সারা বিশ্বে খাদ্যদ্রব্যের দাম কমলেও বাড়ছে বাংলাদেশে

বিশ্বব্যাপী মে মাসেও খাদ্যদ্রব্যের দাম কমতির দিকে। এপ্রিলেও এমনই স্বস্তিদায়ক সংবাদ দিয়েছিল জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) । এনিয়ে টানা দুই মাস খাদ্যদ্রব্যের দাম কমার খবর দিয়েছে সংস্থাটি। যদিও মার্চে খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েছিল দুনিয়াব্যাপি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) খাদ্যপণ্যের দাম কমার খবর দিয়েছে। অথচ, বাংলাদেশে প্রতিদিনই খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এমনকি অতি নিত্যপ্রয়োজনীয় চাউলের দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে। সরকার তদারকি টিম গঠন করেও চাউলের বাজার সামাল দিতে পারছে না। ফলে দিশেহারা এখন সাধারণ মানুষের জীবন।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) শুক্রবার (৩রা জুন) যে সূচক প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায় গত মাসে খাদ্যদ্রব্যের দাম কিছুটা কমেছে । প্রকাশিত সূচকে দেখা যায়, মে মাসে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় দাম ছিল ১৫৭ দশমিক ৪ পয়েন্ট, যা এপ্রিলে ছিল ১৫৮ দশমিক ৩ পয়েন্ট। মার্চ মাসে এ সূচক গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ১৫৮ দশমিক ৫ পয়েন্টে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার পূর্বাভাস বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশ্বে খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমবে। টানা চার বছর বিশ্বে উৎপাদনের ঊর্ধ্বগতির পর এবারই প্রথম খাদ্যশস্য উৎপাদন কমতে পারে। ২০২১ সালের তুলনায় এ অর্থবছরে ১ কোটি ৬০ লাখ টন খাদ্যশস্য কম উৎপাদন হতে পারে।

বিশ্বব্যাপী খাদ্যদ্রব্যের দামের সূচক নিম্নমুখী হলেও, শুক্রবার রাজধানীর বাজারগুলোতে বেশিরভাগ খাদ্যপণ্যের দামই ছিল বাড়তির দিকে।

রাজধানীর কারওয়ানবাজার ঘুরে দেখা গেছে, চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের সবজি। আগের মতোই বাড়তির দিকে ছিলো মাছ দর।

বাজারগুলোতে দফায় দফায় বাড়ছে রসুনের দাম। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আমদানি করা এক কেজি রসুন কিনতে এখন ক্রেতাদের দুশো টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে।

খুচরা ব্যবসায়ী রুহুল আমীন জানান, আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি করছেন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। প্রায় এক মাস আগে এর দাম ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। আর দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা আগে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। ব্যবসায়ীরা বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। আর সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা। ক্রেতা বুঝে দর হাঁকছেন তারা। যারা দরদাম করতে অভ্যস্ত না তাদের কাছে থেকে নিচ্ছেন বাড়তি টাকা।

ঈদের আগে কেজি ৭০০ টাকা উঠে যাওয়া গরুর মাংসের দামেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা বিক্রি করছেন। তবে মহল্লার সাপ্তাহিক ব্যবসায়ীরা গরুর মাংসের কেজি বিক্রি করছেন ৭২০ টাকা কেজি। দাম স্থিতিশীল রাখলেও, মাংসের ভেতর হাড় ও চর্বি দিয়ে ক্রেতাদের ব্যাপকভাবে ঠকাতে দেখা গেছে।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। প্রতি কেজি শিং মাছের দাম হাঁকা হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা। গত সপ্তাহের চেয়ে প্রায় সব মাছেই কেজিতে ৫-১০ টাকা বেশি রাখছেন বিক্রেতারা।

চালের দাম তো কমছেই না। প্রতি দিনই বাড়ছে লাফিয়ে-লাফিয়ে। আওয়ামী সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন ছোট আড়তদার ও পাড়া-মহল্লার বিক্রেতারা। সব অভিযান চালানো হচ্ছে সেসব জায়গায়। অথচ ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন বড় বড় সিন্ডিকেট সদস্যরা।

ঈদুল ফিতরের পরপরই বেড়েছে ডাল, ডিম, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম। প্রতি সপ্তাহেই কাঁচাবাজারে কোনো না কোনো নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। নতুন করে সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে আলু ও তরল দুধ। বাজারের সস্তা আলুর দামও তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। প্রতি পিস ডিমের দামও বেড়েছে ৩টাকা করে।

সূত্রঃ আমার দেশ uk

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *