Similar Posts
সমাজবিজ্ঞান কি, কাকে বলে এবং সমাজবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয়
সমাজবিজ্ঞান কি সমাজবিজ্ঞান এমন একটি পূর্ণাঙ্গ বিষয় যা মানুষ এবং মানুষের সমন্বয়ে সৃষ্ট সমাজের সকল দিককে অন্তর্ভুক্ত করে। সমাজবিজ্ঞান শব্দটি একটি যৌগিক শব্দ যা সমাজ ও বিজ্ঞান দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। সমাজ একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ, সমাজের সাথে মানব জীবনের সকল দিক সম্পর্কিত, যেমন, পরিবার, ধর্ম, সাংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি এবং মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক। অন্যদিকে বিজ্ঞান হচ্ছে যুক্তি ও বাস্তবিকতার নিরিখে সব কিছু পর্যালোচনা করা। সুতরাং সমাজবিজ্ঞান শব্দের শাব্দিক অর্থ দ্বারায়, যুক্তি ও বাস্তবিকতার নিরিখে মানুষ এবং সমাজের পর্যালোচনা। সমাজবিজ্ঞান কাকে বলে যে শাস্ত্র সমাজের উৎপত্তি, বিকাশ, প্রত্যয় ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সকল দিক থেকে পূর্ণাঙ্গভাবে অধ্যয়ন করে, সেই বিজ্ঞানময় শাস্ত্রকে সমাজবিজ্ঞান বলে। সমাজবিজ্ঞানীগণ সমাজবিজ্ঞানকে নানা ভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, যেমন ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী ডুর্খেইম বলেছেন,”সমাজবিজ্ঞান হলো সমাজিক প্রতিষ্ঠান সমূহের বিজ্ঞান”। ম্যাকাইভারের মতে,“সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান যা সমাজ এবং মানুষের মধ্যাকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে”। সমাজবিজ্ঞান সমাজের আদি হতে অন্ত সকল দিক পর্যালোচনা করার মাধ্যমে মানব সমাজ এবং মানুষের ব্যাপারে সম্যক ধারণা প্রদান করে। অগাস্ট কোৎ এর সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা অনেক সমাজতাত্ত্বিক সমাজবিজ্ঞানের প্রামাণ্য সংজ্ঞা প্রদান করেছেন তবে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত সংজ্ঞাটি প্রদান করেছেন সমাজবিজ্ঞানের জনক অগাস্ট কোৎ, তিনি বলেন, “Sociology is the scientific study of the society” অর্থাৎ, সমাজবিজ্ঞান হলো সমাজকে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় অধ্যায়নের বিজ্ঞান। অগাস্ট কোৎ সমাজবিজ্ঞান শাস্ত্রে বিশেষ অবদান রাখেন, যার জন্য অগাস্ট কোৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তিনিই Sociology (বাংলা অর্থ হচ্ছে সমাজবিজ্ঞান) শব্দটি প্রবর্তন করে সমাজবিজ্ঞানকে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করেন। Comte (অগাস্ট কোৎ), scientific study শব্দদ্বয় দ্বারা আসলে কি বুঝাতে চেয়েছেন তা একটু পর্যালোচনা করে দেখা যাক। scientific study (বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা) দ্বারা scientific method of study বা বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় পর্যালোচনা কে বুঝানো হয়েছে । আর বিজ্ঞান যে প্রক্রিয়ার বস্তুজগতের ব্যাখ্যা প্রদান করে সেইটাকে বলা হয় Doctrine of causality (ঠিক একই মেথড থমাস হবসও তার political philosophy এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন) অর্থাৎ প্রত্যেকটা incidence বা ঘটনা প্রবাহের পিছনে সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে। আর এই সুনির্দিষ্ট কারণগুলো অনুসন্ধানের মাধ্যমে বিজ্ঞান material world বা বস্তুজগতকে বিশ্লেষণ করে। তেমনি সমাজবিজ্ঞান সামাজিক ঘটনাপ্রবাহকে এই একই প্রক্রিয়ায় ব্যাখ্যা করে বলে সমাজবিজ্ঞানের জনক অগাস্ট কোৎ সমাজবিজ্ঞানকে social physics বা সমাজের পদার্থবিদ্যা বলেছেন। এবার Doctrine of Causality এর একটা বাস্তবধর্মী এক্সাম্পল দেয়া যাক। আমরা জানি যে আগুনের সংস্পর্শে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়, এখানে ছাই হয় effect বা ঘটনা এইটার cause বা কারণ হচ্ছে আগুন। আবার, ধর্ম যদি হয় ইফেক্ট বা ফলাফল, এর cause বা কারণ হচ্ছে geography বা ভূগোল, কারণ কোন অঞ্চলের ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য ওই অঞ্চলের ধর্মের প্রকৃতি নির্ধারণ করে। সমাজবিজ্ঞান এর সাথে বিজ্ঞান এর সম্পর্ক সমাজবিজ্ঞান হচ্ছে সমাজের বিজ্ঞান, অগাস্ট কোৎ সমাজবিজ্ঞানকে বলেছেন, social physics বা সমাজের পদার্থবিজ্ঞান। সমাজবিজ্ঞান নিয়ে কিছু প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারে, যেমন- সমাজবিজ্ঞান কেন বিজ্ঞান? সমাজবিজ্ঞান কি ধরনের বৈজ্ঞানিক কার্য সাধন করে? সমাজবিজ্ঞান কেন এবং কিভাবে বিজ্ঞান? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, বিজ্ঞান যেমন এবং যেই প্রক্রিয়ায় বস্তুজগতের ধর্ম (law of material world) উদঘাটন করে, সমাজ বিজ্ঞান একই প্রক্রিয়ায় মানুষের সমাজ জীবনের ধর্ম উদঘাটন করে থাকে। বিজ্ঞান যেমন matter বা বস্তুকে প্রয়োগিক ভাবে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বস্তুর ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য নির্ণয় করে এবং বস্তুসমূহের মধ্যাকার সম্পর্কের স্বরুপ ও ফলাফল ব্যাখ্য করে, ঠিক তেমনিভাবে সমাজবিজ্ঞান প্রয়োগিক এবং বাস্তবিকভাবে পর্যবেক্ষন ও নিরিক্ষনের দ্বারা সমাজ জীবনের ধর্ম নিরুপন করে। একইসাথে সমাজবিজ্ঞান Social mechanism বা সমাজের সমাজ হিসেবে এগিয়ে চলার বিষয়টিও ব্যাখ্যা করে থাকে। সমাজবিজ্ঞান সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সম্পর্ক ও সামাজিক সমস্যার কারণ এবং প্রতিকারও প্রদান করে থাকে সামাজকে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় অধ্যায়নের মাধ্যমে। যুক্তি ও বাস্তবিকতার মানদন্ড উত্তির্ণ না হলে বিজ্ঞান যেমন সেটাকে স্বীকার করে না, সমাজবিজ্ঞানও যুক্তি ও বাস্তবিকতা বিবর্জিত কোনকিছুকেই স্বীকৃতি প্রদান করে না। সমাজবিজ্ঞানের মূল প্রত্যয়গুলোর মধ্যে rationality বা যুক্তিসিদ্ধতা, causality বা কার্যকরণ-সম্পর্ক অন্যতম। যেহেতু সমাজবিজ্ঞান বিজ্ঞানের মতই বাস্তব নিরীক্ষণ ও যুক্তিনির্ভর একটি জ্ঞান, সে কারণেই সমাজবিজ্ঞানও এক প্রকার বিজ্ঞান যা বৃহত্তর পরিসরে সমাজ-জীবনের নানা দিককে যৌক্তিক ভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে থাকে এবং সামাজিক সমস্যাবলির কারণ নির্ণয় ও সেই মোতাবেক প্রতিকার প্রদান করে।
শব্দ দূষণ: কারণ, প্রভাব ও প্রতিকার
ক্রমবর্ধমান যানবাহন, বিমান, শিল্প মেশিন, টেলিভিশন, রেডিও, লাউডস্পিকার, জেনারেটর ইত্যাদিতে উচ্চ মাত্রায় শব্দ ব্যবহারের কারণে শব্দ দূষণ উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। Noise শব্দটি ল্যাটিন শব্দ ‘Nausea’ থেকে এসেছে, যার অর্থ বমি করার প্রবণতা সহ অসুস্থতার অনুভূতি। শব্দ দূষণ হল একটি অপ্রীতিকর এবং অবাঞ্ছিত অবস্থা যা মানুষের অস্বস্তির দিকে নিয়ে যায়। শব্দের তীব্রতা ডেসিবেলে (ডিবি) পরিমাপ…
ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বাবরের কৃতিত্ব আলোচনা কর
মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বাবরের কৃতিত্ব পর্যালোচনা কর। ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে বাবর ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। একজন সফল বিজেতা শাসক হিসেবে তিনি নিঃসন্দেহে সর্বশ্রেষ্ঠ। ১৫২৬ সালে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে তিনি ইব্রাহীম লোদীকে পরাজিত করে ভারতবর্ষে মুঘল শাসনের সূচনা করেন। পানিপথের যুদ্ধে তার বিজয় লাভের ফলে ভারতবর্ষ থেকে প্রায় ৩০০ বছরের সুলতানি যুগের…
বাবর কি মুঘল সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন পর্যালোচনা কর
বাবর মুগল সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা তোমার সপক্ষে যুক্তি দেখাও বাবর মধ্যযুগের ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক অনন্য নাম। তিনি মধ্যযুগে আফগানিস্তানের কাবুল থেকে ভারতবর্ষে আগমন করেন এবং মুঘল শাসনের সূত্রপাত ঘটান। তবে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে যে বাবর মুঘল সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা কিনা। কেননা তার প্রতিষ্ঠিত মুঘল সাম্রাজ্য হুমায়ূনের সময়ে প্রায় ধ্বংস হয় এবং সম্রাট আকবরকে আবার…
তোমার এলাকায় নির্বাচনের সময় যেসব নির্বাচনী আচরণবিধি পালন করা হয় তা বর্ণনা কর।
তোমার এলাকায় নির্বাচনের সময় যেসব নির্বাচনী আচরণবিধি পালন করা হয় তা বর্ণনা কর। নির্বাচন কমিশনের একটি অন্যতম কাজ হলো নির্বাচনের আচরণবিধি তৈরি করা। সুষ্ঠভাবে নির্বাচন পরিচালনার স্বার্থে এটি করা হয়। কারণ স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবাধ নির্বাচনের পূর্বশর্ত। এই লক্ষে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সময় নাগরিকরা কী ধরনের আচরণ করবে তার একটি নীতিমালা তৈরি করবে।…
অপারেশন সার্চলাইট কাকে বলে?
অপারেশন সার্চলাইট কাকে বলে? ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের জেনারেল ইয়াহিয়া খান, পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক গভর্নর টিক্কা খানকে বাঙালি নিধনের নির্দেশ দেন। ফলে বাংলাদেশ জুড়ে গণহত্যা সংগঠিত হয়। বলা হয় পাক বাহিনী প্রায় ১০ থেকে ৩০ লক্ষ মানুষকে হত্যা ও ৪ লক্ষ মহিলা ধর্ষিতা হন। গণহত্যা চালানো এই সরকারি নির্দেশ ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসন।…