মৌলিক চাহিদা কাকে বলে?
মানুষসহ যেকোনো জীবন্ত প্রাণীল অস্তিত্ব রক্ষা, দৈহিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য যেসব চাহিদা পূরণ করা অপরিহার্য তাকে মৌলিক চাহিদা বলে। একে জৈবিক বা দৈহিক চাহিদাও বলা হয়। এ চাহিদার প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মানুষসহ সকল জীবন্ত প্রাণীর বেঁচে থাকা এবং দৈহিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য এটি পূরণ করা অত্যাবশ্যক। মৌলিক চাহিদার আওতায় আসে খাদ্য, ঘুম ইত্যাদি।
১৯৭৬ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার বিশ্ব কর্মসংস্থান সম্মিলনে (ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট কনফারেন্সে) ‘মৌলিক চাহিদা’ পদ্ধতিটি চালু হয়েছিল।
প্রচলিত ধারণায় খাদ্য (পানি সহ), বাসস্থান ও বস্ত্রকে তাৎক্ষণিক “মৌলিক চাহিদা” বলে ধরা হয়ে থাকে।
আধুনিক কালের অনেক ধারণায় কেবল খাদ্য, পানি, বস্ত্র ও বাসস্থানই নয়, পয়ঃনিষ্কাশন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবাকেও ন্যূনতম স্তরের ‘মৌলিক চাহিদা’ হিসেবে ব্যবহারের উপর জোর দেয়। অবশ্য স্থান, কাল ও পাত্রভেদে মৌলিক চাহিদার তালিকা ভিন্ন হয়ে থাকে।
মৌলিক চাহিদা কত প্রকার ও কি কি?
- খাদ্য,
- বস্ত্র,
- বাসস্থান,
- শিক্ষা,
- চিকিৎসা,
- চিত্তবিনোদন ইত্যাদি।
মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর বর্ণনা
খাদ্য:
বাসস্থান:
শিক্ষা:
চিকিৎসা:
চিত্তবিনোদন:
বিনোদনে অংশ নেয়া মানুষের একটি সহজাত চাহিদা। আদিকাল হতেই মানুষ সকল বয়সে এবং সকল সময় বিনোদনের সাথে জড়িত হয়েছে। শরীরে শক্তির জন্যে যেমন খাদ্য, তেমনি মনের প্রশান্তির জন্যে মানুষের প্রয়োজন হয় বিনোদনের। বিনোদন মানুষের চিত্তকে সুস্থ ও সবল রাখে। পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন, অবসর যাপন, নেতৃত্বদান, সামাজিক নিয়ন্ত্রণ বিধান ইত্যাদিতে চিত্তবিনোদন প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। তাই বিশ্বের সবদেশেই সবসময়ে গান-বাজনা, নাচ-অভিনয়, আবৃত্তি-বিতর্ক, ভ্রমণ-পরিদর্শন ইত্যাদিতে মানুষ জড়িত থেকেছে। বর্তমানে রেডিও, টিভি, নাটকসিনেমা, বই-পত্রিকা, পার্ক-চিড়িয়াখানা, কম্পিউটার, ক্রিড়া-পর্যটন ইত্যাদি মানুষের চিত্ত বিনোদনের অাকর্ষণীয় উপকরণ হিসেবে চালু রয়েছে। বিনোদনের মাধ্যমে ও উপকরণ অঞ্চল, সংস্কৃতি, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইত্যাদির কারণে ভিন্ন হয়ে থাকে।
সামাজিক নিরাপত্তা:
সামাজিক মানুষের অন্যতম একটি মৌলিক চাহিদা হলো সামাজিক নিরাপত্তা। বিষয়টি মানুষের ভূমিষ্ঠ হবার আগে হতে মৃত্যুর পর পর্যন্ত অব্যাহত থাকা প্রয়োজন বলে সকলে মনে করে। অর্থাৎ মাতৃগর্ভে থাকাকালীন সময় হতে মৃত্যুর পরে শেষকৃত্য পর্যন্ত মানুষ সামাজিকভাবে গড়ে তুলেছে রাষ্ট্র ও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক সংগঠন। মাতৃগর্ভ হতে সুস্থ অবস্থায় জন্মলাভে, শৈশবে আদর যত্নে লালিত-পালিত হতে, কৈশরে লেখাপড়া করায়, যৌবনে কর্মসংস্থান লাভে, বার্ধক্যে পরিচর্যা পেতে এবং জীবনভর অসুস্থতায়, বৈধব্যে, অভিভাবকহীনতায়, দুর্ঘটনায় এবং বিপদে অাপদে মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্র হতে দরকারী সহায়তা ও নিরাপত্তা পেতে চায়। তাই নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে রাষ্ট্র আইনের মাধ্যমে সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। উন্নত দেশে এ চাহিদাগুলো পর্যাপ্তভাবে পূরণ করা হলেও বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশে সামাজিক নিরাপত্তা বিধান খুব সামান্যই সম্ভব হয়।