ইলেকট্রিসিটির মৌলিক উপাদান হল ভোল্টেজ, কারেন্ট এবং রেজিস্ট্যান্স। পদার্থবিজ্ঞানে ওহমের সূত্র এই তিনটির মধ্যে একটি সরল সম্পর্ক দেখায়। এই আইনটি বিদ্যুতের সবচেয়ে মৌলিক আইনগুলোর মধ্যে একটি। এটি বৈদ্যুতিক সার্কিটের উপাদানের শক্তি, দক্ষতা, বিদ্যুত, ভোল্টেজ এবং রোধ নির্ণয় করতে সহায়তা করে।
ওহমের সূত্র মূলত বৈদ্যুতিক সার্কিটে ভোল্টেজ, কারেন্ট এবং রোধের মধ্যে সম্পর্ক গণনা করতে ব্যবহৃত হয়।
জার্মান পদার্থবিদ জর্জ সাইমন ওহম (1789-1854) কারেন্ট, ভোল্টেজ এবং রোধের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয়ে ওহমের সূত্র নামে একটি সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি ১৮২৬ সালে এটি প্রকাশ করেন।
ওহমের সূত্র
‘‘কোন পরিবাহির মধ্য দিয়ে স্থির তাপমাত্রায় প্রবাহিত কারেন্ট ঐ পরিবাহির দুপ্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক এবং রেজিস্ট্যান্সের বাস্তানুপাতিক।’’
ওহমের সূত্র মতে, কোন পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য V এবং প্রবাহিত কারেন্ট I হলে, V ∝ I
বা, V = IR এখানে, R = পরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স (সমানুপাতিক ধ্রুবক)
পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য দ্বিগুণ করা হলে, তবে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহ দ্বিগুণ হবে। আবার, যদি পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য এক-তৃতীয়াংশ করা হয়, তবে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহও এক-তৃতীয়াংশ হবে।
ধরা যাক, V একটি বিভব উৎস এবং R একটি রোধ যার মধ্য দিয়ে I পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহিত হচ্ছে। তাহলে ওহমের সূত্র অনুযায়ী V=IR
সূত্রটিকে নিম্নোক্তভাবে প্রকাশ করা যায়
I=V/R
এখানে,
V = পরিবাহীর দু’প্রান্তের বিভব পার্থক্য (voltage)
I = তড়িৎপ্রবাহ মাত্রা (current)
R = রোধ (resistance)
ওহমের সূত্রের সীমাবদ্ধতা
পদার্থবিজ্ঞানে ওহমের সূত্র ইলেকট্রিসিটির মৌলিক আইন হলেও এর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন,
- এই সূত্রটি ডায়োড, ট্রানজিস্টর বা সুপারকন্ডাক্টরগুলোতে প্রয়োগ করা যায় না।
- ক্যাপাসিটাররের মতো নির্দিষ্ট বৈদ্যুতিক উপাদানগুলোর অরৈখিক প্রবাহে ওহমের আইন ব্যর্থ হয়।
- ওহমের সূত্র DC এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, AC এর ক্ষেত্রে নয়।
- তাপমাত্রা, চাপ ইত্যাদি পরিবর্তন হলে ওহমের সূত্র প্রযোজ্য নয়।
- ওহমের সূত্রের সাহায্যে জটিল সার্কিট সমূহ সমাধান করা যায় না।