ই-সিম কি? eSIM এর ব্যবহার
ই-সিম বর্তমান সময়ে আলোচিত এক প্রযুক্তি। আজকে আমরা আলোচনা করবো ই-সিম কি তা নিয়ে।
SIM (Subscriber Identity Module)বলতে আমরা সবাই বুঝি একটি প্লাস্টিকের কার্ড, যেটির মাধ্যমে আমাদের ফোনকে আমরা নির্দিষ্ট অপারেটর এর সাথে যুক্ত করি। প্রত্যেকটি সিমের একটি নির্দিষ্ট পরিচায়ক নাম্বার থাকে। এটি বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। সিমের দ্বারা আমরা আমাদের ফোনে কল, মেসেজ বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি।
ই-সিম এর ইতিহাস কি
সিম কার্ডের প্রযুক্তি ১৯৬০ এর দশকে মানুষের মাথায় আসলেও এর ব্যবহার শুরু হয় ১৯৯১ সাল থেকে। তাই বলা যায় এটি একটি পুরোনো প্রযুক্তি।
এই সিম যদি আমরা হাতে স্পর্শ করতে না পারি বা ফোনে ঢুকাতে না হয় তাহলে কেমন হবে! বিষয়টি বেশ মজাদার। আজকে আপনাদের সাথে এমনই একটি সিম নিয়ে আলোচনা করবো। তাহলে চলুন আমরা পরিচিত হই ই-সিম এর সাথে।
ই-সিম কি
E-sim হলো এম্বেডেড সিম( Embaded SIM)। এটি এমন একটি সিম যা ব্যবহার করতে মোবাইলে সিম ঢুকানোর দরকার হয় না।
এটি একটি নতুন প্রযুক্তি, যা সিম ব্যবহারের ধরণাই পাল্টে দিয়েছে। ই-সিম হলো একটি চিপ যা ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাদারবোর্ডে লাগানো থাকে। এর আকার হবে ৫×৫ মিমি। এটি সাধারণ সিম কার্ডের মতোই নির্দিষ্ট পরিচায়ক নাম্বার বহন করবে এবং তথ্য সংরক্ষণ করবে।
এই সিমের পরিচায়ক নাম্বার পরিবর্তন করার জন্য সাধারণ সিম কার্ডের মতো স্লট পরিবর্তন প্রয়োজন হবে না। আপনি মাদারবোর্ডে সংযুক্ত ই-সিম ব্যবহার করেই বিভিন্ন নাম্বার ব্যবহার করতে পারবেন, অপারেটর এর দিক নির্দেশনা অনুযায়ী।
ই-সিমের ব্যবহার
ই-সিম ব্যবহারের জন্য এমন একটি স্মার্ট ফোনের প্রয়োজন হবে যেটিতে ই-সিম যুক্ত আছে এবং একটি অপারেটর যারা ই-সিম সেবা দিয়ে থাকে। বর্তমানে প্রায় সব স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তাদের মোবাইল ফোনকে আরও পাতলা ও ভিতরের জায়গা বাচাতে ই-সিমের দিকে ঝুকছে। iphone, Samsung, Huawei, Google সহ বিভিন্ন কোম্পানি বর্তমানে ই-সিম সম্বলিত ফোন বাজারে ছেড়েছে।
BRAND | MODEL | MAXIMUM NUMBER OF ESIM |
---|---|---|
Apple | iPhone XS | 20 |
Apple | iPhone XS Max | 20 |
Apple | iPhone 11 | 20 |
Apple | iPhone 11 pro | 20 |
Apple | iPhone 11 pro Max | 20 |
Apple | iPhone 12 | 20 |
Apple | iPhone 12 Pro | 20 |
Apple | iPhone 12 Pro Max | 20 |
Apple | iPhone 13 | 20 |
Apple | iPhone 13 Pro | 20 |
Apple | iPhone 13Pro Max | 20 |
Apple | iPhone SE 2022 | 20 |
Apple | Watch Series 3,4,5,6, SE | 20 |
Apple | iPad | 20 |
Apple | iPad Air | 20 |
Apple | iPad Pro | 20 |
Pixel 3, 3A | 1 | |
Pixel 4, 4A | 1 | |
Pixel 5 | 1 | |
Pixel 6, 6 Pro | 1 | |
Huawei | P40 | 1 |
Huawei | P40 Pro (not including the P40 Pro +) | 1 |
Huawei | Mate 40 Pro | 1 |
Samsung | Galaxy Z Fold 2 5G | 1 |
Samsung | Galaxy Z Flip | 1 |
Samsung | Galaxy Z Flip 5G | 1 |
Samsung | Galaxy Z Fold2 5G | 1 |
Samsung | Galaxy S20 | 1 |
Samsung | Galaxy S21 | 1 |
Samsung | Galaxy S21+ 5G | 1 |
Samsung | Galaxy S21 Ultra 5G | 1 |
Samsung | Galaxy S22 | 1 |
Samsung | Galaxy S22+ | 1 |
Samsung | Galaxy S22 Ultra | 1 |
Samsung | Galaxy Note 20 Ultra 5G | 1 |
Samsung | Galaxy Note 20 | 1 |
Samsung | Galaxy Z Fold3 5G | 1 |
Oppo | Find X3 Pro | 1 |
Oppo | Reno 5 A | 1 |
Oppo | Reno6 Pro 5G | 1 |
Oppo | Find X5 | 1 |
Oppo | Find X5 Pro | 1 |
ই-সিম এর সুবিধা কি
১. ই-সিম ফোনে প্রবেশের বা বের করার প্রয়োজন নেই।
২. ই-সিম একটি সাধারণ সিমের তুলনায় অনেক কম জায়গা নেয়। যার ফলে ফোনে জায়গা বাড়ে। ফোনে অতিরিক্ত ছিদ্র প্রয়োজন হবে না, ফলে ফোন থাকবে পানি ও ধুলাবালি থেকে আরও বেশি সুরক্ষিত।
৩. একটি ই-সিমে ব্যবহারকারী চাইলে ২০ টি পর্যন্ত আলাদা অপারেটর এর ই-সিম ব্যবহার করতে পারবেন। যা ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে। তবে একই সময়ে একটি নাম্বার কাজ করবে। চাইলে পরিবর্তন করা যাবে।
৪. ই-সিম স্মার্ট ফোনের পাশাপাশি স্মার্ট ঘড়ি এবং ট্যবলেটে ব্যবহার করা যাবে। ভবিষ্যতে আরও ইলেকট্রনিক ডিভাইসে এটি যুক্ত হতে পারে।
৫. ই-সিম যেহেতু সরাসরি মাদারবোর্ডের সাথে যুক্ত তাই এটি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। অপারেটর পরিবর্তনও খুব সহজ।৷ এর জন্য ব্যবহারকারী নিজে ঘরে বসেই সেটিংস বা অ্যাপলিকেশন ব্যবহার করে অপারেটর পরিবর্তন করতে পারবে।
৬. একটি ই-সিমে এখন পর্যন্ত ২০ টি অপারেটর যুক্ত করা যায়(একই সময়ে একটি সিম কাজ করবে), তাই যাদের বিভিন্ন কাজের জন্য সিম পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় তাদের জন্য ই-সিম খুবই উপকারী।
৭. প্লাস্টিকের ব্যবহার কমবে। ফলে ই-বর্জ্য অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে।
৮. ফোন চুরি হয়ে গেলেও কেউ সিম পরিবর্তন করতে পারবে না। তাই সহজেই অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব।
ই-সিম এর অসুবিধা কি
এই সিম ব্যবহারে এতো সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও আছে।
১. ই-সিম ব্যবহারে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। সাধারণত সিমট্র্যাক করে যে কারও গতিবিধি জানা সম্ভব। এই সিমের ক্ষেত্রেও সম্ভব। সাধারণ সিমের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারী সিম খুলে ফেলতে পারেন কিন্তু এই সিমে তা সম্ভব না। ই-সিম যেহেতু এখনো শুরুর পর্যায়ে আছে তাই বিষয়টি নিয়ে মানুষের চিন্তা কম কিন্তু ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথেই এই নিরাপত্তা ঝুঁকি সামনে আসবে। তাই কর্তৃপক্ষের এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. সাধারণত ফোনে সমস্যা হলে বা ফোন কাজ না করলে আমরা সিম পরিবর্তন করে অন্য ফোনে নিতে পারি কিন্তু ই-সিমে তা সম্ভব নয়। অন্য একটি ই-সিম সম্বলিত ফোনে সিমটি স্থানান্তর করা গেলেও তথ্যজনিত জটিলতা থেকেই যায়।
আশা করা যায় কর্তৃপক্ষ অতিশিঘ্রই এই ধরণের সমস্যা সমাধানের একটি পথ বের করবে এবং আমাদের এই সিম ব্যবহারের পথ সুগম করবে।
বাংলাদেশে ই-সিম
গ্রামীণফোনের হাত ধরেই বাংলাদেশ ই-সিম জগতে প্রবেশ করেছে। ১৬ই ডিসেম্বর ২০২১ সালে গ্রামীণফোন আমাদের দেশে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এই সিম বাজারে আনে। প্রিপেইড এবং পোস্টপেইড দুই প্যাকেজেই পাওয়া যাবে এই সিম। eSim কিনতে এই লিংকটি ভিজিট করুন।