রাদারফোর্ড পরমাণু মডেল: স্বীকার্য ও সীমাবদ্ধতা

রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলের স্বীকার্যঃ
1911 খ্রিস্টাব্দে আলফা কণা (হিলিয়াম নিউক্লিয়াস) বিচ্ছুরণ পরীক্ষার সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে রাদারফোর্ড পরমাণুর গঠন সম্পর্কে একটি মডেল প্রদান করেন। তা নিম্নরূপ-
  • পরমাণুর কেন্দ্রস্থল একটি ধনাত্মক আধানবিশিষ্ট ভারী বস্তু বিদ্যমান। এই ভারী বস্তুকে পরমাণুর কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াস বলা হয়। পরমাণুর মোট আয়তনের তুলনায় নিউক্লিয়াসের আয়তন অতি নগণ্য। নিউক্লিয়াসে পরমাণুর সমস্ত ধনাত্মক আধান ও প্রায় সমস্ত ভর কেন্দ্রীভূত।
  • পরমাণু বিদ্যুৎ নিরপেক্ষ। অতএব, নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক আধানযুক্ত প্রোটন সংখ্যার সমান সংখ্যক ঋণাত্মক আধানযুক্ত ইলেকট্রন পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে পরিবেষ্টন করে রাখে।
  • সৌরজগতের সূর্যের চারদিকে ঘূর্ণায়মান গ্রহসমূহের মতো পরমাণুর ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসের চারদিকে অবিরাম ঘুরছে। ধনাত্মক আধানবিশিষ্ট নিউক্লিয়াস ও ঋণাত্মক আধান বিশিষ্ট ইলেকট্রনসমূহের পারস্পরিক স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণজনিত কেন্দ্রমুখী বল এবং ইলেকট্রনের কেন্দ্র-বর্হিমুখী বল পরস্পর সমান।
রাদারফোর্ড মডেল
রদারফোর্ড পরমাণু মডেলের সীমাবদ্ধতাঃ
  • সৌরমন্ডলের গ্রহসমূহ সামগ্রিকভাবে আধানহীন অথচ ইলেকট্রনসমূহ ঋণাত্মক আধানযুক্ত।
  • ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্বানুসারে কোনো আধানযুক্ত বস্তু বা কণা কোনো বৃত্তাকার পথে ঘুরতে থাকলে তা ক্রমাগত শক্তি বিকিরণ করবে এবং তার আবর্তনচক্র ধীরে ধীরে ছোট হতে থাকবে। সুতরাং ইলেকট্রনসমূহ ক্রমশ শক্তি হারাতে হারাতে নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করবে। অর্থাৎ রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল অনুসারে পরমাণু সম্পূর্ণভাবে একটি অস্থায়ী অবস্থা প্রাপ্ত হবে। অথচ পরমাণু হতে ক্রমাগত শক্তি বিকিরণ বা ইলেকট্রনের নিউক্লিয়াসে প্রবেশ কখনই ঘটে না।
  • পরমাণুর বর্ণালি গঠনের কোনো সুষ্ঠু ব্যাখ্যা এ মডেল দিতে পারে না।
  • আবর্তনশীল ইলেকট্রনের কক্ষপথের আকার ও আকৃতি সম্বন্ধে কোনো ধারণা রাদারফোর্ডের মডেলে দেয়া হয় নি।
  • একাধিক ইলেকট্রনবিশিষ্ট পরমাণুতে ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসকে কিভাবে পরিভ্রমণ করে তার কোনো উল্লেখ এ মডেলে নেই।