তৃতীয় অধ্যায় : চল তড়িৎ, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্র
প্রশ্ন-১. তড়িৎ প্রবাহ কাকে বলে?
উত্তর : কোনো পরিবাহকের যেকোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে একক সময়ে যে পরিমাণ আধান প্রবাহিত হয় তাকে তড়িৎ প্রবাহ বলে।
প্রশ্ন-২. তড়িৎ প্রবাহের একক কি?
উত্তর : তড়িৎ প্রবাহের একক অ্যাম্পিয়ার।
প্রশ্ন-৩. তড়িৎ প্রবাহ কিভাবে চলে?
উত্তর : পরিবাহীর দুই প্রান্তে বিভব পার্থক্য সৃষ্টি করা হলে এর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চলে।
প্রশ্ন-৪. পরিবাহী কাকে বলে?
উত্তর : যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই তড়িৎ প্রবাহ চলতে পারে তাদেরকে পরিবাহী বলে। তামা, রূপা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি পরিবাহী।
প্রশ্ন-৫. অপরিবাহী কাকে বলে?
উত্তর : যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চলতে পারে না তাদেরকে অপরিবাহী বা অন্তরক পদার্থ বলে। যেমন– প্লাস্টিক, রাবার, কাঠ, কাঁচ ইত্যাদি।
প্রশ্ন-৬. অ্যাম্পিয়ার কাকে বলে?
উত্তর : কোনো পরিবাহীর যেকোনো প্রস্তথচ্ছেদের মধ্য দিয়ে এক সেকেন্ডে এক কুলম্ব আধান সুষমভাবে প্রবাহিত হলে যে তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয় তাকে এক অ্যাম্পিয়ার বলে।
প্রশ্ন-৭. অ্যাম্পিয়ারকে কি দ্বারা প্রকাশ করা হয়?
উত্তর : একে A দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
প্রশ্ন-৮. অর্ধপরিবাহী পদার্থ কাকে বলে?
উত্তর : যে সকল পদার্থের তড়িৎ পরিবাহিতা অপরিবাহী ও পরিবাহীর মাঝামাঝি সেসব পদার্থকে অর্ধপরিবাহী বা সেমিকন্ডাক্টর বলে।
প্রশ্ন-৯. রোধ কাকে বলে?
উত্তর : পরিবাহকের যে ধর্মের জন্য এর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ বাঁধাপ্রাপ্ত হয় তাকে রোধ বলে।
প্রশ্ন-১০. তড়িচ্চালক বল কাকে বলে?
উত্তর : কোনো তড়িৎ উৎস একক ধনাত্মক আধানকে বর্তনীর এক বিন্দু থেকে উৎসসহ সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে আবার ঐ বিন্দুতে আনতে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে, তথা উৎস যে তড়িৎশক্তি ব্যয় করে, তাকে ঐ উৎসের তড়িচ্চালক বলে। তড়িচ্চালক বলের SI একক JC-1 যাকে ভোল্ট বলা হয়।
প্রশ্ন-১১. দৈর্ঘ্যের সূত্র কি?
উত্তর : প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল (A) ও উপাদান একই হলে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পরিবাহীর রোধ (R) এর দৈর্ঘ্যের (l) সমানুপাতিক। অর্থাৎ R ∞ l যখন, ক্ষেত্রফল A ধ্রুব।
প্রশ্ন-১২. প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের সূত্র কি?
উত্তর : দৈর্ঘ্য (l) ও উপাদান একই হলে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পরিবাহীর রোধ (R) এর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের (A) ব্যস্তানুপাতিক। অর্থাৎ R ∞ 1/A যখন, দৈর্ঘ্য l ধ্রুব।
প্রশ্ন-১৩. আপেক্ষিক রোধ কাকে বলে?
উত্তর : কোনো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একক দৈর্ঘ্য ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট কোনো পরিবাহীর রোধকে ঐ তাপমাত্রায় তার উপাদানের আপেক্ষিক রোধ বলে।
প্রশ্ন-১৪. রোধের সন্নিবেশ কাকে বলে?
উত্তর : একাধিক রোধকে একসাথে সংযোগ করাকেই রোধের সন্নিবেশ বলে।
প্রশ্ন-১৫. তুল্যরোধ কাকে বলে?
উত্তর : রোধের কোনো সন্নিবেশে রোধগুলোর পরিবর্তে সমমানের যে একটিমাত্র রোধ ব্যবহার করলে বর্তনীর তড়িৎ প্রবাহ ও বিভব পার্থক্যের কোনো পরিবর্তন হয় না সেই রোধকে ঐ সন্নিবেশের তুল্যরোধ বলে।
প্রশ্ন-১৬. নষ্ট ভোল্ট কাকে বলে?
উত্তর : কোষের অভ্যন্তরীণ রোধের ভেতর দিয়ে প্রবাহ চালনা করার জন্য কিছু ভোল্ট নষ্ট হয় যা বহিঃবর্তনীতে কোনো কাজে আসে না; একে নষ্ট ভোল্ট বলে।
প্রশ্ন-১৭. অ্যামিটার কাকে বলে?
উত্তর : যে যন্ত্রের সাহায্যে বর্তনীর তড়িৎ প্রবাহ সরাসরি অ্যাম্পিয়ার এককে পরিমাপ করা যায় তাকে অ্যামিটার বলে।
প্রশ্ন-১৮. ভোল্টমিটার কাকে বলে?
উত্তর : যে যন্ত্রের সাহায্যে বর্তনীর যে কোনো দুই বিন্দুর মধ্যকার বিভব পার্থক্য সরাসরি ভোল্ট এককে পরিমাপ করা যায় তাকে ভোল্টমিটার বলে।
বিভব বিভাজক বা ভোল্টেজ বিভাজক কাকে বলে?
উত্তরঃ যে যন্ত্রের সাহায্যে একটি উচ্চমানের সরবরাহ ভোল্টেজ থেকে নিম্ন মানের ভোল্টেজ পাওয়া যায় তাকে বিভব বিভাজক বা ভোল্টেজ বিভাজক বলে।
শান্ট কাকে বলে?
উত্তর : সুবেদি যন্ত্র যেমন গ্যালভানোমিটারকে অধিক তড়িৎ প্রবাহজনিত ক্ষতি হতে রক্ষার উদ্দেশ্যে এর সাথে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্রমানের একটি রোধ সমান্তরালে সংযুক্ত করে ঐ বর্তনীতে ব্যবহার করা হয়। সমান্তরালে সংযুক্ত এই ক্ষুদ্র মানের রোধকে শান্ট বলে।
হুইটস্টোন ব্রিজ বর্তনী কাকে বলে?
উত্তর :চারটি রোধকে পরপর শ্রেণিবদ্ধভাবে সাজিয়ে যেকোন দুটি রোধের একটি সংযোগস্থল এবং অপর দুটি রোধের সংযোগস্থলের মাঝে একটি গ্যালভানোমিটার এবং বাকি দুটি সংযোগস্থলের মাঝে একটি তড়িৎ কোষ সংযুক্ত করা হলে যে বর্তনী তৈরি হয়, তাকে হুইটস্টোন ব্রিজ বর্তনী বলে।
হুইটস্টোন ব্রিজ নীতি: হুইটস্টোন ব্রিজ বর্তনীর চারটি রোধ এমনভাবে নির্বাচন করা হয় যাতে, ব্রিজটি সাম্যাবস্থায় থাকলে এর যেকোনো দুটি রোধের অনুপাত, আনুষঙ্গিক অপর দুটি রোধের অনুপাতের সমান হবে।