সামাজিক ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, সাম্য ও সমতা শব্দটি দুটি শুনতে একই মনে হলেও, বাস্তবে এক না। ধারণাগতভাবে, ‘সাম্য (equity)’ এবং ‘সমতা (equality)’ একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
তদুপরি, সাম্য এবং সমতার মধ্যে পার্থক্য আমাদের সামাজিক ন্যায়বিচার, সামাজিক ন্যায্যতা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, জাতিগত ন্যায়বিচার এবং সামাজিক নিরাপত্তার ধারণা বুঝতে সাহায্য করে। নিম্মে সাম্য ও সমতার মধ্যে মৌলিক পার্থক্য উদাহরণসহ বর্ণনা করা হল।
সাম্য এবং সমতার পার্থক্য
১. সাম্য (equity) শব্দটি ন্যায্যতা এবং ন্যায়বিচার বোঝাতে ব্যবহার হয়। অন্যদিকে, সমতা (equality) শব্দটি সমান সুযোগ, সমান অ্যাক্সেস, সমান আচরণ, সমান ভাগাভাগি বোঝাতে ব্যবহার হয়।
২. সাম্য, ব্যক্তিগত চাহিদা এবং প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়। সুতরাং, এটি একটি প্রয়োজন-ভিত্তিক পদ্ধতি হিসাবেও পরিচিত। অপরদিকে, সমতা চাহিদা ও প্রয়োজনীতা নির্বিশেষে সকলের জন্য সমবন্টন নিশ্চিত করে।
৩. সাম্য = ন্যায্যতা এবং ন্যায়বিচার। বিপরীতে, সমতা = অভিন্নতা।
৪. সাম্যের মাধ্যমে লোকেদের যা প্রয়োজন তা দেওয়া হয়। অর্থাৎ যাদের বেশি প্রয়োজন তাদের বেশি এবং যাদের কম প্রয়োজন তাদের কম দেওয়া। অপরদিকে, সমতার মাধ্যমে সব মানুষকে তাদের চাহিদা ও প্রয়োজন নির্বিশেষে একই জিনিস দেয়।
৫. সাম্য, ইতিবাচক বৈষম্য সৃষ্টি করে। বিপরীতে, সমতা নেতিবাচক বৈষম্যের জন্ম দিতে পারে।
৬. সাম্য সামাজিক ন্যায়বিচার, জাতিগত ন্যায়বিচার এবং সামাজিক পরিবর্তনের উপর ফোকাস এবং জোর দেয়। অন্যদিকে, সমতা সামাজিক এবং জাতিগত ন্যায়বিচারের উপর ফোকাস করে না। বরং, এটি সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং সামাজিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত বাধা সৃষ্টি করে।
৭. সমতার মাধ্যমে সাম্য অর্জন করা যায় না। কিন্তু সাম্যের মাধ্যমে সমতা অর্জন করা যায়।
৮. সাম্য বিষয়ভিত্তিক, এটি পরিস্থিতি থেকে পরিস্থিতি এবং ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পৃথক হয়। অপরদিকে, সমতা পরিমাপযোগ্য, এটি পরিবর্তিত হয় না।
৯. সাম্য স্বতন্ত্র পার্থক্য এবং বৈচিত্র্যকে সম্মান করে। সমতা ব্যক্তিগত পার্থক্য এবং বৈচিত্র্যকে মূল্য দেয় না।
১০. সাম্যের উদাহরণ: কর্মচারীদের কাজের পারফরম্যান্স, দক্ষতা এবং বিশেষত্ব অনুসারে বেতন, সুবিধা এবং পুরষ্কার দেওয়া হয়। সমতার উদাহরণ: সকল কর্মচারীকে তাদের কাজের পারফরম্যান্সের পার্থক্য নির্বিশেষে একই বেতন, সুবিধা এবং পুরষ্কার প্রদান।