কাইরাল শব্দটি এবং ধারণাটি(Concept) অনেক পুরাতন। কাইরাল কার্বন বলতে আমরা সহজভাবে বুঝি, কার্বনের সাথে চারটি ভিন্ন গ্রুপ (বা পরমাণু) যুক্ত আছে। অণুতে কাইরাল কার্বন থাকলে সেটি দুটি এনানসসিওমার(enantiomer) রূপে থাকতে পারে। এনানসিওমার হলো আইসোমার যুগল, যাদের ভৌত ধর্ম (গলনাংক, স্ফুটনাংক ইত্যাদি) একই, তবে রসায়নিক ধর্ম ভিন্ন (ক্ষেত্র বিশেষে)। এনানসিওমারদ্বয় একে অপরের প্রতিবিম্ব(mirror image)।
রসায়ন যখন ক্রমশ বিকশিত হতে শুরু করলো, তখন আমরা জানতে শিখলাম, অণুতে কাইরাল কার্বন না থাকলেও সেটি এনানসিওমার রূপে থাকতে পারে। সেটা কী করে হয়, তা বিস্তর এবং গভীর আলোচনা। তবে সহজ বিষয়টা হলো, একটি অণুকে বিবেচনা করতে হয় প্রতিসাম্যতার দৃষ্টিকোণ থেকে। প্রকৃতির সকল অণু, হয় প্রতিসাম্য, না হয় অপ্রতিসাম্য। প্রতিসম অণু মানে হলো, সে অণুর মধ্য দিয়ে একটি তল বিবেচনা করা যায়, যেটি অণুতে সম দুটি অংশে পৃথক করতে পারে (সহজ সংজ্ঞা)। আর অপ্রতিসম হলো বিপরীত বিষয়।
একটি অণু যদি অপ্রতিসম(asymmetric) হয়, তাহলে সে অণু এনানসিওমার রূপে থাকতে পারে। অণুতে কাইরাল কার্বন থাকাটা আবশ্যক নয়। আধুনিক রসায়নে তাই, কাইরাল কার্বন শব্দটির পরিবর্তে অপ্রতিসম কার্বন (asymmetric carbon) শব্দটি অনেক ব্যবহৃত হয়। তাই এই ধারণাটির সাথে আমাদের পরিচয় থাকতে হবে। কাইরাল কার্বন শব্দটি এখনো ব্যবহার হয়। তবে সে শব্দটির পাশাপাশি অপ্রতিসম কার্বন বা অপ্রতিসম অণু শব্দগুলোর ব্যবহার বাড়াতে হবে। কারণ, অপ্রতিসম কার্বন বা অপ্রতিসম অণু শব্দগুলো দিয়ে অনেক বিস্তৃতভাবে একটি বিষয় বুঝানো হয়।
কাইরাল কার্বন যুক্ত সকল অণুই অপ্রতিসম অণু, সকল অপ্রতিসম অণুতে কাইরাল কার্বন থাকা আবশ্যক নয়। একটি উৎকৃষ্ট উহাদরণ হলো, এলিন যৌগ। এলিন যৌগে কোন কাইরাল কার্বন থাকে না তবে সেগুলো অপ্রতিসম হতে পারে। তাই যৌগ, দুটি এনানসিও আইসোমার(Enantioisomer or enantiomer) রূপে থাকে।