রাজনীতি
1 min read

যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় বাংলাদেশের মানুষ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভোটে নিজেদের নেতা নির্বাচন করছে- মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায়, বাংলাদেশের মানুষ অবাধ নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে তাদের নেতা নির্বাচন করছে। নির্বাচনে কে জিতবে সেটা বড় বিষয় নয়। মানুষ অবাধে ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করুক। এটাই চায় যুক্তরাষ্ট্র। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে কে জিতবে না জিতবে তা আমাদের মাথাব্যথা না। শুধু এমন একটি নির্বাচন হোক, যাতে এ দেশের মানুষ তাদের নেতা বেছে নিতে পারেন।

ঢাকার আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে বুধবার (৮ জুন) নির্বাচন কমিশনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমের কাছে এভাবেই অভিমত প্রকাশ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

মার্কিন এ কূটনীতিক আশা প্রকাশ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশা করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে রাজনৈতিক সমঝোতা হবে।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, পুরো নির্বাচন এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, সরকার, রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম এবং জনগণেরও ভূমিকা রয়েছে।

নির্বাচন আয়োজনে আপনাদের কোনো পরামর্শ ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, অবশ্যই নয়। বাংলাদেশের নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন কিভাবে হবে সেটা ইলেকশন কমিশন এবং পুরো বাংলাদেশের জনগণের ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্র শুধু দেখতে চায় সুষ্ঠু, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। সবাই নিজের মত করে ভোট দিয়ে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পেরেছে।

তিনি বলেন, ‘আমি এদেশে এসেছি তিন মাস হলো। নির্বাচন কমিশনের আগে আমি দুই-তিন জায়গায় দেখা করেছি। তার অংশ হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের সাথে দেখা করেছি। বাংলাদেশে কী হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে এর অংশীদার হতে পারে তা বোঝার চেষ্টা করছি।’

নির্বাচন কমিশনকে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার আশ্বাসের পাশাপাশি পরিস্থিতি বোঝারও চেষ্টা করছেন বলে জানান রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

তিনি বলেন, পুরো নির্বাচন এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, সরকার, রাজনৈতিক দল, এনজিও, গণমাধ্যম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জনগণের ভূমিকা।

আগের চেয়ে স্বচ্ছ নির্বাচন হবে, মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সিইসি:

এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্যান্য নির্বাচন থেকে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমত উনাদের (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) কোনো বার্তা নেই। এটা ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। তিনি আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন নতুন সিইসি হিসেবে। সব ক্ষেত্রে সাফল্য কামনা করেছেন আমার। এছাড়া মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তার সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে করবেন।

নির্বাচন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কিছু বলেছেন কি না জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন নিয়ে আসলে উনি তেমন কিছু আলোচনা করেননি। বলেছেন, আমি কেমন ফিল করছি। আমি বলেছি আমেরিকার মতো আমাদের নির্বাচন এতটা স্মুথ (মসৃণ) নয়। একটু হাঙ্গামা হয়। ওইদিক থেকে আমরা প্রস্তুত। আশা করি সরকারি সব সংস্থা থেকে সহযোগিতা পাবো এবং নির্বাচনটা সফল হবে। ফেয়ার করার চেষ্টা করবো নির্বাচন।

সম্ভব হলে ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা দেওয়া হবে বলে জানান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, এতে নজরদারি সহজ হবে। সরকারও আশা করি সাহায্য করবে। আমাদের সীমাবদ্ধতার মধ্যে একটা ভালো নির্বাচন করার চেষ্টা করবো।

অপর প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, কোনো চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়নি। উনি যেটা ফিল করছেন, দলগুলোর মধ্যে ধীরে ধীরে আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হবে। হয়তো দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হবে, দলগুলো বুঝবে।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না, জানতে চাইলে সিইসি বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে বলেছি। উনি চেয়েছেন যে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে ভালো হয়। আমরা বলেছি, দলগুলোর সাথে বসবো। কীভাবে অংশগ্রহণমূলক হয়, তাদের সাথে আলোচনা হলে হয়তো পথ বেরিয়ে আসবে।

দলগুলোর বিপরীতমুখী অবস্থানের মধ্যেও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ভোট হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সিইসি। তিনি বলেন, আমরা চাই, উনি (রাষ্ট্রদূত) চেয়েছেন নির্বাচন ফ্রি ফেয়ার হলে ভালো হয়, অংশগ্রহণমূলক হবে। শিগগিরই দলগুলোর সঙ্গেও সংলাপে বসব। অংশগ্রহণমূলক কীভাবে করা যায়, সে দিকটা আমাদের তরফ থেকে তাদের সঙ্গে আলোচনা করলে একটা ওয়ে আউট হবে।

সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হয়তো সমঝোতা হতে পারে। এটা রাজনৈতিক নেতৃত্ব বুঝবেন।

সূত্রঃ আমার দেশ

Rate this post