বাংলা ব্যাকরণ

ধাতু কাকে বলে ? ধাতু কত প্রকার ও কি কি?

1 min read

ধাতু কাকে বলে

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় ধাতু কাকে বলে ।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে- ক্রিয়ার মূলকে ধাতু বলা হয়ে থাকে।

যে ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি কাজ সংঘটিত হওয়ার ভাব প্রকাশ করে এবং উপযুক্ত বিভক্তি, প্রত‍্যয় ইত‍্যাদি যুক্ত হয়ে বাক‍্যের মধ‍্যে ক্রিয়াপদে পরিণত হয়, তাকে ধাতু বলে।

কোনো একটি ক্রিয়াপদ কে ভাঙ্গলে এর মূলে যে অংশ টি পাওয়া যায় তাই মূলত ধাতু।

যেমন- গমন= গম্ + অনট্। এখানে গম্ হলো ধাতু।

এখানে গম্ একটি অপরিবর্তনশীল  অংশ। অর্থ্যাৎ এটি হলো সমস্ত ক্রিয়ার মূল ও অপরিবর্তনীয় অংশ, যা মূলত ধাতুর মাঝে পরিগনিত।

ধাতু চিহ্ন

ধাতুকে বুঝানোর জন্য ব্যাকরণে একটি ধাতুর চিহ্নের ব্যবহার রয়েছে। এই চিন্হটি হলো (√ )।

এই রুট চিহ্নটি কোনো একটি ক্রিয়াপদের আগে বসিয়ে ধাতুকে বোঝানো হয়ে থাকে। তাই আমরা  ‘√পড়্’ লেখা দেখলে পড়বো ‘পড়্ ধাতু’।

কোনো ধাতুকে যখন  আলাদা করে লিখা হয় তখন এই চিহ্নটি দেওয়া উচিত।

তবে অনেকেই দেখা যায় এই রুট চিহ্নের মাথায় আর একটি সরলরেখা দিয়ে দেন, যা একদমই ঠিক নয়।

যদি কোনো ধাতুর শেষে স্বর না থাকে তাহলে হস্ চিহ্ন দিতে হয়।

যেমন: যা, খা, ঘুমা প্রভৃতি ধাতুতে হস্ হয় না কিন্তু- পড়্, লেখ্, দেখ্ প্রভৃতি ধাতুতে অবশ্যই হস্ চিহ্ন দিতে হবে।

ধাতু এর প্রকারভেদ

ধাতুকে প্রধানত ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ-

১. মৌলিক বা সিদ্ধ ধাতু

২. সাধিত ধাতু

৩. যৌগিক বা সংযোগমূলক ধাতু

মৌলিক ধাতু কাকে বলে

যেসকল ধাতুকে কোনোভাবেই ভাঙা বা বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয় না তাকে মৌলিক বা সিদ্ধ ধাতু বলে।

যেমন- মর্, বল্, দেখ্, খা, লিখ্ ইত্যাদি।

এই মৌলিক বা সিদ্ধ ধাতু গুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১. বাংলা ধাতু কাকে বলে

যে সকল ধাতু সংস্কৃত থেকে সরাসরি প্রবেশ করে নি সেগুলোকে বাংলা ধাতু বলা হয়।

যেমন- খেল্+ ই= খেলি, আঁক্+ ই= আঁকি, হাস্+ আ= হাসা।

২. সংস্কৃত ধাতু

বাংলা ভাষায় যেসকল তৎসম ক্রিয়াপদের ধাতুর প্রচলন আছে সেগুলোকে সংস্কৃত ধাতু বলে।

যেমন- কৃ + তব্য = কর্তব্য, দৃশ + য = দৃশ্য ইত্যাদি।

৩. বিদেশী ধাতু

বিদেশি ভাষা হতে আগত যেসকল ধাতুকে বাংলা ভাষায় প্রয়োগ করা হয়ে থাকে ,সেগুলোকে বিদেশাগত বা বিদেশি ধাতু বলে।

যেমন- জম্ + আট = জমাট, খাট্ + বে = খাটবে ইত্যাদি।

সাধিত ধাতু কাকে বলে

কোনো একটি মৌলিক ধাতুর পর বা নাম শব্দের পরে আ-প্রত্যয় যোগ করে যে ধাতু গঠন হয়ে থাকে, তাকে সাধিত ধাতু বলে।

যেমন- কর্+ আ= করা, লেখ্+ আ= লেখা ইত্যাদি।

সাধিতধাতু তিন প্রকার। যথা:

ক. প্রযোজক  বা ণিজন্ত ধাতু কাকে বলে

মৌলিক ধাতুর পর আ-প্রত্যয় যোগ করার মাধ্যমে  যে ধাতুর গঠন হয়, তাকে প্রযোজক বা ণিজন্ত ধাতু বলে।এই ধাতুর মাধ্যমে কর্তা অন্য কাউকে দিয়ে কোনো কাজ সম্পাদন করায়।

যেমন-নাচ্+ আ= নাচা।

খ. নাম ধাতু কাকে বলে

বিশেষ্য, বিশেষণ ও অনুকার অব্যয়ের পর আ-প্রত্যয় সহযোগে যে ধাতুর গঠন হয় তাকে নাম ধাতু বলে।যেমন- ঘুম+ আ= ঘুমা।

গ. কর্মবাচ্যের ধাতু কাকে বলে

বাক্যে কর্তার চেয়ে কর্মের সাথে যখন ক্রিয়ার সম্পর্ক প্রধানরুপে প্রতীয়মান হয়ে ওঠে, তখন সে ক্রিয়াকে কর্মবাচ্যের ক্রিয়া বলে। কর্মবাচ্যের ক্রিয়ার মূলকে কর্মবাচ্যের ধাতু বলা হয়।

যেমন- খা+ ওয়া= খাওয়া।

যৌগিক বা সংযোগমূলক ধাতু কাকে বলে

বিশেষ্য, বিশেষণ বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সাথে মৌলিকধাতু যুক্ত হয়ে যে ধাতুর গঠন করে, তাকে যৌগিক বা সংযোগমূলক ধাতু বলে। যেমন- বিয়োগ (বিশেষ্য পদ) + কর (ধাতু) = ‘বিয়োগ কর’ (সংযোগমূলক ধাতু)।

সংযোগমূলক ধাতুর ক্ষেত্রে এর ক্রিয়া সাধারণত সকর্মক ও অকর্মক দুই ধরনের ই হতে পারে।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x