ন্যায্যতা কি আল্লাহ্‌র সত্তাগত গুণ; নাকি কর্মগত গুণ?

প্রশ্ন:

আল্লাহ্‌ তাআলার ন্যায্যতা গুণ কি সত্তাগত; নাকি কর্মগত? বিস্তারিত চাই।

 

উত্তর: আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

আল্লাহ্‌র ন্যায্যতা গুণ সাব্যস্ত হওয়া

আল্লাহ্‌ তাআলা ন্যায্যতা (عدل)-এর গুণে গুণান্বিত হওয়া সাব্যস্ত। যেমনটি সহিহ বুখারী (৩১৫০) ও সহিহ মুসলিমে (১০৬২) আব্দুল্লাহ্‌ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে ঐ ব্যক্তির প্রসঙ্গে যেই ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বণ্টনের উপর আপত্তি তুলেছিল; তিনি বলেন: যদি আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূল ন্যায় না করেন তাহলে আর কে ন্যায় করবে।

এবং তার কথাকে ন্যায্যতার গুণে গুণান্বিত করাও সাব্যস্ত হয়েছে। যেমনটি তিনি বলেছেন: আপনার প্রভুর বাণী সত্য ও ন্যায়ে পরিপূণ।[সূরা আনআম ৬:১১৫]

ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন:

তাঁর গুণসমূহের মধ্যে রয়েছে ন্যায্যতা তাঁর কর্মে, কথায় ও মিযানের বিচারে।

এই গুণের অর্থবোধক গুণ মুয়ায (রাঃ) থেকে উদ্ধৃত হয়েছে যে, তিনি যখন কোন যিকিরের মজলিসে বসতেন তখনি বলতেন: আল্লাহ্‌ ন্যায়পরায়ন বিচারক; সন্দেহকারীরা ধ্বংস হোক…।[সুনানে আবু দাউদ (৪৬১১), মুয়ায (রাঃ) এর মাওকূফ হাদিস, আলবানী সহিহ বলেছেন]

আওনুল মাবুদে এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে: “অর্থাৎ ন্যায়পরায়ন বিচারক।”

দুই:

ন্যায্যতা সত্তাগত গুণ

ন্যায্যতা সত্তাগত গুণ। সত্তাগত গুণ চেনার নীতি হল: যে গুণে তিনি পূর্বে গুণান্বিত ছিলেন এবং এখনও গুণান্বিত আছেন। সুতরাং অনাদি ও অনন্তকাল ব্যাপী তিনি ন্যায়বান (عَدْل) ও সুবিচারক (مُقْسِط) এবং ন্যায্যতা ও সুবিচারের গুণসম্পন্ন (ذو العَدْل والقِسْط)।

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন:

“সত্তাগত গুণাবলী: যে ভাবগুলো আল্লাহ্‌র জন্য অনাদি ও অনন্তকাল ব্যাপী সাব্যস্ত; যেমন- জীবন, জ্ঞান, ক্ষমতা, শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, পরাক্রমশালিতা ও প্রজ্ঞা ইত্যাদি অনেক গুণ। এ গুণগুলোকে আমরা সত্তাগত গুণ বলে থাকি। যেহেতু তিনি এসব গুণে অনাদি ও অনন্তকাল ব্যাপী গুণান্বিত। এগুলো তাঁর সত্তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয় না।”[শারহুস সাফ্যারিনিয়্যাহ (পৃষ্ঠা-১৫৫) থেকে সমাপ্ত]

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

 

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

Similar Posts