ডায়েট
ডায়েট বলতে মূলত আমরা বুঝি নিয়মিত পরিমিত পরিমানে সুষম খাবার গ্রহন করা।
আর ডায়েট ফুড বলতে বুঝায় সেই সকল খাবার যা গ্রহন করে আমরা আমাদের সুস্বাস্হ্য রক্ষা করতে পারি। ডায়েট এ অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার বাছাই করতে হয়।
ডায়েট চলাকালীন অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমান প্রোটিন যুক্ত খাবার গ্রহন করতে হবে।
আমাদের অনেকের ধারণা থাকতে পারে প্রোটিন যুক্ত খাবার আমাদের ওজন কে বৃদ্ধি করে দেয়।
যা সম্পূর্ণ ভুল একটি ধারনা। ডায়েট চলাকালীন যথাসম্ভব কম পরিমান কার্বোহাইড্রেট গ্রহন করতে হবে।
বেশি পরিমান ফাইবার জাতীয় খাবার গ্রহন করতে হবে।
প্রয়োজনে কার্বোহাইড্রেট বর্জন করে শুধু মাত্র হাই প্রোটিন এবং ফাইবার জাতীয় খাবার গ্রহনের মাধ্যমে নিজের ওজন কে কন্ট্রোল করা সম্ভব।
কারন ফাইবার এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার অনেকক্ষন পেট ভরিয়ে রাখে।
ফলে খাবার গ্রহনের পরিমান কমে। তাছাড়া ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার আমাদের মেটাবলিজম রেট বাড়িয়ে দেয় এবং হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে।
কিছু উল্লেখযোগ্য ডায়েট ফুড যা গ্রহনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সুস্বাস্হ্য রক্ষা করতে পারি তা নিম্নরূপঃ
১. ডিমঃ
ডিম হলো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যা গ্রহনের মাধ্যমে অনেকক্ষন পেট ভরা থাকে।
ডিমে প্রোটিন ছাড়াও আরো কিছু উপকারী দিক আছে যা আমাদের স্বাস্হ্যের জন্য উপকারী।
২. সবুজ শাক- সবজিঃ
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ফাইবার,ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন।
ফাইবার ও প্রোটিনের মতো আমাদের পেট ভরিয়ে রাখে ফলে সহজেই শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট ঝড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
৩. মাছঃ
মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, প্রোটিন, মিনারেল, নানান ধরনের ভিটামিন যা আমাদের সুস্বাস্হ্যের জন্য উপকারী এবং নিয়মিত মাছ গ্রহনের ফলে আমাদের হার্ট এবং দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে।
তাছাড়া ডায়েট এ মাছ থাকলে তা আমাদের শরীরের আয়োডিন এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
ফলে থাইরয়েড ফাংশন এর উন্নতি ঘটে এবং মেটাবলিজম রেট বাড়ে।
৪. ব্রকলি, ফুলকপি, বাধাকপিঃ
এইসকল খাবারে প্রোটিন এবং ফাইবার একইসাথে পাওয়া যায়। ফলে ওজন কমাতে এর ভূমিকা অপরিসীম।
৫. সেদ্ধ আলুঃ
অনেকের ধারনা থাকতে পারে আলু মানেই ফ্যাট। ধারনা টি সম্পুর্ন ভুল বলা যাবে না।
কারন ভাজা আলু তে ফ্যাট বাড়লেও সেদ্ধ আলু তে তেমন ক্ষতি হয় না। কারণ এতে উপস্থিত পটাশিয়াম এবং resistant starch নানান ভাবে আমাদের মেদ কমাতে সাহায্য করে।
৬. মুরগির মাংসঃ
ডায়েট ফুডে মুরগির মাংস একটি উল্লেখযোগ্য খাবার। কারণ এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমান প্রোটিন ।
তাছাড়া NCBI এর মতে প্রোটিন খাওয়ার পরিমান ২৫ শতাংশ বাড়ালে খিদে পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬০ শতাংশ কমে যায়। তাই ডায়েট এ মাছ, মাংস রাখা অত্যন্ত জরুরি।
৭. ডালঃ
প্রতিদিন খাবারে এক বাটি ডাল রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ডালে রয়েছে প্রোটিন এবং ফাইবার। তাছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এবং মিনারেল যা আমাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় ভূমিকা পালন করে। ডাল এর সাথে কিছু পরিমান বিন্স ও রাখা যেতে পারে।
৮. বাদামঃ
বাদামে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার এবং গুড ফ্যাট। তাই আমাদের সুস্বাস্হ্য রক্ষায় পর্যাপ্ত পরিমান বাদাম খাওয়া জরুরি।
তবে বেশি পরিমানে গ্রহন করলে তা আমাদের শরীরে ফ্যাট এর পরিমান বাড়িয়ে দিতে পারে।
৯. আপেলঃ
ডায়েট ফুড হিসেবে আপেলের গুরুত্ব অপরিসীম। কারন আপেলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমান ফাইবার। তাইতো বলা হয়ে থাকে “প্রতিদিন একটি করে আপেল খান ডাক্তারের ঠিকানা ভুলে যান”
১০. টকদইঃ
দই এ উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া গুলো আমাদের হজম ক্ষমতা বাড়ালেও ওজন কমাতে সাহায্য করে। সেই সাথে আমাদের শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়াও আমাদের দৈনন্দিন ব্যাবহারের কিছু মসলা রয়েছে যা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। যেমনঃ জায়ফল, দারচিনি,তেজপাতা,লবঙ্গ, আদা, রসুন ইত্যাদি।
সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, সুস্বাস্হ্য রক্ষা করতে চাইলে অবশ্যই আমাদের কে একটি নির্দিষ্ট ডায়েট মেইনটেইন করে চলতে হবে এবং সুষম খাবার গ্রহন করতে হবে।
এবং আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর এমন খাবার কে প্রিহার করতে হবে। কোনপ্রকার অস্বাস্হ্যকর খাবার গ্রহন করে নিজেকে ঝুঁকিতে ফেলা যাবে না।