শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি সহ নানান দাবি নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে  আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা পুলিশ সদস্যদের ফুল দিয়ে ক্যাম্পাসের তাহসান জানান।

উল্লেখ্য যে,

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয় এবং সব কটি প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এরপর আজ সোমবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল করছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা আছে।

শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এর আগে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থাকা পুলিশ সদস্যদের সামনে হাঁটু গেড়ে ফুল গ্রহণের অনুরোধ জানান শিক্ষার্থীরা। তাঁরা পুলিশকে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাওয়ার অনুরোধ করেন। তবে পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের অনুরোধে সাড়া দেননি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেছে। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় চালু না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো প্রশাসনিক কার্যক্রমও চলতে দেওয়া হবে না। উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুলিশ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে অনেককে রক্তাক্ত করেছে। যে উপাচার্যের নির্দেশে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরেছে, তাঁকে শিক্ষার্থীরা একমুহূর্তও আর ক্যাম্পাসে দেখতে চান না।

এর আগে আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের সামনে ২০–২৫ জন শিক্ষার্থীকে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। এ সময় তাঁরা হল ছাড়বেন না বলেও ঘোষণা দেন। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে পুলিশি হামলার ঘটনায় উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। সকাল সোয়া নয়টার দিকে ওই শিক্ষার্থীরা হলের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাসের ভেতরের বিভিন্ন রাস্তায় স্লোগান দেন। ধীরে ধীরে ওই মিছিলের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন।

বেলা দুইটা থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেন। এখানে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষর নেওয়া শুরু করেছেন। বেলা সোয়া দুইটা থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্য, রেজিস্ট্রারের কার্যালয়সহ সব কটি প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরপর তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ, হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। গতকাল রোববার অবরুদ্ধ উপাচার্যকে মুক্ত করতে শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান উপাচার্য। শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে এবং উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল রাত থেকে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

Rate this post

By Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.