আইন ই আকবরী কি | আইন-ই-আকবরীর সংক্ষিপ্ত বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর

আইন ই আকবরীর উপর টীকা লিখ

ভূমিকা : ভারতের ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাষায় রচিত অনেক ঐতিহাসিক গ্রন্থ রয়েছে। ঠিক তেমনি আইন-ই-আকবরী একটি গ্রন্থ। এ গ্রন্থটি সম্রাট আকবরের জীবন ও তার ধর্ম নিয়ে লেখা এ গ্রন্থ আকবরের শাসন পরিচালনার বর্ণনাও আছে।

ঐতিহাসিক গ্রন্থ হিসেবে আইন-ই-আকবরী সবার কাছে সমাদৃত । এটা মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে রচিত হয় । এ গ্রন্থ রচনা করেন প্রখ্যাত ঐতিহাসিক আবুল ফজল ।

 আইন-ই-আকবরী : মহামতি আকবরের জীবন কাহিনি নিয়ে এ গ্রন্থ রচনা করা হয়। এ গ্রন্থ তার শাসন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত বিষয়ও তুলে ধরা হয়। নিম্নে এ গ্রন্থ সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরা হলো:

১. আইন-ই-আকবরীর রচয়িতা : এ বিখ্যাত গ্রন্থের রচয়িতা হলেন সুসাহিত্যিক, সুফি, সুপণ্ডিত ঐতিহাসিক ও আকবরের নবরত্নের অন্যতম রত্ন আবুল ফজল।

তিনি আকবরের ঘনিষ্টতম লোক ছিলেন। তিনি দ্বীন-ই-ইলাহীর প্রবর্তনেও আকবরকে সাহায্য করেছিলেন । তিনি ছিলেন তৎকালীন জনপ্রিয় ব্যক্তি ও ঐতিহাসিক ।

২. গ্রন্থখানির বিষয়বস্তু : আইন-ই-আকবরীতে আকবরের তথা সমগ্র মুঘল আমলের প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং অন্যান্য তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।

সাম্রাজ্যের বিভিন্ন প্রদেশের পরিসংখ্যান এবং প্রাক মুঘল যুগের বংশানুক্রমিক ইতিহাস লিপিবদ্ধ রয়েছে। তাছাড়াও ত্রিপুরার রাজা গনেশের রাজত্ব, সমগ্র ভারতের অনেক খুটিনাটি কাহিনি পরিবেশিত হয়েছে।

৩. আইন-ই-আকবরীর বৈশিষ্ট্য : এ গ্রন্থের বৈশিষ্ট্যগুলো নিচে আলোচনা করা হলো :

(i) এ গ্রন্থে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালের বর্ণনা খুব সুন্দরভাবে পাওয়া যায়।

(ii) সম্রাট আকবর সম্পর্কে ইতিহাস রচনায় এ গ্রন্থের উপর নির্ভর করতেই হবে।

(iii) এটি ফার্সি ভাষায় রচিত।

(iv) আইন-ই-আকবরী ৫টি ভাগে বিভক্ত।

(v) এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক গ্রন্থ।

৪. আইন-ই-আকবরীর গুরুত্ব : এ গ্রন্থটি হলো একটি অসামান্য গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক গ্রন্থ। ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস রচনায় এ গ্রন্থ একটি বড় উৎস হিসেবে কাজ করে।

বিশেষ করে সম্রাট আকবরের জীবনী, শাসনব্যবস্থা, রাজ্য পরিচালনার ক্রমান্বয়ে বর্ণনা এ গ্রন্থে পাওয়া যায়। তাই বলা যায় যে, আইন-ই-আকবরী একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ।

৫. আইন-ই-আকবরীর সম্পাদনা ও অনুবাদ : আইন-ই- আকবরীর মূল গ্রন্থখানি এইচ ব্লকম্যান কর্তৃক সম্পাদিত হয়েছে এবং তা বর্তমানে কলকাতার “বিবিল ওথেকা ইস্তিকা” লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত রয়েছে। পরবর্তীতে ব্লকম্যান ও এইচ.এম. গ্যারেট গ্রন্থটি ইংরেজিতে তিন খণ্ডে অনুবাদ করেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আকবরের সুহৃদ আবুল ফজল রচিত আইন-ই-আকবরী গ্রন্থখানি তৎকালীন সমাজের নিপুণ চিত্র তুলে ধরেছে। আধুনিক ঐতিহাসিকদের জন্য এটা একটা অমূল্য সম্পদ।

মধ্যযুগের ভারতের ইতিহাস চর্চায় এ গ্রন্থ অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করে। এবং তৎকালীন ভারতীয় ইতিহাস এ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে তাই এই গ্রন্থটি ইতিহাসবাদীদের নিকট সম্পদে পরিণত হয়েছে।

শেষ কথা:

আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “আইন ই আকবরী কি | আইন-ই-আকবরীর সংক্ষিপ্ত বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর ” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।

Similar Posts