বৃত্ত কি? | বৃত্তের পরিধি, জ্যা, ও কোণসমূহ

বৃত্ত কি?

সমতলস্থ কোনাে নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট দূরত্বে ঘূর্ণায়মান কোনাে বিন্দুর সঞ্চার পথকে বৃত্ত বলা হয়। চিত্রে O বিন্দুকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট দূরত্বে ঘূর্ণায়মান কোনাে বিন্দুর সঞ্চারপথ ABC একটি বৃত্ত।
বৃত্তের কেন্দ্র ও ব্যাসার্ধ:
 
নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট দূরত্বে ঘূর্ণায়মান কোনাে বিন্দুর সঞ্চারপথকে বৃত্ত বলা হয়, ঐ নির্দিষ্ট বিন্দুকে বৃত্তের কেন্দ্র বলা হয় এবং ঐ বিন্দু থেকে চলমান বিন্দুর লম্ব দূরত্বকে বৃত্তের ব্যাসার্ধ বলা হয়। অর্থাৎ বৃত্তের কেন্দ্র ও বৃত্তস্থ যেকোনাে বিন্দুর সংযােজক রেখাংশই বৃত্তের ব্যাসার্ধ। ব্যাখ্যা : চিত্রে ABC বৃত্তের কেন্দ্র 0 এবং OA বৃত্তের ব্যাসার্ধ।

বৃত্তের পরিধি:

বৃত্ত এক বিশেষ ধরনের বক্ররেখা। এই বক্ররেখার দৈর্ঘ্যকে পরিধি বলা হয়।ব্যাখ্যা : চিত্রে A বিন্দু থেকে যাত্রা শুরু করে ABC পথ ঘুরে আবার A বিন্দুতে আসতে যে দূরত্ব অতিক্রম হয়, তাই ABC বৃত্তের পরিধি।
কোন বৃত্তের ব্যাসার্ধ r হলে,
বৃত্তের পরিধি c = 2πr । যেখানে π এর মান 3.1416।
বৃত্তের ব্যাসার্ধ r একক হলে, তা দ্বারা সীমাবদ্ধ বৃত্তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = πr² বর্গ একক।

বৃত্তের জ্যা:

বৃত্তের পরিধিস্থ দুইটি ভিন্ন বিন্দুর সংযােজক রেখাংশকে বৃত্তটির একটি জ্যা বলা হয়। ব্যাখ্যা : চিত্রে AB, O কেন্দ্রবিশিষ্ট বৃত্তের একটি জ্যা।
ব্যাস : বৃত্তের কেন্দ্রগামী জ্যা কে ব্যাস বলা হয়। অর্থাৎ বৃত্তস্থ দুইটি বিন্দুর সংযােজক রেখাংশ, যা ঐ বৃত্তের কেন্দ্রগামী, তাকে ঐ বৃত্তের ব্যাস বলা হয়। ব্যাখ্যা : চিত্রে AC, O কেন্দ্রবিশিষ্ট বৃত্তের একটি ব্যাস। ব্যাসই বৃত্তের বৃহত্তম জ্যা।

বৃত্তের চাপ:

বৃত্তের পরিধিস্থ যেকোনাে দুইটি বিন্দুর দূরত্বকে চাপ বলে। এক কথায় বৃত্তের পরিধির যেকোনাে অংশকে চাপ বলে। চিত্রে ABD বৃত্তের পরিধির AB অংশ, BD অংশ, AD অংশ ইত্যাদি প্রত্যেকেই চাপ।
বি.দ্র. : বৃত্তের জ্যা বৃত্তকে দুই চাপে বিভক্ত করে। যেমন : O কেন্দ্রবিশিষ্ট ABC বৃত্তে AB জ্যা বৃত্তকে AB চাপ ও ACB চাপে বিভক্ত করেছে। আবার, বৃত্তের পরিধিস্থ যে কোনাে দুইটি বিন্দুর সংযােজক রেখাই জ্যা।
জেনে রাখা ভালাে
বৃত্তের কেন্দ্র ও ব্যাস ভিন্ন কোনাে জ্যা এর মধ্যবিন্দুর সংযােজক রেখাংশ ঐ জ্যা এর ওপর লম্ব। বিপরীতক্রমে বৃত্তের কেন্দ্র থেকে ব্যাস ভিন্ন অন্য কোনাে জ্যা এর উপর অঙ্কিত লম্ব ঐ জ্যাকে সমদ্বিখণ্ডিত করে। চিত্র ব্যাখ্যা : O কেন্দ্রবিশিষ্ট AB ব্যাস নয় এমন জ্যা।
  • E, AB জ্যা-এর মধ্যবিন্দু হলে, OE 1 AB বিপরীতক্রমে
  • OE লম্ব AB হলে, AE = BE অর্থাৎ, E, AB-এর মধ্যবিন্দু।
জ্যা এর মান যত বড় হবে ততই সেটি কেন্দ্রের নিকটে অবস্থান করবে। অর্থাৎ বৃহত্তর জ্যা ক্ষুদ্রতর জ্যা অপেক্ষা কেন্দ্রের নিকটতর।
বৃত্তের অভ্যন্তর ও বহির্ভাগ
যদি কোনাে বৃত্তের কেন্দ্র ০ এবং ব্যাসার্ধ r হয় তবে ০ থেকে সমতলের যে সকল বিন্দুর দূরত্ব r থেকে কম তাদের সেটকে বৃত্তটির অভ্যন্তর এবং O থেকে সমতলের যে সকল বিন্দুর দূরত্ব r থেকে বেশি তাদের সেটকে বৃত্তটির বহির্ভাগ বলা হয়। বৃত্তের অভ্যন্তরস্থ দুইটি বিন্দুর সংযােজক রেখাংশ সম্পূর্ণভাবে বৃত্তের অভ্যন্তরেই থাকে।
কোনাে বৃত্তের অভ্যন্তরস্থ একটি বিন্দু ও বহিঃস্থ একটি বিন্দুর সংযােজক রেখাংশ বৃত্তটিকে একটি ও কেবল একটি বিন্দুতে ছেদ করে। চিত্রে, P বৃত্তের অভ্যন্তরস্থ একটি বিন্দু এবং Q বৃত্তের Q বহিঃস্থ একটি বিন্দু। PQ রেখাংশ বৃত্তটিকে কেবল R বিন্দুতে ছেদ করে।

বৃত্তস্থ কোণ:

একটি কোণের শীর্ষবিন্দু কোন বৃত্তের একটি বিন্দু হলে এবং কোণটির প্রত্যেক বাহুতে শীর্ষবিন্দু ছাড়াও বৃত্তের একটি বিন্দু থাকলে কোণটিকে একটি বৃত্তস্থ কোণ বা বৃত্তে অন্তর্লিখিত কোণ বলা হয়। চিত্র ব্যাখ্যা : চিত্রে ACB এর শীর্ষবিন্দু C এবং কোণটির বাহু দুইটিতে বৃত্তের দুইটি বিন্দু  A ও B অবস্থিত। সুতরাং ACB একটি বৃত্তস্থ কোণ।
কেন্দ্রস্থ কোণ:
একটি কোণের শীর্ষবিন্দু কোন বৃত্তের কেন্দ্রে অবস্থিত হলে কোণটিকে ঐ বৃত্তের একটি কেন্দ্রস্থ কোণ বলা হয়। সচিত্র ব্যাখ্যা : চিত্রে AOB একটি কেন্দ্রস্থ কোণ কারণ কোণটির শীর্ষবিন্দু বৃত্তের কেন্দ্র O তে অবস্থিত। কেন্দ্রস্থ AOB, ADB চাপের উপর দন্ডায়মান।
বৃত্তের বিভিন্ন অংশের সংজ্ঞা, azhar bd academy

Similar Posts