তাপগতিবিদ্যা সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১. তাপগতিবিদ্যা কাকে বলে?উত্তর : পদার্থবিজ্ঞানের যে শাখায় তাপের সাথে শক্তি ও কাজের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে তাপগতিবিদ্যা (Thermodynamics) বলে। তাপগতিবিদ্যার মূলনীতিগুলি বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের সমস্ত শাখায় মৌলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন-২. থার্মোমিটার (Thermometer) কাকে বলে?

উত্তর : যে যন্ত্রের সাহায্যে কোনো বস্তুর তাপমাত্রা সঠিকভাবে পরিমাপ করা যায় এবং বিভিন্ন বস্তুর তাপমাত্রার পার্থক্য নির্ণয় করা যায় তাকে থার্মোমিটার বলে।

প্রশ্ন-৩. তাপগতিবিদ্যার শূন্যতম সূত্রটি লিখ।

উত্তর : দুটি বস্তু যদি তৃতীয় কোনো বস্তুর সাথে তাপীয় সাম্যাবস্থায় থাকে তবে প্রথমোক্ত বস্তু দুটি পরস্পরের সাথে তাপীয় সাম্যাবস্থায় থাকবে। এটিই তাপগতিবিদ্যার শূন্যতম সূত্র নামে পরিচিত।

প্রশ্ন-৪. তাপমাত্রা কি?

উত্তর : তাপমাত্রা হচ্ছে কোনো বস্তুর তাপীয় অবস্থা যা অন্য কোনো বস্তুর তাপীয় সংস্পর্শে আনলে ঐ বস্তু তাপ গ্রহণ করবে বা তাপ বর্জন করবে তা নির্ধারণ করে।

প্রশ্ন-৫. নিম্ন স্থির বিন্দু কাকে বলে?

উত্তর : যে তাপমাত্রায় প্রমাণ চাপে বিশুদ্ধ বরফ পানির সাথে সাম্যাবস্থায় থাকতে পারে অর্থাৎ যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ বরফ গলতে শুরু করে তাকে নিম্ন স্থির বিন্দু বলে।

প্রশ্ন-৬. ঊর্ধ্ব স্থির বিন্দু কাকে বলে?

উত্তর : যে তাপমাত্রায় প্রমাণ চাপে বিশুদ্ধ পানি জলীয় বাষ্পের সাথে সাম্যাবস্থায় থাকতে পারে বা যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ পানি জলীয় বাষ্পে পরিণত হতে শুরু করে তাকে ঊর্ধ্ব স্থির বিন্দু বলে।

প্রশ্ন-৭. মৌলিক ব্যবধান কি?

উত্তর : ঊর্ধ্ব স্থির বিন্দু ও নিম্ন স্থির বিন্দুর মধ্যবর্তী তাপমাত্রার ব্যবধানকে মৌলিক ব্যবধান বলে।

প্রশ্ন-৮. পানির ত্রৈধ বিন্দু কাকে বলে?

উত্তর : যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে পানি তিন অবস্থাতেই অর্থাৎ বরফ, পানি এবং জলীয় বাষ্পরূপে অবস্থান করে তাকে পানির ত্রৈধ বিন্দু বলে। এই ত্রৈধবিন্দুর তাপমাত্রা 273 K ধরা হয়।

প্রশ্ন-৯. বরফ বিন্দু কাকে বলে?

উত্তর : প্রমাণ চাপে যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ বরফ গলে পানি হয় অথবা বিশুদ্ধ পানি জমে বরফ হয় তাকে বরফ বিন্দু বলে।

প্রশ্ন-১১. উন্মুক্ত সিস্টেম কাকে বলে?

উত্তর : যে সিস্টেম পরিবেশের সাথে ভর ও শক্তি উভয়ই বিনিময় করতে পারে তাকে উন্মুক্ত সিস্টেম বলে।

প্রশ্ন-১২. বদ্ধ সিস্টেম কাকে বলে?

উত্তর : যে সিস্টেম পরিবেশের সাথে শুধু শক্তি বিনিময় করতে পারে ভর বিনিময় করতে পারে না তাকে বদ্ধ সিস্টেম বলে।

 

প্রশ্ন-১৩. বিচ্ছিন্ন সিস্টেম কাকে বলে?

উত্তর : যে সিস্টেম পরিবেশ দ্বারা মোটেই প্রভাবিত হয় না অর্থাৎ পরিবেশের সাথে ভর বা শক্তি কোনো কিছুই বিনিময় করে না তাকে বিচ্ছিন্ন সিস্টেম বলে।

প্রশ্ন-১৪. তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রটি লিখ।
উত্তর : যান্ত্রিক শক্তি তথা কাজকে তাপে বা তাপশক্তিকে কাজে তথা যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা হলে যান্ত্রিক শক্তি ও তাপ পরস্পরের সমানুপাতিক হবে।

প্রশ্ন-১৫. সমচাপ প্রক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর : যে তাপগতীয় প্রক্রিয়ায় সিস্টেমের চাপের কোনো পরিবর্তন হয় না তাকে সমচাপ প্রক্রিয়া বলে।

প্রশ্ন-১৬. সমোষ্ণ প্রক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর : যে তাপগতীয় প্রক্রিয়ায় সিস্টেমের তাপমাত্রা স্থির থাকে তাকে সমোষ্ণ প্রক্রিয়া বলে। সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় dQ = dW।

প্রশ্ন-১৭. রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর : যে তাপগতীয় প্রক্রিয়ায় সিস্টেম থেকে তাপ বাইরে যায় না বা বাইরে থেকে তাপ সিস্টেমে আসে না তাকে রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া বলে। রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় dQ = 0, ফলে dW = – dU

প্রশ্ন-১৮. প্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর : যে প্রক্রিয়া বিপরীতমুখী হয়ে প্রত্যাবর্তন করে এবং সম্মুখবর্তী ও বিপরীতমুখী প্রক্রিয়ার প্রতি স্তরে তাপ ও কাজের ফলাফল সমান ও বিপরীত হয়, সে প্রক্রিয়াকে প্রত্যাবর্তী বা প্রত্যাগামী প্রক্রিয়া বলে।

প্রশ্ন-১৯. অপ্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর : যে প্রক্রিয়া বিপরীতমুখী হয়ে প্রত্যাবর্তন করতে পারে না অর্থাৎ সম্মুখবর্তী ও বিপরীতমুখী প্রতি ধাপে তাপ ও কাজের ফলাফল সমান ও বিপরীত হয় না, তাকে অপ্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়া বলে।

প্রশ্ন-২০. তাপ ইঞ্জিনের দক্ষতা কাকে বলে?

উত্তর : কোনো তাপ ইঞ্জিন দ্বারা কাজে রূপান্তরিত তাপশক্তির পরিমাণ এবং ইঞ্জিন দ্বারা শোষিত তাপশক্তির পরিমাণের অনুপাতকে তাপ ইঞ্জিনের দক্ষতা বলে।

প্রশ্ন-২১. তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র বিবৃত করো।

উত্তর : বাইরের শক্তির সাহায্য ছাড়া কোনো স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের পক্ষে নিম্ন উষ্ণতার বস্তু থেকে উচ্চতর উষ্ণতার বস্তুতে তাপের স্থানান্তর সম্ভব নয়।

প্রশ্ন-২২. পারদ থার্মোমিটার কি?

উত্তর : যে থার্মোমিটারে পারদ ব্যবহার করে তাপমাত্রা মাপা হয় তাই হলো পারদ থার্মোমিটার।

প্রশ্ন-২৩. তাপ ইঞ্জিন কাকে বলে?

উত্তর : যে যন্ত্রের সাহায্যে তাপশক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তর করা যায় তাকে তাপ ইঞ্জিন বলে।

প্রশ্ন-২৪. নির্দেশক চিত্র কি?

উত্তর : বৈজ্ঞানিক জেমস্ ওয়াট (James Watt) চিত্রের সাহায্যে তাপ ইঞ্জিনের সম্পাদিত কার্যকে বর্ণনা করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তিনি নির্দেশক নামে এমন একটি যন্ত্রের উদ্ভাবন করেন যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাপের সাপেক্ষে আয়তন পরিবর্তনের প্রতীক চিত্র অঙ্কন করে। প্রকৃত ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে অঙ্কিত এই চিত্রকেই নির্দেশক চিত্র বলে। কোন কার্যনির্বাহক বস্তুর চাপ P ও আয়তন V এর পরিবর্তন যে লেখচিত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা হয় তাকে নির্দেশক চিত্র বলে।

প্রশ্ন-২৫. তাপীয় মৃত্যু কাকে বলে?

উত্তর : জগতের এনট্রপি যখন সর্বোচ্চে পৌঁছাবে, তখন সব কিছুর তাপমাত্রা সমান হয়ে যাবে। ফলে তাপশক্তিকে আর যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা যাবে না। এই অবস্থাকে জগতের তাপীয় মৃত্যু বলে।

প্রশ্ন-২৬. সমোষ্ণ লেখ কাকে বলে?

উত্তর : নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোন গ্যাসের আয়তনকে অনুভূমিক অক্ষ এবং চাপকে উল্লম্ব অক্ষ ধরে লেখচিত্র অংকন করলে একটি আয়তাকার অধিবৃত্ত পাওয়া যায়। এই লেখকে সমোষ্ণ লেখ বলে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *