পদার্থবিজ্ঞানের পরিসর
পদার্থবিজ্ঞান যেহেতু বিজ্ঞানের প্রচীনতম শাখা এবং সবচেয়ে মৌলিক শাখা, শুধু তাই নয় বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা কোনো না কোনোভাবে এই শাখাকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে তাই খুব স্বাভাবিক ভাবেই পদার্থবিজ্ঞানের পরিসর অনেক বড়। শুধু তাই নয়, পদার্থবিজ্ঞানের নানা সূত্রকে ব্যবহার করে নানা ধরনের প্রযুক্তি গড়ে উঠেছে, সেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করি। বর্তমান সভ্যতার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে ইলেকট্রনিকসের এবং এই প্রযুক্তিটি গড়ে ওঠার পেছনেও সবচেয়ে বড় অবদান পদার্থবিজ্ঞানের। দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ছাড়াও যুদ্ধের তাণ্ডবলীলা থেকে শুরু করে মহাকাশ অভিযান – এরকম প্রতিটি ক্ষেত্রেই পদার্থবিজ্ঞানের ব্যবহার রয়েছে। শুধু তাই নয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা এবং পদার্থবিজ্ঞানকে একত্র করে নিয়মিতভাবে নতুন নতুন শাখা গড়ে উঠেছে যেমন : Astronomy ও পদার্থবিজ্ঞানকে মিলে Astrophysics তৈরি হয়েছে, জৈব প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করার জন্য জীববিজ্ঞান এবং পদার্থবিজ্ঞান ব্যবহার করে গড়ে উঠেছে Biophysics, রসায়ন শাখার সাথে পদার্থবিজ্ঞান শাখার সম্মিলনে জন্ম নিয়েছে Chemical Physics, ভূ-তত্ত্বে ব্যবহার করার জন্য পদার্থবিজ্ঞান ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে Geophysics এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান ব্যবহার করে গড়ে উঠেছে Medical Physics ইত্যাদি। কাজেই পদার্থবিজ্ঞানের পরিসর সুবিশাল এবং অনেক গভীর। পঠন-পাঠনের সুবিধার জন্য আমরা পদার্থবিজ্ঞানকে দুটি মূল অংশে ভাগ করতে পারি।
ক্লাসিক্যাল পদার্থবিজ্ঞানঃ এর মাঝে রয়েছে বলবিজ্ঞান, শব্দবিজ্ঞান, তাপ এবং তাপগতি বিজ্ঞান, বিদ্যুৎ ও চৌম্বক বিজ্ঞান এবং আলোকবিজ্ঞান।
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানঃ কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান এবং আপেক্ষিক তত্ত্ব ব্যবহার করে যে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান গড়ে উঠেছে, সেগুলো হচ্ছে আণবিক ও পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞান, নিউক্লিয় পদার্থবিজ্ঞান, কঠিন অবস্থার পদার্থবিজ্ঞান এবং পার্টিকেল ফিজিকস।
বলা যেতে পারে, বিজ্ঞানের মূল ভিত্তিই হচ্ছে পদার্থবিজ্ঞান। বিশ্ব ব্রহ্মান্ডে যা কিছু সংগঠিত হয় তার প্রায় সবই পদার্থবিজ্ঞানের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। পদার্থবিজ্ঞানের নীতিগুলো ব্যবহার করে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখাসমূহের ভিত্তি তৈরি হয়েছে। সুতরাং পদার্থবিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের মৌলিক শাখা বলা হয়।
চিকিৎসাবিজ্ঞান, জ্যোতিবিজ্ঞান, প্রকৌশলশাস্ত্র, জীববিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান সর্বত্র পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিশদভাবে আলোচনা করার সুবিধার্থে পদার্থবিজ্ঞানকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
এগুলো হলো –
১। বলবিজ্ঞান
২। তাপবিজ্ঞান
৩। শব্দবিজ্ঞান
৪। আলোকবিজ্ঞান
৫। চুম্বক বিজ্ঞান
৬। তড়িৎ বিজ্ঞান
৭। কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান
৮। নিউক্লিয় পদার্থবিজ্ঞান ইত্যাদি।