Islamic
1 min read

সূরা আশ-শামস (Surah Ash Shams)। সূরা আশ শামস এর ব্যাখ্যা ও শিক্ষা।

সূরা আশ-শামস একটি মাক্কি সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ১৫টি। এ সূরার প্রথম শব্দ শামস থেকে এর নামকরণ করা হয়েছে আশ-শামস। এটি আল-কুরআনের ৯১ তম সূরা।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

সূরা আশ-শামস আরবি উচ্চারণ :

১)  وَٱلشَّمْسِ وَضُحَىٰهَا

২)  وَٱلْقَمَرِ إِذَا تَلَىٰهَا

৩)  وَٱلنَّهَارِ إِذَا جَلَّىٰهَا

৪)  وَٱلَّيْلِ إِذَا يَغْشَىٰهَا

৫)  وَٱلسَّمَآءِ وَمَا بَنَىٰهَا

৬)  وَٱلْأَرْضِ وَمَا طَحَىٰهَا

৭)  وَنَفْسٍ وَمَا سَوَّىٰهَا

৮)  فَأَلْهَمَهَا فُجُورَهَا وَتَقْوَىٰهَا

৯)  قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّىٰهَا

১০) وَقَدْ خَابَ مَن دَسَّىٰهَا

১১) كَذَّبَتْ ثَمُودُ بِطَغْوَىٰهَآ

১২) إِذِ ٱنۢبَعَثَ أَشْقَىٰهَا

১৩) فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ ٱللَّهِ نَاقَةَ ٱللَّهِ وَسُقْيَٰهَا

১৪) فَكَذَّبُوهُ فَعَقَرُوهَا فَدَمْدَمَ عَلَيْهِمْ رَبُّهُم بِذَنۢبِهِمْ فَسَوَّىٰهَا

১৫) وَلَا يَخَافُ عُقْبَٰهَا

সূরা আশ-শামস আরবি বাংলা উচ্চারণ :

১) ওয়াশ শামছি ওয়াদু হা-হা-।

২) ওয়াল কামারি ইযা-তালা-হা-।

৩) ওয়ান্নাহা-রি ইযা জাল্লা-হা-।

৪) ওয়াল্লাইলি ইযা-ইয়াগশা-হা-।

৫) ওয়াছ ছামাই ওয়ামা-বানা-হা-।

৬) ওয়াল আরদিওয়ামা-তাহা-হা-।

৭) ওয়া নাফছিওঁ ওয়া মা-ছাওওয়া-হা-।

৮) ফাআলহামাহা-ফুজূরাহা-ওয়া তাকওয়া-হা-।

৯) কাদ আফলাহা মান ঝাক্কা-হা-।

১০) ওয়া কাদ খা-বা মান দাছ ছা-হা-।

১১) কাযযাবাত ছামূদুবিতাগওয়া-হা।

১২) ইযিম বা‘আছা আশকা-হা-।

১৩) ফাকা-লা লাহুম রাছূলুল্লা-হি না-কাতাল্লা-হি ওয়া ছুকইয়া-হা-।

১৪) ফাকাযযাবূহু ফা‘আকারূহা- ফাদামদামা ‘আলাইহিম রাব্বুহুম বিযামবিহিম ফাছাওওয়াহা-।

১৫) ওয়ালা-ইয়াখা-ফু‘উকবা-হা-।

 

 

সূরা আশ-শামস বাংলা অর্থ :

১) শপথ সূর্যের ও তার কিরণের,

২) শপথ চন্দ্রের যখন তা সূর্যের পশ্চাতে আসে,

৩) শপথ দিবসের যখন সে সূর্যকে প্রখরভাবে প্রকাশ করে,

৪) শপথ রাত্রির যখন সে সূর্যকে আচ্ছাদিত করে,

৫) শপথ আকাশের এবং যিনি তা নির্মাণ করেছেন, তাঁর।

৬) শপথ পৃথিবীর এবং যিনি তা বিস্তৃত করেছেন, তাঁর,

৭) শপথ প্রাণের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন, তাঁর,

৮) অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন,

৯) যে নিজেকে শুদ্ধ করে, সেই সফলকাম হয়।

১০) এবং যে নিজেকে কলুষিত করে, সে ব্যর্থ মনোরথ হয়।

১১) সামুদ সম্প্রদায় অবাধ্যতা বশতঃ মিথ্যারোপ করেছিল।

১২) যখন তাদের সর্বাধিক হতভাগ্য ব্যক্তি তৎপর হয়ে উঠেছিল।

১৩) অতঃপর আল্লাহর রসূল তাদেরকে বলেছিলেনঃ আল্লাহর উষ্ট্রী ও তাকে পানি পান করানোর ব্যাপারে সতর্ক থাক।

১৪) অতঃপর ওরা তার প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল এবং উষ্ট্রীর পা কর্তন করেছিল। তাদের পাপের কারণে তাদের পালনকর্তা তাদের উপর ধ্বংস নাযিল করে একাকার করে দিলেন।

১৫) আল্লাহ তা’আলা এই ধ্বংসের কোন বিরূপ পরিণতির আশংকা করেন না।

ব্যাখ্যা

সূরা আশ-শামস-এ বর্ণিত আয়াতসমূহ তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম ভাগ হলো সূরার প্রথম সাত আয়াত। এ আয়াতসমূহে আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর কতিপর সৃষ্টবস্তু, এদের অবস্থা ও এদের স্রষ্টা সম্পর্কে শপথ করেছেন। মানুষের শপথ করেছেন। এসব জিনিসের শপথ করার দ্বারা আল্লাহ তায়ালা পরবর্তী আয়াতগুলোতে বর্ণিত বিষয়ের তাগিদ করেছেন। সূরার দ্বিতীয় ভাগে আল্লাহ তায়ালা মানুষের অবস্থা বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তাকে সৎকর্ম ও অসৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। এতদসত্ত্বেও যে ব্যক্তি নিজেকে পাপের দ্বারা কলুষিত করে তার জন্য ধ্বংস অনিবার্য। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি নিজেকে পরিশুদ্ধ করে, সৎকর্ম করে তার জন্য রয়েছে সফলতা।

সূরার শেষভাগে আল্লাহ তায়ালা ছামুদ সম্প্রদায়ের উদাহরণের মাধ্যমে মানুষের ব্যর্থতার বিষয়টি বর্ণনা করেছেন। ছামুদ সম্প্রদায় ছিল খুবই উন্নত-সমৃদ্ধ একটি জাতি। কিন্তু তারা আল্লাহর প্রেরিত রাসুলকে অবিশ্বাস করে এবং তাঁর নির্দেশ অমান্য করে। তাদের এ অবাধ্যতার জন্য আল্লাহ তায়ালা তাদের শাস্তি প্রদান করেন এবং তাদের ধ্বংস করে দেন।

শিক্ষা

 

  • আল্লাহ তায়ালাই আসমান, জমিন ও মানুষের স্রষ্টা।
  • তিনিই সূর্য, চন্দ্র, রাত, দিনের আবর্তন ঘটান।
  • তিনিই মানুষের ভালো-মন্দ, সৎকর্ম-অসৎকর্মের জ্ঞান দান করেন।
  • যে ব্যক্তি সৎকর্ম করবে সে সার্বিক সফলতা লাভ করবে।
  • আর যে ব্যক্তি নিজেকে পাপ পংকিলতায় জড়িয়ে ফেলবে সে ব্যর্থ ও ধ্বংস হবে।
  • আমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহের মধ্যে যারা অবাধ্য ছিল আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতেই তাদের শাস্তি প্রদান করেন। বস্তুত আল্লাহ তায়ালার শাস্তি অত্যন্ত কঠোর।

 

সুতরাং আমরা আল্লাহ তায়ালার শাস্তি সম্পর্কে সচেতন থাকব। তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলব। সৎ ও পুণ্যকর্মের মাধ্যমে আমরা নিজেদের পূত-পবিত্র রাখব। তাহলেই আমরা ইহকালীন ও পরকালীন সফলতা লাভ করতে পারব।

Rate this post