Islamicপড়াশোনা

দ্বিতীয় অধ্যায় : ইবাদত (ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা), অষ্টম শ্রেণি

1 min read
প্রশ্ন-১. ‘হজ’ শব্দের অর্থ কি?
উত্তর : সংকল্প করা।

প্রশ্ন-২. হজের ফরজ কয়টি?
উত্তর : তিনটি।

প্রশ্ন-৩. কাকে যাকাত দেয়া যাবে না?
উত্তর : ইয়াতিম।

প্রশ্ন-৪. ইসলামের রুকন কয়টি?
উত্তর : ৫টি।

প্রশ্ন-৫. যাকাতের মাসারিফ কয়টি?
উত্তর : ৮।

প্রশ্ন-৬. মাসারিফ অর্থ কি?
উত্তর : ব্যয়ের খাত।

প্রশ্ন-৭. যাকাত অর্থ কি?
উত্তর : বৃদ্ধি।

প্রশ্ন-৮. জীবনে কয়বার হজ করা ফরজ?

উত্তর : এক।

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১. ‘নিসাব’ কী?
উত্তর :
 যে পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে যাকাত আদায় করা ফরজ হয় সে পরিমাণ সম্পদই নিসাব।

প্রশ্ন-২. মিসকিন কাকে বলে?
উত্তর :
 যারা নিঃস্ব, নিজের পেটের অন্নও যোগাড় করতে পারে না এবং অভাবগ্রস্ত থাকা সত্ত্বেও সম্মানের ভয়ে কারো দ্বারস্থ হয় না, তাদের মিসকিন বলে।

প্রশ্ন-৩. ইহরাম কি?
উত্তর :
 ইহরাম হলো হজের আনুষ্ঠানিক নিয়ত।

প্রশ্ন-৪. যাকাতে মাসারিফ কি?
উত্তর :
 ইসলামি বিধান অনুযায়ী যাকাত দেওয়ার আটটি খাতই হলাে যাকাতে মাসারিফ।

প্রশ্ন-৫. সাঈ কি?
উত্তর :
 হজের সময় কাবাঘরের অনতিদূরে অবস্থিত সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝের পথটি সাতবার অতিক্রম করাই হলাে সাঈ।

প্রশ্ন-৬. আরাফায় অবস্থান করা কি?
উত্তর :
 আরাফায় অবস্থান করা হজের একটি ফরজ কাজ।

প্রশ্ন-৭. ‘যমযম’ কি?
উত্তর :
 যমযম মক্কার একটি বিখ্যাত কূপের নাম, যা আল্লাহর অসীম কুদরতে সৃষ্টি হয়েছে।

প্রশ্ন-৮. নিসাব কি?
উত্তর :
 যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নির্ধারিত পরিমাণই হলাে নিসাব।

প্রশ্ন-৯. হজ কাকে বলে?
উত্তর :
 নির্দিষ্ট দিনসমূহে নির্ধারিত পদ্ধতিতে আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পবিত্র কাবাঘর ও সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহে বিশেষ কার্যাদি সম্পাদন করাকে হজ বলে।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১. নিসাব কি?
উত্তর :
 নিসাব হলাে সম্পদের পরিমাণ।
যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নির্ধারিত পরিমাণকে নিসাব বলে। নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে অর্থাৎ কমপক্ষে সাড়ে সাত তােলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তােলা রৌপ্য অথবা এর সমমূল্যের সম্পদ কারাে মালিকানায় এক বছর থাকলে তার ওপর যাকাত দেওয়া ফরজ।

প্রশ্ন-২. আকিকা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :
 আকিকা বলতে সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে তার কল্যাণ কামনা করে আল্লাহর নামে হালাল পশু জবাই করাকে বােঝায়।
‘আকিকা’ আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে ভাঙা, কেটে ফেলা ইত্যাদি। মুসলিম পরিবারে সন্তান জন্মের পর সপ্তম দিনে তার কল্যাণ কামনা করে আল্লাহর নামে হালাল গৃহপালিত পশু জবাই করা হয়। একে আকিকা বলে। এটি করা সুন্নাত। এর মাধ্যমে আল্লাহর রহমত পাওয়া যায় এবং সন্তানের বিপদাপদ দূর হয়।

প্রশ্ন-৩. যাকাত বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :
 যাকাত বলতে নিসাব পরিমাণ সম্পদের নির্দিষ্ট অংশ শরিয়তের নির্ধারিত খাতসমূহে দান করাকে বােঝায়।
যাকাত ইসলামের একটি মৌলিক বিধান। এর অর্থ বৃদ্ধি, পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি। ধনী ব্যক্তিদের নিসাব (নির্ধারিত) পরিমাণ সম্পদ থাকলে বছর শেষে নির্দিষ্ট অংশ গরিব ও অভাবী লােকদের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়াকে যাকাত বলে।

প্রশ্ন-৪. ‘মাসারিফ’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :
 ‘মাসারিফ’ বলতে ইসলামি বিধান যাকাত আদায়ের আটটি খাতকে বােঝায়।
মাসারিফ আরবি শব্দ। এর অর্থ ব্যয় করার খাত। যাকাতের মাসারিফ অর্থাৎ কোন কোন খাতে যাকাতের অর্থ ব্যয় করতে হবে তা আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এগুলাে হলো— অভাবগ্রস্ত বা ফকির, সম্বলহীন বা মিসকিন, যাকাতের জন্য নিয়ােজিত সদ্য মুসলমান কর্মচারী, মুক্তিকামী দাস, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, ইসলামের খিদমতে নিয়ােজিত ব্যক্তি, মুসাফির বা অসহায় ব্যক্তি। এ খাতগুলােকেই মাসারিফ বলা হয়।

প্রশ্ন-৫. উশর বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :
 উশর বলতে উৎপন্ন শস্যের যাকাত আদায় করাকে বােঝায়।

ধান, গম, যব, খেজুর ইত্যাদি শস্য সেচ প্রদান ছাড়া বৃষ্টির পানিতে জন্মালে প্রয়ােজনের অতিরিক্ত সব ফসলের দশ ভাগের এক ভাগ যাকাত আদায় করতে হয়। একে উশর বলে। আর সেচ ব্যবস্থায় উৎপন্ন ফসলের বিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত আদায় করতে হয়।

প্রশ্ন-৬. তাওয়াফে কুদুম বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :
 তাওয়াফে কুদুম বলতে আগমনি তাওয়াফকে বােঝায়।
ইহরাম বাঁধার পর মক্কা পৌঁছে কাবাঘরের চারধারে সাতবার তাওয়াফ করতে হয়। মক্কা শরিফ পৌছার পর এটি প্রথম তাওয়াফ। এ কারণে একে তাওয়াফে কুদুম বা আগমনি তাওয়াফ বলা হয়। হাজরে আসওয়াদ থেকে এ তাওয়াফ শুরু করতে হয়। 

প্রশ্ন-৭. কুরবানি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :
 কুরবানি বলতে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে কোনাে কিছু ত্যাগ বা উৎসর্গ করাকে বােঝায়।
কুরবানির আরবি শব্দ ‘উযহিয়্যাহ’। এর আভিধানিক অর্থ ত্যাগ, উৎসর্গ ইত্যাদি। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, যিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশ্যে পশু জবাই করাই হলাে কুরবানি।

প্রশ্ন-৮. ইবাদত বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :
 ইবাদত বলতে আল্লাহর আদেশ পালন ও নিষেধ বর্জন করে জীবন পরিচালনা করাকে বােঝায়।
ইসলাম হলাে পরিপূর্ণ জীবনবিধান। তাই মানবজীবনের প্রতিটি কাজ ইসলামি বিধিবিধান অনুযায়ী সম্পন্ন করাই হলাে ইবাদত। ইসলামের মৌলিক পাঁচটি বিষয় যথা : কালিমা, নামায, যাকাত, রােযা ও হজ যথাযথভাবে পালন করাও ইবাদত।

প্রশ্ন-৯. হজ কি?
উত্তর :
 ইসলামের পাঁচটি ভিত্তির একটি হলাে হজ।
হজের আভিধানিক অর্থ হলাে সংকল্প করা, ইচ্ছা করা ইত্যাদি। নির্দিষ্ট দিনগুলােতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পবিত্র কাবাঘর ও সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহে বিশেষ কার্যাদি সম্পাদন করাকে হজ বলে। প্রত্যেক সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক, বুদ্ধিমান ও সামর্থ্যবান মুসলিম নরনারীর ওপর জীবনে একবার হজ আদায় করা ফরজ।

প্রশ্ন-১০. যাকাতের নিসাব মেনে যাকাত দেয়া জরুরি কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :
 যাকাত আদায় সঠিক হওয়ার জন্য নিসাব মেনে যাকাত দেওয়া প্রয়ােজন।
যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নির্ধারিত পরিমাণকে নিসাব বলে। ইসলামি শরিয়তে যাকাতের নিসাব নির্ধারিত। এ নির্ধারিত বিষয় না মেনে যাকাত আদায় করলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযােগ্য হবে না। এ কারণে যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে নিসাব মানা জরুরি।

প্রশ্ন-১১. ‘হজ পালনের মাধ্যমে পাপ মুক্ত হওয়া যায়।’ – ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :
 ‘হজ পালনের মাধ্যমে পাপ মুক্ত হওয়া যায়।’ – বক্তব্যটি হাদিসের আলােকে সম্পূর্ণ সঠিক।
হজের গুরুত্ব সম্পর্কে মহানবি (স) বলেছেন, “যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহ যিয়ারতে এসে কোনাে অশ্লীল কাজ করল না, আল্লাহর অপছন্দনীয় কোনাে কাজে লিপ্ত হলাে না, সে গুনাহ বা পাপ থেকে এমনভাবে পবিত্র হয়ে ফিরল যেমন সে পবিত্র ছিল সেদিন, যেদিন সে তার মায়ের পেট থেকে জন্মগ্রহণ করেছিল।’ (বুখারি ও মুসলিম) তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটি হাদিসের আলােকে সম্পূর্ণ সঠিক।

প্রশ্ন-১২. ধনী হলেও মুসাফিরদেরকে কেন যাকাত দেয়া যায়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রবাসে বা সফরে গিয়ে অর্থসংকটে পড়া প্রবাসী পথিক আর ‘নিঃস্ব মানুষের মধ্যে কোনাে তফাৎ থাকে না। তাই ধনী হলেও মুসাফিরকে যাকাত দেওয়া যায়।
মানুষ অনেক সময় সফরে গিয়ে অর্থসংকটে পড়ে। তখন সে সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে পড়ে। কারণ প্রবাসে তার কোনাে পরিচিত বা আপনজন না থাকায় সে কারও কাছ থেকে অর্থসাহায্য পায় না। এ ধরনের মানুষ সম্পূর্ণ অসহায় ও বিপদগ্রস্ত। তাই এ বিপদ থেকে তাকে উদ্ধার করার জন্য সাময়িকভাবে তাকে যাকাতের অর্থ দান করা যায়।

প্রশ্ন-১৩. মহিলাদের ব্যবহার্য অলংকারের যাকাত দিতে হবে কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রয়ােজনীয় মৌলিক বস্তুর অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় মহিলাদের ব্যবহার্য অলংকারের যাকাত দিতে হবে।
স্ত্রীলােকেরা তাদের শখ পূরণের জন্য সােনা, রুপার অলংকার ব্যবহার করে। এগুলাে জীবনের আবশ্যকীয় মৌলিক বস্তু নয়। তাই সােনা, রুপার অলংকার নিসাব পরিমাণ হলে তার যাকাত দিতে হবে।

প্রশ্ন-১৪. যাকাতের মাধ্যমে সম্পদ বৃদ্ধি পায় কীভাবে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যাকাতের মাধ্যমে আল্লাহর বরকত ও রহমত পাওয়া যায়। ফলে সম্পদের গতিশীলতা সৃষ্টি হয় ও সম্পদ বৃদ্ধি পায়।
যাকাত শব্দের আভিধানিক অর্থ বৃদ্ধি, পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি। মানুষের হাতে সম্পদ পুঞ্জীভূত থাকুক আল্লাহ তায়ালা তা পছন্দ করেন না। তিনি চান সম্পদ মানুষের কল্যাণে ব্যয় হােক। ফলে যাকাত প্রদান করলে আল্লাহ তায়ালা যাকাত আদায়কারীর সম্পদে বরকত দান করেন। একই সাথে সম্পদ সবার হাতে বণ্টন হওয়ায় সম্পদের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। ফলে সামগ্রিকভাবে যাকাত সম্পদের বৃদ্ধি ঘটায়।
Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x