জীববিজ্ঞান

উদ্ভিদের পানিশোষণ পদ্ধতি, সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় পানি শোষণ

1 min read

উদ্ভিদের পানিশোষণ পদ্ধতি, সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় পানি শোষণ

এই পাঠ শেষে আপনি-

  • উদ্ভিদের পানিশোষণ প্রক্রিয়া বর্ণা করতে পারবেন।
  • সক্রিয়া পানিশোষণ কি তা ব্যাখ্যা করতে পারবেন।
  • নিষ্ক্রিয় পানিশোষণ প্রক্রিয়ার উদাহরণ দিতে পারবেন।

উচ্চ শ্রেণির উদ্ভিদ মুলরোমের সাহায্যে পানি আহরণ করে। মূলের শীর্ষ থেকে কিছুটা পেছনে খুব ঘন হয়ে মূলরোম অঞ্চল থাকে। মূলরোম দেখতে নলাকার, দীর্ঘ এবং এক কোষী। মূলের বহিত্বকের কোষ লম্বা হয়ে মূলরোমের সৃষ্টি করে। মূলরোমের কোষ প্রাচীর ভেদ্য (permeable) এবং পেকটিন ও সেলুলোজ উপাদানে তৈরি যেগুলো অত্যন্ত পানি গ্রাহী। মূলরোমে কোষ রসে পূর্ণ কোষ গহব্বর থাকে। মূলরোম মাটির পানির সংস্পর্শে থাকে। মূল যখন বৃদ্ধি পায় তখন পুরাতন মূলরোম সরে যায়। নতুন মূলরোম অঞ্চলের সৃষ্টি হয়। এ ভাবে মূলরোম সবসময় নতুন পানির উৎস খুঁজে পায়।

উদ্ভিদ দু’ভাবে পানি আহরণ করে-

১। সক্রিয় পানি শোষণঃ এ প্রক্রিয়াতে পানি আহরণে মূলের কোষগুলো মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এজন্য যে শক্তির প্রয়োজন হয় তা শ্বসনের মাধ্যমে পাওয়া শক্তি থেকে আসে। সক্রিয় শোষণ দু’প্রকার, যথা-

(ক) সক্রিয় পানি শোষণঃ এ প্রক্রিয়াতে মাটি থেকে পানি মূলের জাইলেম টিস্যুতে প্রবেশ করে অভিস্রবণের নতিমাত্রা (osmotic gradient) অনুসারে। এ প্রক্রিয়ার প্রথম পর্যায়ে মূলরোমের পানিগ্রাহী কোষ প্রাচীর ইমবাইবিশন প্রক্রিয়ায় মাটি থেকে পানি শোষণ করে। মূলরোমের কোষ রসের অভিস্রবণ চাপ (osmotic pressure) সাধারণত মাটির পানির অভিস্রবণ চাপের চেয়ে বেশি থাকে। এ কারণে ব্যাপন চাপের ঘাটতি (diffusion pressure deficit) এবং শোষণ চাপ (suction pressure) বেড়ে যায়। কোষ প্রাচীর থেকে পানি তখন অর্ধভেদ্য প্লাজমা মেমব্রেনের মধ্য দিয়ে অভিস্রবণের মাধ্যমে মূলরোমের কোষে প্রবেশ করে। এসময় মূলরোমের অভিস্রবণ চাপ, শোষণ চাপ এবং ব্যাপন চাপের ঘাটতি কমে যায় কিন্তু রসস্ফীতি চাপ বেড়ে যায়। মূলরোমের সন্নিহিত কর্টেক্স অঞ্চলের কোষগুলোর অভিস্রবণ চাপ, শোষণ চাপ এবং ব্যাপন চাপের ঘাটতি এখন মূলরোমের কোষের চেয়ে বেশি। কাজেই মূলরোম থেকে পানি ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কর্টেক্সের কোষে প্রবেশ করে।

একই ভাবে কোষ থেকে কোষান্তরে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় পানি এন্ডোডারমিস কোষ স্তরের পাতলা কোষ প্রাচীরের কোষের মধ্য দিয়ে পেরিসাইকেল কোসের স্তরে পৌঁছে যায়। সবশেষে একই ভাবে পেরিসাইকেল কোষ থেকে পানি জাইলেমে প্রবেশ করে। মূলের জাইলেম তখন এক ধরনের চাপের সৃষ্টি হয় এই চাপ মূলজ চাপ (root pressure) নামে পরিচিত। মূলজ চাপ জাইলেম পানিকে কিছুটা উচুতে তুলে দিতে পারে।

(খ) সক্রিয় অনঅভিস্রবণিক পানি শোষণঃ এ প্রক্রিয়াতে পানি অভিস্রবণের নতিমাত্রার বিপরীতে পানি শোষণ করে। অনেক সময় মাটির পানি অভিস্রবণ বাপ কোষ রসের অভিস্রবণ চাপের চেয়ে বেশি হলেও সম্ভবত শ্বসনের মাধ্যমে পাওয়া শক্তি ব্যয় করে উদ্ভিদ মাটি থেকে পানি শোষণ করে।

২। নিষ্ক্রিয় পানি শোষণঃ প্রস্বেদনের হার যখন বেশি থাকে তখন এ প্রক্রিয়াতে পানি শোষণ হয়। পাতা থেকে প্রস্বেদনের ফলে দ্রুত পানি কমে গেলে পাতার জাইলেমের পানিতে টানের সৃষ্টি হয় যা কাণ্ডের জাইলেমের মধ্য দিয়ে মূলের জাইলেমের পানিতে পৌঁছে যায়। পানি তখন প্রস্বেদন অঞ্চলে উঠে আসে। মাটির পানি তখন মূলরোমের মধ্য দিয়ে কর্টেক্সের কোষে প্রবেশ করে। মূলরোমে পানি প্রবেশ করেছে দ্রুত প্রস্বেদনের ফলে পাতায় পানি ঘাটতির কারণে। কাজেই এখানে মূলের কোষগুলো নিষ্ক্রিয় ছিল।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x