রসায়ন

ক্ষার ও ক্ষারকের পার্থক্য

1 min read
ক্ষার ও ক্ষারকের মধ্যে প্রধান পার্থক্য নির্ণয় করা হয় মূলত পানিতে দ্রবণীয় না-কি অদ্রবণীয় সেই ভিত্তিতে। কারণ সকল ক্ষারই মূলত ক্ষারক। ক্ষার পানিতে দ্রবীভূত হলেও ক্ষারক পানিতে দ্রবীভূত হয় না।
এই আর্টিকেলে, আমরা ক্ষার ও ক্ষারকের সংজ্ঞা, উদাহরণ এবং উভয়ের মধ্যে পার্থক্যসমূহ আলোচনা করব।

ক্ষার কি?

“ক্ষার” শব্দটি আরবি থেকে এসেছে, যার অর্থ ক্যালসিনযুক্ত ছাই। ক্ষার হল জলে দ্রবণীয় ক্ষারক। যে সকল ক্ষারক পানিতে সম্পূর্ণভাবে দ্রবীভূত হয়, তাদেরকে ক্ষার বলে।
অর্থাৎ, ক্ষার হল এমন যৌগ যা পানিতে হাইড্রক্সাইড আয়ন (OH-) তৈরি করে এবং এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে। ক্ষার লাল লিটমাস দ্রবণে নীল হয়ে যায় এবং এটি স্বাদে তিক্ত। একটি ক্ষার দ্রবণের pH 7-এর বেশি থাকে।
ক্ষারের কিছু উদাহরণ হল—সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড (NaOH) বা কস্টিক সোডা, পটাসিয়াম হাইড্রক্সাইড (KOH)বা কস্টিক পটাশ, ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সাইড Ca(OH)2 বা চুনের জল ইত্যাদি। তবে, এগুলো ক্ষার এবং ক্ষারক (উভয়)। কারণ এগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয় এবং এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ পানি উৎপন্ন করে।

ক্ষারক কি?

ক্ষারক এক শ্রেণির রাসায়নিক যৌগ যা হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করতে সক্ষম। অর্থাৎ, যে সকল যৌগ পানিতে হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH-) প্রদান করে, সে সকল যৌগকে ক্ষারক বলে। যেমন, Ca(OH)2 একটি ক্ষারক। কারণ, এটি জলীয় দ্রবণে হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH-) প্রদান করে। ক্ষারক স্বাদে তেতো এবং প্রকৃতিতে পিচ্ছিল।
ক্ষারকের উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড (NaOH), অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড Al(OH)₃, পটাসিয়াম হাইড্রোক্সাইড (KOH), সিলিকন ডাই অক্সাইড (SiO2), এবং লিথিয়াম হাইড্রোক্সাইড (LiOH)। এছাড়াও রয়েছে জিঙ্ক হাইড্রোক্সাইড Zn(OH)2 এবং কপার অক্সাইড (CuO)।

ক্ষার ও ক্ষারকের মধ্যে পার্থক্য

ক্ষার ও ক্ষারকের মধ্যে প্রধান পার্থক্যসমূহ নিম্মে বর্ণনা করা হল—

ক্ষার

ক্ষারক

১.

ক্ষার হল জলে দ্রবণীয় ক্ষারক।

ক্ষারক হলো মূলত ধাতব অক্সাইড বা হাইড্রোক্সাইড।

২.

সকল ক্ষারই ক্ষারক

কিন্তু সকল ক্ষারক ক্ষার নয়।

৩.

সকল ক্ষার পানিতে দ্রবীভূত হয়।

সকল ক্ষারক পানিতে দ্রবীভূত হয় না।

৪.

ক্ষার পানিতে হাইড্রোক্সিল আয়ন (OH–) উৎপন্ন করে।

সকল ক্ষারক পানিতে হাইড্রোক্সিল আয়ন (OH–) উৎপন্ন করে না।

৫.

ক্ষার এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।

ক্ষারকও এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।

৬.

ক্ষারের কিছু উদাহরণ হল— সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড (NaOH), পটাসিয়াম হাইড্রোক্সাইড (KOH), ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড Ca(OH)2 ইত্যাদি।

ক্ষারকের কিছু উদাহরণ হল—জিঙ্ক হাইড্রোক্সাইড Zn(OH)2, কপার অক্সাইড(CuO), সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড (NaOH), অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড Al(OH)₃ ইত্যাদি।

5/5 - (4 votes)
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x