প্রশ্ন-১. তরঙ্গ কাকে বলে?
উত্তর : যে পর্যাবৃত্ত আন্দোলন কোন জড় মাধ্যমের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে শক্তি সঞ্চারিত করে কিন্তু মাধ্যমের কণাগুলোকে স্থানান্তরিত করে না তাকে তরঙ্গ বলে।
প্রশ্ন-২. তরঙ্গ কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর : তরঙ্গ প্রবাহের দিক এবং মাধ্যমের কণাগুলোর কম্পনের দিকের ওপর ভিত্তি করে তরঙ্গকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়। যথা: (ক) অনুপ্রস্থ তরঙ্গ এবং (খ) অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ।
প্রশ্ন-৩. তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য কি কি?
উত্তর : তরঙ্গের বৈশিষ্ট্যগুলো নিচে তুলে ধরা হলো :
১. মাধ্যমের কণার স্পন্দন গতির ফলে তরঙ্গ সৃষ্টি হয় কিন্তু মাধ্যমের কণা স্থানান্তরিত হয় না, শুধুমাত্র আন্দোলন মাধ্যমের ভেতর দিয়ে তরঙ্গাকারে সঞ্চারিত হয়।
২. তরঙ্গ বেগ মাধ্যমের কণাগুলোর স্পন্দনের বেগ থেকে আলাদা। মাধ্যমের সব জায়গায় তরঙ্গ বেগ একই থাকে কিন্তু মাধ্যমের কণাগুলো বিভিন্ন বেগে স্পন্দিত হয়।
৩. সাম্যাবস্থানে কণাগুলোর বেগ সবচেয়ে বেশি।
৪. সব তরঙ্গই শক্তি সঞ্চারণ করে।
প্রশ্ন-৪. তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কাকে বলে?
উত্তর : তরঙ্গ সঞ্চারণকারী কোন কণার একটি পূর্ণ স্পন্দন সম্পন্ন হতে যে সময় লাগে সে সময়ে তরঙ্গ যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বলে। একে λ (ল্যামডা) দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
প্রশ্ন-৫. তরঙ্গ বেগ কাকে বলে?
উত্তর : তরঙ্গ নির্দিষ্ট দিকে একক সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে তরঙ্গ বেগ বলে।
প্রশ্ন-৬. তরঙ্গের দশা কাকে বলে?
উত্তর : কোনো একটি তরঙ্গায়িত কণার যে কোনো মুহুর্তের গতির সামগ্রিক অবস্থা প্রকাশক রাশিকে দশা বলে।
প্রশ্ন-৭. স্থির তরঙ্গ কাকে বলে?
উত্তর : কোন মাধ্যমের একটি সীমিত অংশে সমান বিস্তার ও তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের দুটি চলমান তরঙ্গ একই মানের বেগে বিপরীত দিক থেকে অগ্রসর হয়ে একে অপরের ওপর আপতিত হলে যে তরঙ্গের উদ্ভব হয়, তাকে স্থির তরঙ্গ বলে।
প্রশ্ন-৮. যান্ত্রিক তরঙ্গ কাকে বলে?
উত্তর : যে তরঙ্গ সঞ্চালনের জন্য স্থিতিস্থাপক মাধ্যমের প্রয়োজন হয় তাকে যান্ত্রিক তরঙ্গ বলে।
প্রশ্ন-৯. যান্ত্রিক তরঙ্গের উদাহরণ লিখ।
উত্তর : পানির তরঙ্গ, শব্দ তরঙ্গ প্রভৃতি যান্ত্রিক তরঙ্গের উদাহরণ।
প্রশ্ন-১০. বিস্তার কি?
উত্তর : কম্পমান কণার সাম্যাবস্থান হতে যেকোনো একদিকে কণার সর্বাধিক সরণকে ঐ কণার বিস্তার বলা হয়। একে ‘a’ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
প্রশ্ন-১১. কম্পাঙ্ক কাকে বলে?
উত্তর : প্রতি সেকেন্ডে যতগুলো পূর্ণ তরঙ্গ সৃষ্টি হয় তাকে তরঙ্গের কম্পাঙ্ক বলে।
প্রশ্ন-১২. কম্পাঙ্কের একক কি?
উত্তর : কম্পাঙ্কের একক হার্জ (Hz)।
প্রশ্ন-১৩. পর্যায়কাল কাকে বলে?
উত্তর : একটি পূর্ণ দোলন সম্পন্ন করতে কোনো কম্পমান বস্তুর যে সময় লাগে তাকে তার পর্যায়কাল বা দোলনকাল বলে।
প্রশ্ন-১৪. তাপ তরঙ্গ কি?
উত্তর : তাপ তরঙ্গ হচ্ছে এক প্রকার তরঙ্গ যা কোন মাধ্যম ছাড়াই বিকিরণের মাধ্যমে উষ্ণ স্থান হতে শীতল স্থানে সঞ্চালিত হয়।
প্রশ্ন-১৫. তরঙ্গের দ্রুতি কাকে বলে?
উত্তর : একক সময়ে তরঙ্গ যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে তরঙ্গের দ্রুতি বলে।
প্রশ্ন-১৬. তরঙ্গ মুখ কাকে বলে?
উত্তর : সুসংগত উৎস হতে উৎপন্ন কোনো তরঙ্গের সঞ্চারণের অভিমুখে যে রেখা বা তল বরাবর সবগুলো কণা সমদশাসম্পন্ন তাকে ঐ তরঙ্গের তরঙ্গ মুখ বলে।
প্রশ্ন-১৭. এক হার্জ (Hz) কাকে বলে?
উত্তর : তরঙ্গ সঞ্চালনকারী কোনো কণার এক সেকেন্ডে একটি পূর্ণ কম্পন সম্পন্ন করাকে এক হার্জ (Hz) বলে। 1Hz = 1sec-1।
প্রশ্ন-১৮. লম্বিক তরঙ্গ কি?
উত্তর : অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গকে লম্বিক তরঙ্গ বলা হয়। অর্থাৎ যে তরঙ্গ কম্পনের দিকের সাথে সমান্তরালভাবে অগ্রসর হয় তাকে লম্বিক তরঙ্গ বা অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ বলে। যেমন, বায়ু মাধ্যমে শব্দের তরঙ্গ।
প্রশ্ন-১৯. স্প্রিং ধ্রুবক কাকে বলে?
উত্তর : স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে একটি স্প্রিং-এর দৈর্ঘ্য একক পরিমাণ বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ বল প্রয়োগ করতে হয় বা দৈর্ঘ্য একক পরিমাণ বৃদ্ধি করলে যে প্রত্যাবর্তী বল সৃষ্টি হয় তাকে ঐ স্প্রিং-এর স্প্রিং ধ্রুবক বলে।
প্রশ্ন-২০. এক বেল কাকে বলে?
উত্তর : প্রমাণ তীব্রতা থেকে 10 গুণ তীব্রতা সম্পন্ন কোনো শব্দের তীব্রতা লেভেলকে 1 Bel বলে।
প্রশ্ন-২১. মুক্ত কম্পন কাকে বলে?
উত্তর : যেকোনো আকার, গঠন বা আকৃতির বস্তুকে আন্দোলিত করলে তা একটি নিজস্ব কম্পাঙ্ক রক্ষা করে স্পন্দিত হয়। এই স্পন্দনকে মুক্ত কম্পন বলে।
প্রশ্ন-২২. অনুনাদ বলে কাকে বলে?
উত্তর : কোনো বস্তুর নিজস্ব কম্পাঙ্ক আর তার ওপর আরোপিত পর্যাবৃত্ত স্পন্দনের কম্পাঙ্ক সমান হলে বস্তুটি সর্বোচ্চ বিস্তার সহকারে কম্পিত হতে থাকে। এ ধরনের কম্পনকে অনুনাদ বলে।
প্রশ্ন-২৩. সরল দোলগতি কাকে বলে?
উত্তর : স্পন্দনরত কোনো বস্তুকণার গতি যদি এমন হয় যে, এর যেকোনো মুহুর্তের ত্বরণ, সাম্যাবস্থান হতে সরণের সমানুপাতিক কিন্তু বিপরীতমুখী হয়, তবে ঐ বস্তুকণার গতিকে সরল ছন্দিত গতি বলে।
প্রশ্ন-২৫. আড় কম্পন ও লম্বিক কম্পন কাকে বলে?
উত্তর : বস্তুর কম্পন যদি তরঙ্গ প্রবাহের অভিমুখের সমকোণ হয়, তবে একে আড় কম্পন বলে। আর বস্তুর কম্পন তরঙ্গ প্রবাহের অভিমুখের সমান্তরাল হলে তাকে লম্বিক কম্পন বলে।
প্রশ্ন-২৬. পানির ঢেউ অনুপ্রস্থ তরঙ্গ কেন?
উত্তর : পানির ঢেউ অনুপ্রস্থ তরঙ্গ কারণ এই তরঙ্গ পানির কণার স্পন্দনের দিকের সাথে সমকোণে অগ্রসর হয় এবং তরঙ্গে পর্যায়ক্রমে তরঙ্গশীর্ষ ও তরঙ্গপাদ থাকে।
প্রশ্ন-২৭. দশা পার্থক্য বলতে কি বুঝায়?
উত্তর : দশা পার্থক্য বলতে কোনো সময়ের ব্যাপ্তি বা কোণ বুঝায় যা দ্বারা একটি তরঙ্গ আরেকটি তরঙ্গকে লিড বা ল্যাগ করে।
প্রশ্ন-২৮. তরঙ্গস্থিত কোনো বিন্দুর দশা বলতে কি বুঝায়?
উত্তর : কোনো একটি তরঙ্গায়িত কণার যেকোনো মুহুর্তের গতির সামগ্রিক অবস্থা প্রকাশক রাশিকে তার দশা বলে। গতির সামগ্রিক অবস্থা বলতে গতির দিক, সরণ, বেগ, ত্বরণ ইত্যাদি বুঝায়। অনুপ্রস্থ তরঙ্গের ঊর্ধ্বচূড়াসমূহ বা নিম্নচূড়াসমূহ সর্বদা একই দশায় থাকে।
প্রশ্ন-২৯. কোন তরঙ্গের কম্পাঙ্ক 1000Hz বলতে কি বুঝায়?
উত্তর : কোন তরঙ্গের কম্পাঙ্ক 1000Hz বলতে বুঝায় যে, তরঙ্গ সঞ্চারণকারী কণাটি 1s-এ 1000টি পূর্ণ স্পন্দন সম্পন্ন করে।
প্রশ্ন-৩০. শব্দের কম্পাঙ্কের ব্যবহার লিখ।
উত্তর : শব্দের কম্পাঙ্কের ব্যবহার নিচে তুলে ধরা হলোঃ
১. কম্পনের মাধ্যমে কম্পকের ময়লা পরিষ্কার করা যায়।
২. রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কম্পনের ব্যবহার হয়।
৩. চিকিৎসা ক্ষেত্র কম্পনের ব্যবহার হয়।
৪. ধাতব পাত্রের ফাটল অনুসন্ধানেও কম্পনের ব্যবহার হয়।