যে দর্পণের প্রতিফলক পৃষ্ঠ সমতল এবং তাতে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে, তাকে সমতল দর্পণ (Plane mirror) বলে। যেমন : নিজের চেহারা দেখার জন্য যে আয়না ব্যবহার করা হয়, তা একটি সমতল দর্পণ।
সমতল দর্পণের বৈশিষ্ট্য
সমতল দর্পণের বৈশিষ্ট্যগুলো নিচে দেওয়া হলো–
- সমতল দর্পণের প্রতিফলক পৃষ্ঠটি মসৃণ ও সমতল হয়।
- সমতল দর্পণে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে।
- দর্পণ থেকে বস্তুর দূরত্ব যত, দর্পণ থেকে বিম্বের দূরত্বও তত।
- সমতল দর্পণে সৃষ্ট বিম্ব অসদ ও সোজা হয়।
- সমতল দর্পণে বিম্বের পার্শ্ব পরিবর্তন ঘটে।
- সমতল দর্পণে বিম্বের আকার বস্তুর আকারের সমান হয়।
- বস্তু ও বিম্ব যে সরলরেখায় অবস্থিত, সেটি দর্পণকে লম্বভাবে ছেদ করে।
- সমতল দর্পণে একগুচ্ছ সমান্তরাল আলোকরশ্মি আপতিত হলে প্রতিফলনের পর অপসারী গুচ্ছে পরিণত হয়।
সমতল দর্পণের ব্যবহার
সমতল দর্পণের ব্যবহার নিচে দেওয়া হলো–
- সমতল দর্পণের সাহায্যে আমরা আমাদের চেহারা দেখি।
- সমতল দর্পণ ব্যবহার করে পেরিস্কোপ তৈরি করা হয়।
- পাহাড়ি রাস্তার বাঁকে দুর্ঘটনা এড়াতে এটি ব্যবহার করা হয়।
- বিভিন্ন আলোকীয় যন্ত্রপাতি যেমন– টেলিস্কোপ, ওভারহেড প্রজেক্টর, লেজার তৈরি করতে সমতল দর্পণ ব্যবহার করা হয়।
- নাটক, চলচ্চিত্র ইত্যাদির সুটিং এর সময় সমতল দর্পণ দিয়ে আলো প্রতিফলিত করে কোনো স্থানের ঔজ্জ্বল্য বাড়ানো হয়।
- চোখের ডাক্তারগণ রোগীর দৃষ্টি শক্তি পরীক্ষা করার জন্য বর্ণমালা পাঠের সুবিধার্থে সমতল দর্পণ ব্যবহার করে থাকেন।
ভিউ মিরর হিসেবে সমতল দর্পণ ব্যবহার করা হয় না কেন?
গাড়ির ড্রাইভাররা গাড়ি চালানোর সময় সব সময় পেছনে কি হচ্ছে সেটা দেখার জন্য ভিউ মিরর ব্যবহার করেন। ভিউ মিরর এমনভাবে তৈরি করা থাকে যাতে ছোট একটি আয়না দিয়ে গাড়ির পেছনের বড় একটা জায়গা দেখতে পারেন। এক্ষেত্রে ভিউ মিররে উত্তল দর্পণ ব্যবহার করা হয়। অপরদিকে সমতল দর্পণ লক্ষবস্তুর সমান আকারের বিম্ব গঠন করে। এটি ভিউ মিরর হিসেবে ব্যবহার করলে ছোট দর্পণ দিলে বড় একটা জায়গা দেখা যায় না। তাই ভিউ মিররে এটি ব্যবহৃত হয় না।