Digital Device জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
বুলিয়ান অ্যালজেবরা (Boolean Algebra) কী?
জর্জ বুলি সত্য এবং মিথ্যা এ দুটি স্তরের উপর ভিত্তি করে গনিতের যে নতুন শাখা উম্মচোন করেছেন তাকে বুলিয়ান অ্যালজেবরা বলে। বুলিয়ান অ্যালজেবরা সত্য ও মিথ্যাকে বাইনারির ১ এবং ০ দ্বারা পরিবর্তন করে কম্পিউটারের সমস্ত গাণিতিক সমস্যার সমাধান বুলিয়ান অ্যালজেবরার সাহায্যে করা সম্ভব হয়।
Note: জর্জ বুলি (George Boole)১৮৫৪ সালে বুলিয়ান অ্যালজেবরা আবিষ্কার করেন।
বুলিয়ান চলক কি?
বুলিয়ান-বীজগনিতে যে সকল রাশির মান সময়ের সাথে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে তাকে বুলিয়ান চলক বলে। যেমন- A একটি বুলিয়ান চলক হলে এই চলকের মান শুধুমাত্র সত্য (1) এবং মিথ্যা (0) হতে পারে।
বুলিয়ান পূরক কি?
বুলিয়ান অ্যালজেবরায় কোন চলকের মান শুধুমাত্র 1 এবং 0 হতে পারে। এই 0 এবং 1 কে একে অপরের পরিপূরক বলা হয়। 0 এর পূরক 1 এবং 1 এর পূরক 0
বুলিয়ান স্বতঃসিদ্ধ কী?
বুলিয় বীজগণিতে শুধু যোগ আর গুনের মাধ্যমে সকল অঙ্ক সমাধান করা হয়ে থাকে। বুলিয়ান বীজগণিতে যোগ ও গুনের ক্ষেত্রে কতকগুলো বিশেষ নিয়ম মেনে চলে। এই বিশেষ নিয়ম গুলোকে বুলিয়ান স্বতঃসিদ্ধ বলে।
বুলিয়ান দ্বৈতনীতি (Boolean Duality Principle) কী?
বুলিয়ান অ্যালজেবরায় ব্যবহৃত সকল উপপাদ্য বা সমীকরণ যে দুইটি নিয়ম মেনে একটি বৈধ সমীকরণ থেকে অন্য একটি বৈধ সমীকরণ নির্ণয় করা যায় তাকে বুলিয়ান দ্বৈত নীতি বলে। বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যে সকল উপপাদ্য অর (OR) আর অ্যান্ড (AND) এবং 0 ও 1 এর সাথে সম্পর্কযুক্ত সে সকল উপপাদ্য বা সমীকরণ দ্বৈত নীতি মেনে চলে। এই নিয়ম দুইটি হলো
১. 0 এবং 1 পরস্পর বিনিময় করে অর্থাৎ 0 এর পরিবর্তে 1 এবং 1 এর পরিবর্তে 0 ব্যবহার করে।
২. অর (+) এবং অ্যান্ড (.) পরস্পর বিনিময় করে অর্থাৎ অর এর (+) পরিবর্তে অ্যান্ড (.) এবং অ্যান্ড এর (.) পরিবর্তে অর (+) ব্যবহার করে।
উদাহরণঃ 1 + 1 = 1 সমীকরণে 1-এর পরিবর্তে 0 এবং (+) এর পরিবর্তে (.) বসিয়ে পাই 0.0 = 0 এটিও একটি বৈধ সমীকরণ। আবার 0.0 = 0 সমীকরণে 0-এর পরিবর্তে 1 এবং (.)-এর পরিবর্তে (+) বসিয়ে পাই 1 + 1 =1 এটিও একটি বৈধ সমীকরণ।
লজিক গেইট (Logic gate) কী?
বুলিয়ান অ্যালজেবরার ব্যবহারিক প্রয়োগের জন্য যে অধুনিক বর্তনী ব্যবহার করা হয় তাকে লজিক গেইট বলে। অন্য ভাবে বলা যায়, যে অধুনিক বর্তনীতে এক বা একাধিক ইনপুট দিয়ে একটি মাত্র আউটপুট পাওয়া যায় তাকে লজিক গেইট বলে।
লজিক গেইট ২ প্রকার।
১। মৌলিক লজিক গেইট (OR, AND, NOT)
২। যৌগিক লজিক গেইট (NOR, NAND, XOR, XNOR)
সত্যক সারণি (Truth table) কী?
যে সারণির মাধ্যমে বুলিয় বীজগণিতের বিভিন্ন ইনপুটের মানগুলোর জন্য সম্ভাব্য আউটপুট মান দেখানো হয় তাকে সত্যক সারণি বলে। সত্যক সারণিতে ইনপুট সংখ্যা n সংখ্যক হলে আউটপুট হবে 2n সংখ্যক।
অ্যাডার (Adder) কী?
কম্পিউটার সকল গাণিতিক সমস্যার সমাধান যোগের মাধ্যমে করে থাকে। কম্পিউটারে যোগের কাজ সম্পন্ন করার জন্য যে সমবায় সার্কিট (Combination Circuit) ব্যবহার করে থাকে তাকে অ্যাডার সার্কিট বলে।
Note: কম্পিউটারে সাধারনত ২ ধরনের অ্যাডার সার্কিট ব্যবহার হয়ে থাকে ।
১। Half Adder
২। Full Adder
এনকোডার (Encoder) কি?
এনকোডার হচ্ছে এমন এক ধরনের লজিক সার্কিট, যা আমাদের ভাষাকে কম্পিউটারের বোধগম্য যান্ত্রিক ভাষায় রূপান্তর করে। অন্যভাবে বলা যায় যে সমবায় সার্কিট আনকোডেড ডেটাকে কোডেড ডেটায় রূপান্তর করে তাকে এনকোডার বলে । এনকোডারে ইনপুটের সংখ্যা 2n হলে এর আউটপুট সংখ্যা হবে n এবং ইনপুট লাইনে যে কোনো একটি ইনপুট 1 হলে বাকী সব ইনপুট হবে 0 ।
ডিকোডার (Decoder) কী?
ডিকোডার এমন একটি লজিক সার্কিট, যা কোন কোড (Code)-কে ডিকোড (Decode) করতে পারে। ইহা এমন একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র বা ডিভাইস যা কম্পিউটারের বোধগম্য ভাষাকে মানুষের বোধগম্য ভাষায় রূপান্তর করে। ডিকোডার ইনপুটের সংখ্যা n হলে তার আউটপুট সংখ্যা = 2n হবে এবং আউটপুট লাইনে যে কোনো একটি আউটপুট 1 হলে বাকী সব আউটপুট 0 হবে।
ফ্লীপফ্লপ (Flip-Flop) কী?
ফ্লিপ-ফ্লপ লজিক গেইট দ্বারা তৈরি এক ধরনের ডিজিটাল বর্তনী যা একটি বাইনারি বিট (0 বা 1) সংরক্ষণ করতে পারে। ফ্লিপ-ফ্লপের ইনপুটে কোনো ডেটা দিলে আউটপুটে তা অনির্দিষ্টকাল ধরে সংরক্ষিত থাকে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ না করলে অথবা ট্রিগার প্রদান করা না হলে ইনপুটের ডেটা সরিয়ে নিলেও আউটপুট অপরিবর্তিত থাকে।
Note: ফ্লিপ-ফ্লপের আরেকটি নাম ল্যাচ (Latch)। ফ্লিপ ফ্লপের ডেটা ধারণ ক্ষমতার জন্যে একে কম্পিউটার মেমোরির মূল উপাদান বলা হয়। প্রতিটি ফ্লিপ-ফ্লপে দুটি আউটপুট থাকে এবং এক বা একাধিক ইনপুট থাকে। আউটপুট দুটি সব সময়ই একটি হাই (ON) এবং অপরটি লো (OFF) অবস্থায় থাকে।
সর্বজনীন গেইট (Universal Gate) কী?
যে সকল গেইট দ্বারা মৌলিক গেইট সহ সকল প্রকার গেইট বাস্তবায়ন বা তাদের মতো কাজ করা যায়, সে সকল গেইটকে সর্বজনীন গেইট বলা হয়। NOR ও NAND গেইটকে সর্বজনীন গেইট বলা হয়।
রেজিস্টার (Register) কী?
রেজিস্টার (Resister) হলো একগুচ্ছ ফ্লিপ-ফ্লপ এবং লজিক গেইটের সমন্বয়ে গঠিত অস্থায়ী মেমোরি ডিভাইস যা একটি বাইনারী তথ্য সংরক্ষন করে রাখতে পারে। রেজিস্টারে ব্যবহৃত প্রতিটি ফিল্প-ফ্লপ একটি করে বাইনারি বিট ধারণ করতে পারে। n বিটের একটি বাইনারি তথ্য ধারণের জন্য n সংখ্যক ফ্লিপ-ফ্লপ বিশিষ্ট একটি রেজিস্টার প্রয়োজন হয়। রেজিস্টার মেমোরি ডিভাইস হিসেবে সিপিইউ এর ভিতরে থাকে এবং প্রসেসিং এর সময় অস্থায়ীভাবে ডেটা সঞ্চিত রাখে। রেজিস্টার সাধারনত ৮-বিট, ১৬- বিট, ৩২-বিটের হয়ে থাকে।
গঠন অনুসারে রেজিস্টার ২ ধরণের। যথা-
১. বাফার বা প্যারালাল লোড রেজিস্টার
২. শিফট রেজিস্টার (Shift Resister)
কাজের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে রেজিস্টার বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে যেমন-
১। অ্যাকুমুলেটর রেজিস্টার ২। সাধারণ রেজিস্টার ৩। বিশেষ রেজিস্টার
কাউন্টার (Counter) কী?
কাউন্টার হচ্ছে এক প্রকার সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট যা তাতে প্রদানকৃত ইনপুট পালসের সংখ্যা গুণতে পারে । কাউন্টার যেকোনো নাম্বার সিকোয়েন্স যেমন- 1, 2, 3, 4 বা 2, 4, 6 বা অন্য কোনো নাম্বার গণনা করতে পারে। বাইনারি কাউন্টার শুধু বাইনারি গুনতে পারে। একটি কাউন্টার কত থেকে কত গুণতে পারে তা নির্ভর করে তার ডিজাইনের উপর। একটি n বিট বাইনারি কাউন্টার 0 থেকে 2n– 1 পর্যন্ত গুণতে পারে।
Note: কাউন্টার সাধারনত ২ প্রকার হয়ে থাকে। ১. সিনক্লোনাস (Synchronous) কাউন্টার ২. অ্যাসিনক্রোনাস (Asynchronous) কাউন্টার
BCD কাউন্টার যার সর্বাধিক স্টেট দশটি। কাউন্টার তৈরি করতে JK ফ্লিপ-ফ্লপ বেশি ব্যবহৃত হয়। T ফ্লিপ-ফ্লপ ব্যবহার করেও কাউন্টার তৈরি করা যায়।
সিনক্রোনাস (Synchronous) কাউন্টার কাকে বলে?
যে কাউন্টারে একটি মাত্র ক্লক পালস ব্যবহার করে কাউন্টারে ব্যবহৃত সবগুলো ফ্লিপ- ফ্লপ এর অবস্থার (State) পরিবর্তন ঘটানো যায় তাকে synchronous কাউন্টার বলে।
Note: রিং কাউন্টার, MOD-10 কাউন্টার ইত্যাদি।
অ্যাসিনক্রোনাস (Asynchronous) কাউন্টার কাকে বলে?
যে কাউন্টারে একটি ফ্লিপ-ফ্লপ এর output অন্য একটি ফ্লিপ-ফ্লপে ক্লক পালস হিসেবে ব্যবহৃত হয় তাকে Asynchronous কাউন্টার বলে।
Note: রিপল কাউন্টার (Ripple Counter)
মোড নাম্বার (Mode Number) কী?
একটি কাউন্টার সর্বাধিক যতগুলো সংখ্যা গুণতে পারে তাকে ঐ কাউন্টারের মডিউলাস (modulus) বা মোড নাম্বার বলে। কাউন্টারের মোড নম্বরকে কাউন্টার পালস ও বলা হয়।
Note: একটি n বিটের কাউন্টার 0 থেকে 2n-1 পর্যন্ত গুণতে পারে এবং এর মোড নম্বর হয় 2n
ক্লক পালস (Clock Pulse) কী?
ক্লক পালস হলো এক ধরনের সিগনাল বা ভোল্টেজের উপস্থিতি যা একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে একই অবস্থায় থাকে এবং পরবর্তীতে আবার নির্দিষ্ট সময় ধরে বিপরীত অবস্থায় থাকে। বর্তমানে ডিজিটাল ডিভাইসকে সিনক্রোনাইজ করতে ক্লক পালস ব্যবহার করা হয়।