অভ্যন্তরীণ শক্তি কাকে বলে?
প্রত্যেক বস্তুর মধ্যে একটি অন্তর্নিহিত শক্তি রয়েছে, যা কার্য সম্পাদন করতে পারে এবং যা অন্য শক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে। বস্তুর অভ্যন্তরস্থ অণু, পরমাণু ও মৌলিক কণাসমূহের রৈখিক গতি, স্পন্দন গতি ও ঘূর্ণনগত এবং তাদের মধ্যকার বলের কারণে উদ্ভূত শক্তিকেই অভ্যন্তরীণ শক্তি বলে। অর্থাৎ একটি সিস্টেমের সম্ভাব্য সকল প্রকার শক্তির সমষ্টিকে উক্ত সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ শক্তি বলে।
অভ্যন্তরীণ শক্তির নির্ভরশীলতা
সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ গঠনের উপর এ শক্তি নির্ভরশীল। সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ গঠন অপরিবর্তিত থাকলে অন্তর্নিহিত থাকলে অন্তর্নিহিত শক্তি আয়তন (V), চাপ (P) এবং তাপমাত্রার (T) সাথে সাথে আরও কিছু ভৌত ধর্ম যেমন আপেক্ষিক তাপ, প্রসারণ-সহগ ইত্যাদির উপর অভ্যন্তরীণ শক্তি নির্ভরশীল।
কয়েকটি ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ শক্তির নির্ভরশীলতা দেওয়া হলো-
১) আদর্শ গ্যাসের অণুগুলোর তাপীয় গতিশক্তির মানই অভ্যন্তরীণ শক্তি। এ মান গ্যাসের তাপমাত্রা এবং অণুর সংখ্যার উপর নির্ভর করে। এর চাপ বা আয়তনের উপর নির্ভর করে না। একে মেয়ারের প্রকল্প বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, গ্যাস ভর্তি একটি সিলিন্ডারকে গাড়িতে কোনো স্থানে নেওয়ার সময় এর গতিশক্তি স্থির অবস্থানের চেয়ে বেশি হয়। কিন্তু সিলিন্ডারের সাপেক্ষে অণুর গতি এবং তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকে।
২) তরল পদার্থের ক্ষেত্রে অণুর গতিশক্তিই অভ্যন্তরীণ শক্তি।
৩) কঠিন পদার্থের ক্ষেত্রে অণুগুলোর স্থির অবস্থানের কম্পনের গতিশকিই অভ্যন্তরীণ শক্তি।
৪) কোনো গ্যাসের অভ্যন্তরীণ শক্তির পরিবর্তন শুধুমাত্র এর তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে, এর আয়তন বা চাপের উপর নির্ভর করে না।