বাক্য কাকে বলে? কতো প্রকার ও কি কি
আজ আমরা জানবো বাক্য কাকে বলে ।
বাক্য কাকে বলে
এক বা একাধিক শব্দ বা পদ মিলিত হয়ে যদি পূর্ণরুপে মনের ভাব প্রকাশ করে তাহলে এই শব্দ বা পদ সমষ্টিকে বাক্য বলে। যেমনঃ সে স্কুলে পড়ে। আমরা খেলাধুলা করি ইত্যাদি।
বাক্যের প্রধান দুইটি অংশ থাকে
১. উদ্দেশ্য
বাক্যে যাকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলা হয় বা যার সম্পর্কে কিছু বলা হয় তাকে বাক্যের উদ্দেশ্য বলে।
যেমনঃ তুমি গতকাল ক্লাসে আসোনি। এখানে তুমি উদ্দেশ্য। নিঝুম সমুদ্রে যাবে। এখানে নিঝুম উদ্দেশ্য।
২. বিধেয়
বাক্যের যে অংশ উদ্দেশ্যকে নিয়ে আলোচনা করে তাকে বিধেয় বলে।
যেমনঃ নিঝুম সমুদ্রে যাবে। এখানে সমুদ্রে যাবে বিধেয়।
তারা বিদেশে যাত্রা করছে। এখানে বিদেশে যাত্রা করছে বিধেয়।
বাক্যের শ্রেণিবিভাগ
গঠন অনুসারে বাক্যকে তিনভাগে ভাগ করা যায়
১. সরল বাক্য
২. জটিল বাক্য
৩. যৌগিক বাক্য
১.সরল বাক্য
যে বাক্যে একটি উদ্দেশ্য (কর্তা) এবং একটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকে, তাকে সরলবাক্য বলে।
যেমনঃ আমরা কাল ক্লাসে যাবো।
২. জটিল বাক্য
যে বাক্যে একটি সরল বা স্বাধীন বাক্য থাকবে এবং এই বাক্যের উপর নির্ভরশীল আর একটি বাক্য থাকবে তাকে জটিলবাক্য বলে।
যেমনঃ তুমি আসলে, আমি চলে যাবো।
আমরা স্টেশনে নামার পর, ট্রেন ছাড়লো।
৩. যৌগিক বাক্য
দুই বা ততোধিক সরল বা জটিলবাক্য পরস্পর এক বা একাধিক অব্যয়ের দ্বারা যুক্ত হয়ে যে বাক্যের গঠন করে তাকে যৌগিকবাক্য বলে।
যেমনঃ তুষার ভালো খেলে কিন্তু জাতীয় দলে সুযোগ পায়নি।
এখানে দুটি বাক্যের মাঝে “কিন্তু” অব্যয় যুক্ত হয়েছে।
অর্থ অনুসারে বাক্য এর প্রকারভেদ
অর্থগত দিক বিবেচনায় ৭ প্রকার
১. বর্ননা বা নির্দেশাত্নক বাক্য
২.প্রশ্নবাচক বাক্য
৩. আদেশ বা অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
৪. প্রার্থনা সূচক বাক্য
৫. সংশয় সূচক বাক্য
৬. বিস্ময় সূচক বাক্য
৭. শর্তসাপেক্ষ বাক্য
১.নির্দেশাত্নক বাক্য কাকে বলে
যে বাক্যে মনেরভাব সাধারণভাবে বর্ণনা বা প্রকাশ করা হয় তাকে নির্দেশাত্নক বাক্য বলে। যেমনঃ ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী।
নির্দেশাত্নক বাক্য দুই প্রকার
ক. হ্যাঁ বাচক
যে বাক্যে অন্যকারো বক্তব্যের সাথে সম্মতি প্রকাশ করে বা হ্যাঁ বোধক মনেরভাব প্রকাশ পায় তাকে হ্যাঁ বাচক শব্দ বলে।
যেমনঃ ছেলেরা বল খেলে। পাখি উড়ে যায়।
খ. না বাচক
যে বাক্যে না বোধক বা নেতিবাচক মনেরভাব প্রকাশ পায় তাকে না বাচক শব্দ বলে।
যেমনঃ তারা আজকে যাবে না।
২. প্রশ্নবাচক বাক্য কাকে বলে
যে বাক্যে কোনকিছু নিয়ে প্রশ্ন করা বা জানতে চাওয়া হয় তাকে প্রশ্নবাচক শব্দ বলে। যেমনঃ তোমার নাম কী? তুমি কোথায় থাকো? ইত্যাদি।
৩. অনুজ্ঞাসূচক বাক্য কাকে বলে
যে বাক্যে আদেশ, উপদেশ, অনুরোধ বা নিষেধ করা হয় তাকে অনুজ্ঞাসূচক বাক্য বলে। যেমনঃ সদা সত্য কথা বলবে। তুমি আগামীকাল বাড়ি যাবে। ইত্যাদি।
৪. প্রার্থনা সূচক বাক্য কাকে বলে
যে বাক্যে মনের আশা- আকাঙ্ক্ষা বা প্রার্থনা প্রকাশ পায় তাকে প্রার্থনা সূচক বাক্য বলে। যেমনঃ আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুক।
৫. সংশয় সূচক বাক্য কাকে বলে
বাক্যের দ্বারা যদি বক্তারা বক্তার মনের সন্দেহ বা অনুমান প্রকাশ পায় তাকে সংশয় সূচক বাক্য বলে। যেমনঃ কাল বৃষ্টি হতে পারে। টাকাগুলো কি তুমি নিয়েছো? ইত্যাদি
৬. আবেগ সূচক বাক্য কাকে বলে
যদি কোন বাক্যের দ্বারা বক্তার আনন্দ, ঘৃনা, বিস্ময় ইত্যাদি প্রকাশ পায় তাকে আবেগ বা বিস্ময় সূচক বাক্য বলে। যেমনঃ ছিঃ এই কাজটি তুমি করতে পারলে! আমরা জিতে গেছি! ইত্যাদি।
৭. শর্তসাপেক্ষ বাক্য কাকে বলে
যে বাক্যের দ্বারা একটি ঘটনার সাথে অন্য একটি ঘটনার নির্ভরশীলতা বুঝায় তাকে শর্তসাপেক্ষ বাক্য বলে। যেমনঃ পরিশ্রম করলে, তুমি সফল হবে। ব্যবসায় লাভ হলে, আমি অনেক টাকা পাবো। ইত্যাদি