পাবলিক পলিসি কি? সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য ও প্রক্রিয়া

পাবলিক পলিসি প্রতিটি ব্যক্তির জীবনে একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। সরকার জনগণের কল্যাণে নীতি প্রণয়ন করে। সাধারণত, নীতি নির্ধারকেরা কোন একটি সমস্যার প্রতিক্রিয়া হিসাবে পাবলিক পলিসি তৈরি করে এবং সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার কী করবে তা নির্ধারণ করে। নিম্মে পাবলিক পলিসির কি? এর সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য ও পলিসি প্রণয়নের ধাপসমূহ আলোচনা করা হল।

পাবলিক পলিসি কি?

পাবলিক পলিসি বা জননীতি বলতে জনকল্যাণ ও জনগণের সেবা নিশ্চিত করে এমন কতিপয় নিয়ম-নীতি যা সরকার কর্তৃক গৃহীত ও বাস্তবায়িত হয়।
অর্থাৎ, পাবলিক পলিসি হচ্ছে সরকার কর্তৃক প্রণীত এমন কিছু সিদ্ধান্ত যা জনগণের বৃহৎ কল্যাণের জন্য প্রণয়ন করা হয় এবং যা সামাজিক সমস্যা সমাধানে প্রধান ভূমিকা পালন করে।
পাবলিক পলিসি হল জনগণের কল্যাণে কাজ করার জন্য সরকার কর্তৃক গৃহীত আইন, নির্দেশিকা এবং পদক্ষেপের একটি সেট।
টমাস ডাই (Thomas Dye) এর মতে, – “সরকার যা কিছু করতে বা না করতে বেছে নেয় তা হল পাবলিক পলিসি”।
সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য, জনগণের কল্যাণে নীতি নির্ধারণ করা। সাধারণত, নীতি নির্ধারকেরা কোন একটি সমস্যার প্রতিক্রিয়া হিসাবে পাবলিক পলিসি তৈরি করে এবং সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার কী করবে তা নির্ধারণ করে।

পাবলিক পলিসি তৈরির প্রক্রিয়া

পাবলিক পলিসি তৈরির ৬টি ধাপ বা প্রক্রিয়া রয়েছে। যেমন সমস্যা সনাক্তকরণ, এজেন্ডা সেটিং, প্রণয়ন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বাস্তবায়ন এবং মূল্যায়ন।
১. সমস্যা সনাক্তকরণ: প্রথম পর্যায়ে, জনসাধারণকে প্রভাবিত করে এমন একটি সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়।
২. এজেন্ডা সেটিং: এই পর্যায়ে, সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কিছু বিষয়সূচি নির্ধারণ করা হয়।
এজেন্ডা সেটিং সাধারণত কয়েকটি পর্যায়ে হয়:
  • পদ্ধতিগত এজেন্ডা: সরকারী কর্মকর্তারা মনে করেন যে, সমস্ত সমস্যা সমাধানের উপযুক্ত।
  • প্রাতিষ্ঠানিক এজেন্ডা: পদ্ধতিগত এজেন্ডা তালিকা থেকে নেওয়া বিষয়গুলিকে নীতিনির্ধারকদের বিশ্লেষণ এবং বিবেচনা করা উচিত হিসাবে বেছে নেওয়া হয়।
  • বিবেচনামূলক এজেন্ডা: এই তালিকাটি সরাসরি আইন প্রণেতাদের কাছ থেকে আসে।
  • সিদ্ধান্তের এজেন্ডা: নীতিনির্ধারকরা পদক্ষেপের জন্য বিবেচনা করবেন এমন সমস্যার চূড়ান্ত তালিকা।
৩. নীতি প্রণয়ন: এই পদক্ষেপে কর্মকর্তারা অসম্ভাব্য বিকল্পগুলো বাদ দিয়ে সম্ভাব্য নীতিগুলো তালিকা করে। নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রায়ই তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
৪. সিদ্ধান্ত গ্রহণ: এই ধাপে, সরকারী কর্মকরতারা একটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। এটি এমন একটি পর্যায় যা জনসাধারণের সমস্যার সমাধান করবে।
৫. নীতি বাস্তবায়ন: এই ধাপে, সরকার নির্বাচিত পাবলিক পলিসি সমূহ কার্যকর করে।
৬. নীতি মূল্যায়ন: পাবলিক পলিসি বাস্তবায়নের পর, সেগুলোর প্রভাব পর্যবেক্ষণ করে এবং নির্ধারণ করে যে এটি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করছে কিনা। যদি এটি তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়, তখন এটি আবারও সংশোধন করবে।