগৎ ও তার সাথে সম্পর্কিত সমস্ত বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়ে থাকে।
উদাহরণস্বরূপ- ভৌত ভূগোলে জলবায়ু, ভূমি ও জল নিয়ে গবেষণা করা হয়; সাংস্কৃতিক ভূগোলে কৃত্রিম, মনুষ্যনির্মিত ধারণা যেমন দেশ, বসতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, পরিবহন, দালান, ও ভৌগোলিক পরিবেশের অন্যান্য পরিবর্তিত রূপ আলোচনা করা হয়। ভূগোলবিদেরা তাদের গবেষণায় অর্থনীতি, ইতিহাস, জীববিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব এবং গণিতের সহায়তা নেন।
প্রশ্ন-২. পাললিক শিলা কাকে বলে?
উত্তর : যে শিলা পলি সঞ্চিত হয়ে গঠিত হয় তাকে পাললিক শিলা বলে।
প্রশ্ন-৩. অম্ল মৃত্তিকা কাকে বলে? অম্ল মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য কি কি?
উত্তর : যে মৃত্তিকার pH এর মান৭.০ এর কম সে মৃত্তিকাকে অম্ল মৃত্তিকা বলে। মাটিতে হাইড্রোজেন আয়নের ঘনত্ব বেশি হলে মাটিতে অম্লত্বের সৃষ্টি হয়।
অম্ল মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে-
i. মাটির pH ৭.০ এর কম।
ii. ব্যাকটেরিয়ার কার্যাবলি কমে যায় ও ছত্রাকের কার্যাবলি বৃদ্ধি পায়।
iii. এ মাটিতে ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের প্রাপ্যতা কমে যায়।
iv. মাটির অম্লতা বৃদ্ধির সাথে নাইট্রোজেন, মলিবডেনাম ও পটাশিয়ামের দ্রবণীয়তা কমে যায়।
প্রশ্ন-৫. নভোমণ্ডলীয় বস্তু কি?
উত্তর : আমাদের মাথার উপর রয়েছে অনন্ত আকাশ, সীমাহীন ফাঁকা জায়গা বা মহাকাশ। সূর্য, চাঁদ, গ্রহ, তারা, মহাকাশ, ছায়াপথ, গ্যালাক্সি ইত্যাদি দেখা না দেখা সবকিছুকে নিয়ে মহাবিশ্ব। আর এই মহাবিশ্বের সকল কিছুকে বলা হয় নভোমণ্ডলীয় বস্তু।
প্রশ্ন-৪. ফকল্যান্ড স্রোত বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবেশ করার পর কুমেরু স্রোতের একটি শাখা উত্তর দিকে বেঁকে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ আর্জেন্টিনার মধ্য দিয়ে উপকূল বরাবর উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এটি ফকল্যান্ড স্রোত নামে পরিচিত। এটি একটি শীতল স্রোত।
প্রশ্ন-৭. ক্ষুব্ধমণ্ডল কাকে বলে?
উত্তর : ট্রোপোস্ফিয়ার অঞ্চলে ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত ইত্যাদির কারণে বায়ুমণ্ডল ক্ষুব্ধ থাকে বলে একে ক্ষুব্ধমণ্ডল বলে। এই অঞ্চলে তাপমাত্রা ও পানিচক্র নিয়ন্ত্রিত হয়।
প্রশ্ন-৮. মহাশূন্য কি?
উত্তর : গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ, গ্যালাক্সি ইত্যাদির মাঝখানে যে খালি জায়গা রয়েছে তাকে মহাশূন্য বলে।
প্রশ্ন-৯. বিষুব রেখা কাকে বলে?
উত্তর : দুই মেরু থেকে সমান দূরত্বে পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টন করে যে রেখা কল্পনা করা হয় তাকে বিষুব রেখা বলে।
প্রশ্ন-১০. ভূত্বক কাকে বলে?
উত্তর : পৃথিবীর বাইরের দিকের একটি পাতলা আবরণকে ভূত্বক বলে।
প্রশ্ন-১১. দ্রাঘিমারেখা কাকে বলে?
উত্তর : নিরক্ষরেখাকে ডিগ্রি, মিনিট ও সেকেন্ডে ভাগ করে প্রত্যেক ভাগ বিন্দুর ওপর দিয়ে উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত যে রেখাগুলো কল্পনা করা হয়েছে তাকে দ্রাঘিমারেখা বলে।
প্রশ্ন-১২. অশ্বমন্ডল কাকে বলে?
উত্তর : ভূ-অভ্যন্তরের গুরুমন্ডলের উপরের অংশকে অশ্বমন্ডল বা শিলামন্ডল বলে। এটা নানা প্রকার শিলা ও খনিজ উপাদান দ্বারা গঠিত।
প্রশ্ন-১৩. তাপমণ্ডল কাকে বলে?
উত্তর : মেসোবিরতির ওপরের অংশকে তাপমণ্ডল বলে।
প্রশ্ন-১৪. মেরুরেখা কাকে বলে?
উত্তর : পৃথিবীর কেন্দ্র দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে কল্পিত রেখাকে অক্ষ বা মেরুরেখা বলে।
প্রশ্ন-১৭. কেন্দ্রাতিগ শক্তি কাকে বলে?
প্রশ্ন-১৯. জ্যোতিষ্ক কাকে বলে?
উত্তর : মহাকাশের দিকে তাকালে আমরা চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র ইত্যাদি অসংখ্য আলোকবিন্দু দেখতে পাই, এগুলোকে জ্যোতিষ্ক বলে।
প্রশ্ন-২০. মৃত আগ্নেয়গিরি কাকে বলে?
উত্তর : যেসব আগ্নেয়গিরি দীর্ঘকাল ধরে নিস্ক্রিয় হয়ে আছে এবং ভবিষ্যতেও অগ্নুৎপাতের সম্ভাবনা নেই, সেগুলোকেই মৃত আগ্নেয়গিরি বলে। যেমন– ইরানের কোহিসুলতান।
প্রশ্ন-২২. পাদদেশীয় সমভূমি কাকে বলে?
উত্তর : পাহাড়ের পাদদেশে পলি সঞ্চয়ের মাধ্যমে যে পলল সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে পাদদেশীয় সমভূমি বলে। যেমনঃ পলল পাখা।
প্রশ্ন-২৩. ট্রপোমণ্ডল কাকে বলে?
উত্তর : ভূ-পৃষ্ঠের সর্বনিম্ন স্তরটিকে ট্রপোমণ্ডল বলে।
প্রশ্ন-২৪. বায়ুমণ্ডল কাকে বলে?
উত্তর : ভূ-পৃষ্ঠের চারপাশে বেষ্টন করে যে বায়ুর আবরণ রয়েছে, তাকে বায়ুমণ্ডল বলে।
প্রশ্ন-২৭. গর্জনশীল চল্লিশা কি?
উত্তর : ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে ৪০° থেকে ৪৭° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত পশ্চিমা বায়ুর গতিবেগ অত্যন্ত প্রবল। এ অঞ্চলকে বলা হয় গর্জনশীল চল্লিশা। এ বায়ু প্রবাহের ফলে ওপরের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং প্রায়ই প্রবল বৃষ্টিপাত হয়।
প্রশ্ন-২৮. টেকটোনিক প্লেট কি?
উত্তর : বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলকে ভূমিকম্পের সম্ভাবনার ওপর ভিত্তি করে কতকগুলো ভাগে বিভক্ত করা হয়। এর প্রতিটি অঞ্চলকে টেকটোনিক প্লেট বলা হয়। এ টেকটোনিক প্লেটের বৈশিষ্ট্য অনুসারে এক একটি ভূমিকম্প অঞ্চলের ক্ষেত্র নির্ধারিত হয়েছে।
প্রশ্ন-২৯. ফোবোস ও ডিমোস কি?
উত্তর : ফোবোস ও ডিমোস হচ্ছে মঙ্গলগ্রহের দুটি উপগ্রহের নাম। রোমানদের যুদ্ধদেবতা দুজন অনুচরের নামানুসারে এ নামকরণ করা হয়েছে।
প্রশ্ন-৩০. নক্ষত্র জগৎ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : মহাবিশ্বের অনেক কিছুই মহাকাশ নামক সীমাহীন ফাঁকা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। মহাবিশ্বের কোনো কোনো অংশে এসব বস্তু বা পদার্থের উপস্থিতি অন্য অংশের চেয়ে বেশি। যেসব অংশে পদার্থ বা বস্তু বেশি জড়ো বা ঘনীভূত হয়েছে তাদেরকে বলে নক্ষত্র জগৎ।
প্রশ্ন-৩১. আগ্নেয় শিলার বৈশিষ্ট্য কি কি?
উত্তর : আগ্নেয় শিলার বৈশিষ্ট্যসমূহ নিচে দেওয়া হলো–
- আগ্নেয় শিলা সর্বপ্রথম ম্যাগমা থেকে সৃষ্টি হয়।
- এটি অস্তরীভূত শিলা।
- এ শিলা জীবাশ্মবিহীন।
- আগ্নেয় শিলার গঠন প্রক্রিয়া একটি ভৌত পরিবর্তন।
- এ শিলা সুদৃঢ় ও সুসংহত হওয়ায় এটি মজবুত ও শক্ত।
প্রশ্ন-৩২. কৃত্রিম উপগ্রহের কাজ কি?
উত্তর : কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করে যেসব কাজ করা যায় তা হলো–
১. আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
২. পৃথিবীর যে কোন দেশে অনুষ্ঠিত খেলাধুলা বা যে কোন অনুষ্ঠান ধারাবাহিকভাবে দেখানো যায়।
৩. সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয় করা যায়।
৪. আন্তঃমহাদেশীয় যোগাযোগ রক্ষা করা যায়।
৫. পৃথিবীর আকার ও আকৃতি সম্পর্কিত ভূ-জরিপ করানো যায়।
৬. প্রতিরক্ষামূলক পাহারা ও বিভিন্ন সামরিক ব্যবস্থায় এটি ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন-৩৩. শিল্ড ও সিনডার আগ্নেয়গিরির মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : শিল্ড আগ্নেয়গিরির লাভা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয় এবং কিছুটা ব্যাঙের ছাতার মতো ডোমের আকৃতির হয়। পক্ষান্তরে, সিনডার কোন আগ্নেয়গিরি খণ্ডিত শিলা টুকরা, লাভা বিস্ফোরক থেকে সৃষ্টি হয়। এটি সাধারণত খাড়া ঢালবিশিষ্ট এবং আকারে ছোট হয়।
প্রশ্ন-৩৫. চাঁদ আলোকিত দেখা যায় কেন?
উত্তর : চাঁদ নিজে তাপ বা আলো উৎপন্ন করতে পারে না। তা সত্ত্বেও আমরা চাঁদকে আলোকিত দেখি। এর কারণ সূর্যের আলো চাঁদের ওপর পড়ে এবং আলোকিত হয়। এ প্রতিফলিত আলোর কারণেই আমরা চাঁদকে আলোকিত দেখি।
প্রশ্ন-৩৬. পৃথিবীর ভেতরের অংশ কয় ভাগে বিভক্ত?
উত্তর : পৃথিবীর ভেতরের অংশ তিন ভাগে বিভক্ত। পৃথিবীপৃষ্ঠের নিচে পৃথিবীর অভ্যন্তরকে ঘিরে যে শক্ত স্তর রয়েছে তাই শিলামণ্ডল। শিলামণ্ডল পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ১০০ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত থাকতে পারে। শিলামণ্ডলের নিচে গুরুমণ্ডল আর সবশেষে পৃথিবীর কেন্দ্রের চারিদিকে কেন্দ্রমণ্ডল।