আলোক তড়িৎ ক্রিয়া কাকে বলে?
কোনো ধাতব পৃষ্ঠের ওপর যথেষ্ট উচ্চ কম্পাঙ্কের আলোক রশ্মি বা অন্য কোনো তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গ আপতিত হলে উক্ত ধাতু থেকে ইলেকট্রন নিঃসৃত হয়। এ ঘটনাকে আলোক তড়িৎ ক্রিয়া বলে।
অথবা, যে ধাতব পদার্থের ওপর যথোপযুক্ত কম্পাঙ্কের দৃশ্যমান আলোক কিংবা অন্য কোনো বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ আপতিত হলে ঐ পদার্থ হতে ইলেকট্রন নির্গত হয়। এই ঘটনাকে আলোক তড়িৎ ক্রিয়া বা ফটো ইলেকট্রিক ইফেক্ট (Photo Electric Effect) বলে।
আলোক তড়িৎ ক্রিয়া কে আবিষ্কার করেন?
1887 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী হার্জ (Hertz) লক্ষ করেন যে, দুটি বিদ্যুৎদ্বারের মধ্যবর্তী ফাঁকে বা ঋণ বিদ্যুৎদ্বারে অতি বেগুনি রশ্মি আপতিত হলে এদের মধ্যে স্ফুলিঙ্গ চলতে থাকে। 1888 খ্রিস্টাব্দে হলওয়াচ এবং তার সঙ্গীরা গবেষণার সময় লক্ষ করেন যে অতি বেগুনি রশ্মি ধনাত্মক আধানযুক্ত পাতের ওপর আপতিত হলে তা দ্রুত অচার্জিত হয়ে পড়ে এবং ঋণাত্মক আধানযুক্ত পাতের ওপর আপতিত এই ক্রিয়া সংঘটিত হয়। 1899 খ্রিস্টাব্দে জে. জে. থমসন এবং 1900 খ্রিস্টাব্দে লিনার্ড প্রমাণ করেন যে, আলোকের প্রভাবে ধাতব পাত হতে নির্গত কণাগুলো ইলেকট্রন ছাড়া আর কিছুই নয়।
আলোক তড়িৎ ক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য
আলোক তড়িৎ ক্রিয়ার নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য রয়েছে –
১) আলোক তড়িৎ ক্রিয়া একটি তাৎক্ষণিক ঘটনা অর্থাৎ আলো আপতিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইলেকট্রন নির্গত হয়। আলোক রশ্মির আপতিত ও ইলেকট্রন নিঃসরণের মধ্যে সময়ের ব্যবধান 10 −9 s বা তারও কম।
২) প্রত্যেক ধাতু হতে আলোক ইলেকট্রন নির্গমনের জন্য আপতিত রশ্মির একটি ন্যূনতম কম্পাঙ্ক থাকে যার নাম প্রারম্ভ কম্পাঙ্ক।
৩) বিভিন্ন ধাতুর ক্ষেত্রে প্রারম্ভ কম্পাঙ্ক বিভিন্ন।
৪) আলোক ইলেকট্রনের বেগ কোনো নির্দিষ্ট শীর্ষ মানের মধ্যে হতে পারে।
৫) আলোক ইলেকট্রনের সর্বোচ্চ গতিবেগ আপতিত রশ্মির কম্পাঙ্কের সমানুপাতিক।
৬) আলোক ইলেকট্রন নির্গমনের হার আপতিত আলোকের প্রাবল্যের সমানুপাতিক।