পড়াশোনা
1 min read

সন্ধি কাকে বলে? সন্ধি কত প্রকার ও কি কি? সন্ধির প্রয়োজনীয়তা।

সন্ধি’ শব্দের অর্থ ‘মিলন’। তবে এ মিলন হল বর্ণের একত্রীকরণ।

পাশাপাশি দুইটি ধ্বনি বা বর্ণের পরস্পর মিলনকে সন্ধি বলে। যেমনঃ বিদ্যা + আলয় = বিদ্যালয়, হিম + আলয় = হিমালয়, নর + অধম = নরাধম ইত্যাদি।

সন্ধি শব্দ সাধনের বা নতুন শব্দ গঠনের একটি পদ্ধতি। আসলে সন্ধি একটি উচ্চারণ প্রক্রিয়া।

সন্ধির সংজ্ঞাঃ পাশাপাশি দু বর্ণের মিলনকে সন্ধি বলে।

অথবা, পাশাপাশি দুটি বর্ণের এক বর্ণে মিলিত হওয়াকে সন্ধি বলে।

ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে— “দুটি বর্ণ অত্যন্ত নিকটবর্তী হলে উচ্চারণের সুবিধার জন্য তারা উভয়ে মিলে এক বর্ণ হয়। তাদের একের রূপান্তর হয় কিংবা একের লোপ হয়। এরূপ বর্ণদ্বয়ের মিলনকেই সন্ধি বলে।”

সন্ধির বৈশিষ্ট্যঃ সন্ধির ক্ষেত্রে ধ্বনির মিলন চার রকমের হতে পারে। যেমন—

(১) উভয় ধ্বনি মিলে এক ধ্বনিতে পরিণত হয়।

(২) একটি ধ্বনি বদলে যায়।

(৩) একটি ধ্বনি লোপ পায়।

(৪) উভয় ধ্বনি বদলে গিয়ে নতুন একটি ধ্বনির সৃষ্টি হয়।

সন্ধির ফলে নতুন শব্দ গঠিত হয়, বাক্যের গঠন দৃঢ় হয় এবং বাক্য শ্রুতিমধুর হয়।

 

সন্ধির প্রকারভেদ

সন্ধি প্রধানত দুই প্রকার। যথাঃ (ক) স্বরসন্ধি ও (খ) ব্যঞ্জনসন্ধি।

স্বরসন্ধি : স্বরবর্ণের সাথে স্বরবর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে স্বরসন্ধি বলে। যেমনঃ মহা+আশয়=মহাশয়, হিম+আলয়=হিমালয়, জল+আশয়=জলাশয় ইত্যাদি।

ব্যঞ্জনসন্ধি : ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে ব্যঞ্জনবর্ণ অথবা স্বরবর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে ব্যঞ্জনসন্ধি বলে। যেমনঃ পরি+ছেদ=পরিচ্ছেদ, দিক+অন্ত=দিগন্ত, সৎ+ভাব=সদ্ভাব ইত্যাদি।

স্বরসন্ধি ও ব্যঞ্জনসন্ধি ছাড়াও আরো দুই প্রকারের সন্ধি বাংলা ব্যাকরণে প্রচলিত আছে। যথাঃ (ক) বিসর্গ সন্ধি ও (খ) নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি।

বিসর্গ সন্ধি : স্বরবর্ণ বা ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে বিসর্গের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে বিসর্গসন্ধি বলে। যেমনঃ নিঃ+ঠুর=নিষ্ঠুর, নিঃ+চয়=নিশ্চয়, আবিঃ+কার=আবিষ্কার।

নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি : যে সকল সন্ধি ব্যাকরণের নিয়ম অনুসরণ করে না, সেগুলোকে নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি বলে। যেমনঃ বাচঃ+পতি=বাচস্পতি, ভাঃ+কর=ভাস্কর, বন+পতি=বনস্পতি, ষট+দশ=ষোড়শ।

সন্ধির প্রয়োজনীয়তা

বাংলা ব্যাকরণে সন্ধির প্রয়োজনীয়তা অত্যাধিক। যেমনঃ

(ক) সন্ধির সাহায্যে নতুন নতুন শব্দের সৃষ্টি হয়।

(খ) সন্ধি শব্দকে সুন্দর ও শ্রুতিমধুর করে।

(গ) সন্ধি সহজ ও সুন্দর ভাষা তৈরি করে।

(ঘ) সন্ধি ভাষাকে শ্রুতিমধুর করে।

(ঙ) সন্ধি শব্দকে দ্রুত উচ্চারণে সহায়তা করে।

(চ) সন্ধি শব্দ ও বানান শিখতে সাহায্য করে।

পাঠ মূল্যায়নঃ

সন্ধি শব্দের অর্থ কি?; সন্ধি কাকে বলে?; সন্ধি কত প্রকার ও কী কী?; স্বরসন্ধি কাকে বলে?; ব্যঞ্জনসন্ধি কাকে বলে?; বিসর্গসন্ধি কাকে বলে?; নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি কাকে বলে?;

Rate this post