বৈরাম খান কে ছিলেন । বৈরাম খানের পরিচয় দাও | আকবরের অভিভাবক হিসেবে বৈরাম খানের অবস্থান লিখ।
আকবরের অভিভাবক হিসেবে বৈরাম খানের অবস্থান লিখ।
মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাসের সাথে বৈরাম খানের নাম বিশেষভাবে জড়িত। তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের বিশ্বস্ত অনুচর ছিলেন।
সম্রাট আকবর যখন দিল্লির সিংহাসনে বসেন তখন বৈরাম খান সম্রাট আকবরের অভিভাবক হিসেবে তিনিই মূলত মুঘল সাম্রাজ্য পরিচালনা করেন। তার দক্ষ পরিচালনায় মুঘল সাম্রাজ্য ভারতবর্ষে বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার পথ প্রশস্ত হয়।
অভিভাবক হিসেবে বৈরাম খান :
১. বৈরাম খানের পরিচয় : বৈরাম খান বাদখশানের অধিবাসী ছিলেন। তিনি সম্রাট হুমায়ূনের বন্ধু ও বিশ্বস্ত অনুচর ছিলেন। তিনি ১৫৪০ সালে কনৌজের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে শেরশাহের নিকট বন্দি হন।
কিন্তু তিনি কৌশলে সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হন। তিনি পুনরায় রাজ্য বিতাড়িত- হুমায়ূনের সাথে যোগ দেন। এক কথায় বলা চলে তার বিচক্ষণতা ও সাহসিকতায় হুমায়ূন সিংহাসন ফিরে পায়।
২. আকবরের অভিভাবক বৈরাম খান : সম্রাট হুমায়ূনের খুবই বিশ্বস্ত ও বন্ধু ছিলেন। সুতরাং সম্রাট হুমায়ূন বেঁচে থাকতেই বৈরাম খান আকবরের অভিভাবক হন। সম্রাট হুমায়ূন দুর্ঘটনায় মারা গেলে বৈরাম খান প্রকৃতপক্ষে আকবরের উপর ছায়ার মতো ছিলেন ।
৩. সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার : সম্রাট হুমায়ূন যখন মারা যান, তখন সম্রাট আকবর খুবই ছোট। ফলে বৈরাম খানকেই মূলত সাম্রাজ্য পরিচালনার দায়িত্ব নিতে হয়। এ অবস্থায় আফগানরা আবার মুঘল সাম্রাজ্য আক্রমণ করেন।
পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে হিমুর সাথে বৈরাম খানের যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে মূলত বৈরাম খানের কাছেই হিমুর পরাজয় ঘটে।
এরপর বৈরাম খান মূলত মুঘল সাম্রাজ্যের সর্বেসর্বা হয়ে উঠেন এবং মুঘল সাম্রাজ্যকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেন। ঐ সময়ে বৈরাম খান না থাকলে মুঘল সাম্রাজ্য তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারতো কিনা সন্দেহ আছে।
৪. সাম্রাজ্য বিস্তার : আকবরের অভিভাবক হিসেবে বৈরাম খান শুধুমাত্র মুঘল সাম্রাজ্যকে বিপদের হাত থেকে রক্ষাই করেননি, বরং তিনি সাম্রাজ্য বিস্তারেও তার পারদর্শিতা দেখান।
তাঁর দক্ষ পরিচালনায় আফগান শক্তি বিধ্বস্ত হয়। তিনি গোয়ালিয়র, জৌনপুর, আজমীর দখল করেন। তার নেতৃত্বে মুঘল সাম্রাজ্য তার নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি সাম্রাজ্য বিস্তার লাভ করে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বৈরাম খান মূলত মুঘল সাম্রাজ্যকে বিপদের হাত থেকে বাঁচান। পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধের পর বৈরাম খানের ক্ষমতা বেড়ে যায়।
এতে সম্রাটের মাতা ভীত হয়ে পড়েন। ফলে সম্রাটের মাতা, ধাত্রীমাতা বৈরাম খানের বিরুদ্ধে সম্রাটের নিকট অভিযোগ দেয় এবং ষড়যন্ত্র করতে থাকে। অবশেষে ১৫৬০ সালে বৈরাম খানের পতন ঘটে
শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “বৈরাম খান কে ছিলেন । বৈরাম খানের পরিচয় দাও | আকবরের অভিভাবক হিসেবে বৈরাম খানের অবস্থান লিখ।” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।