ক্যাম্পাস
1 min read

ঢাবি-বুয়েট কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা ৮০০-তেও নেই , পাঁচ বছর একই অবস্থানে

ঢাবি-বুয়েট র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা ৮০০-তে জায়গা না পেলেও এর মধ্যে ভারতের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় সেরা ৩০০-তে স্থান পেয়েছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডসের (কিউএস) বিশ্বসেরা ৮০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায়ও স্থান হয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট)। টানা পঞ্চমবার কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ে ৮০১ থেকে ১০০০তম অবস্থানে রয়েছে দেশসেরা এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়৷

এ ছাড়া গতবারের মতো এবারও কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ে ১০০১ থেকে ১২০০তম স্থান অর্জন করেছে বেসরকারি ব্র্যাক ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাঙ্কিং মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান কিউএস গত বুধবার তাদের ওয়েবসাইটে এই র‍্যাঙ্কিংয়ের তথ্য প্রকাশ করেছে। ‘কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিংস ২০২৩: টপ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিস’ শীর্ষক এই র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা ৫০০-এর পরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সুনির্দিষ্ট অবস্থান প্রকাশ করা হয় না।

এ কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের অবস্থান সুনির্দিষ্টভাবে কত নম্বরে, তা উল্লেখ করেনি কিউএস। এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৮০১ থেকে ১০০০তম—এর অর্থ হচ্ছে তারা র‍্যাঙ্কিংয়ের সেরা ১০০০-এর শেষ ২০০-তে অবস্থান করছে। ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের সঙ্গে যৌথভাবে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করলেও ২০১০ সালে আলাদা হয়ে যায় কিউএস। এরপর থেকে এককভাবেই র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করে আসছে তারা।

কিউএসের প্রকাশিত সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাকে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য র‍্যাঙ্কিংগুলোর একটি মনে করা হয়। এই র‍্যাঙ্কিংয়ে এখন আটটি সূচকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক মান নিরূপণ করা হয়। প্রতিটি সূচকে ১০০ করে স্কোর থাকে। সব সূচকের যোগফলের গড়ের ভিত্তিতে সামগ্রিক স্কোর নির্ধারিত হয়।

কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ের সূচকগুলো হলো একাডেমিক খ্যাতি (একাডেমিক রেপুটেশন), চাকরির বাজারে সুনাম (অ্যামপ্লয়ার রেপুটেশন), শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত (ফ্যাকাল্টি-স্টুডেন্ট রেশিও), শিক্ষকপ্রতি গবেষণা-উদ্ধৃতি (সাইটেশনস পার ফ্যাকাল্টি), আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাত (ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাকাল্টি রেশিও), আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাত (ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট রেশিও), আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্ক (ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ নেটওয়ার্ক) ও কর্মসংস্থান (অ্যাম্প্লয়মেন্ট আউটকামস)।

২০২৩ সালের জন্য সদ্য প্রকাশিত র‍্যাঙ্কিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক খ্যাতিতে ১৯ দশমিক ৪০, চাকরির বাজারে সুনামে ৩৪ দশমিক ২০, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতে ১২ দশমিক ৯০, শিক্ষকপ্রতি গবেষণা-উদ্ধৃতিতে ২ দশমিক ৪০, আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাতে ১ দশমিক ৮০, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাতে ১ দশমিক ১০, আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্কে ২৭ দশমিক ৬০ আর কর্মসংস্থানে ৫৬ দশমিক ৩০ স্কোর পেয়েছে।

অন্যদিকে বুয়েট একাডেমিক খ্যাতিতে ১৪ দশমিক ১০, চাকরির বাজারে সুনামে ২৫ দশমিক ২০, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতে ২১ দশমিক ৭০, শিক্ষকপ্রতি গবেষণা-উদ্ধৃতিতে ৯ দশমিক ৫০, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাতে ১ দশমিক ১, আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্কে ১১ দশমিক ৭০ আর কর্মসংস্থানে ৪৬ দশমিক ৮০ স্কোর পেয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাতে বুয়েটের কোনো স্কোর উল্লেখ করা হয়নি।

বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক খ্যাতিতে ৯ দশমিক ১০, চাকরির বাজারে সুনামে ২০ দশমিক ৩০, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতে ১৬ দশমিক ৯০, শিক্ষকপ্রতি গবেষণা-উদ্ধৃতিতে ১ দশমিক ৭০, আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাতে ২ দশমিক ৮০, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাতে ২, আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্কে ১৩ দশমিক ১০ আর কর্মসংস্থানে ২৪ দশমিক ৫০ স্কোর করেছে৷

অন্যদিকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক খ্যাতিতে ১০ দশমিক ৪০, চাকরির বাজারে সুনামে ৩৭ দশমিক ২০, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতে ৫ দশমিক ২০, শিক্ষকপ্রতি গবেষণা-উদ্ধৃতিতে ১ দশমিক ৯০, আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাতে ১৪ দশমিক ২০, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাতে ২ দশমিক ৬০, আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্কে ১১ দশমিক ২০ আর কর্মসংস্থানে ২৬ দশমিক ৮০ স্কোর করেছে।

তবে বাংলাদেশের এই চার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোটিরই সামগ্রিক স্কোর উল্লেখ করেনি কিউএস। এর আগে কিউএসের ২০১৯, ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালের প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের অবস্থান ৮০১ থেকে ১০০০-এর মধ্যে ছিল। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই র‍্যাঙ্কিংয়ে স্থান পেয়েছিল। ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৭০১-৭৫০তম।

কিউএসের এবারের র‍্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ১ হাজার ৪০০ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ ১০০-তে ১০০ স্কোর নিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

এ ছাড়া চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে আছে যথাক্রমে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ৪৪টি ও পাকিস্তানের ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয় কিউএসের প্রকাশিত র‍্যাঙ্কিংয়ে স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে ভারতের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় সেরা ৩০০-তে স্থান পেয়েছে।

Rate this post