রসায়ন

ভর সংখ্যা কাকে বলে?

1 min read

ভর সংখ্যা কাকে বলে?

ভর সংখ্যার ইংরেজি হলো : Mass Number।

কোনো মৌলের একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের মধ্যে অবস্থিত প্রোটন এবং নিউট্রনের মোট সংখ্যাকে ঐ মৌলের বা পরমাণুর ভরসংখ্যা বলে।

অর্থাৎ ভর সংখ্যা = প্রোটন সংখ্যা + নিউট্রন সংখ্যা।

ভরসংখ্যাকে ‘A’ অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

 

ভর সংখ্যার প্রকাশ

কোনো পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা পরমাণুর প্রতীকের নিচে বাম পাশে লেখা হয়, পরমাণুর ভর সংখ্যা প্রতীকের বাম পাশে উপরের দিকে লেখা হয়। যেমন – সোডিয়াম পরমাণুর প্রতীক Na এর পারমাণবিক সংখ্যা 11 এবং ভর সংখ্যা 23।

এটাকে এভাবে প্রকাশ করা যায়ঃ

ভর সংখ্যা

 

ভর সংখ্যার অপর নাম কি?

রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় পরমাণুর নিউক্লিয়াস গঠনের অন্যতম উপাদান হলো নিউক্লিয়ন। প্রতিটি পারমাণবিক নিউক্লিয়াস এক বা একাধিক নিউক্লিয়ন দিয়ে গঠিত হয় এবং নিউক্লিয়াস এক বা একাধিক ইলেকট্রন দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। নিউক্লিয়ন দুই প্রকার। যথাঃ নিউট্রন এবং প্রোটন। এই নিউক্লিয়ন সংখ্যা ও ভর সংখ্যা একই। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিউক্লিয়ন সংখ্যা ব্যবহার না করে ভর সংখ্যা হিসেবেই ব্যবহার করা হয়।

তাহলে ভর সংখ্যার অপর নাম হলো নিউক্লিয়ন সংখ্যা।

 

ভর সংখ্যা বের করার নিয়ম

সোডিয়ামের প্রোটন সংখ্যা 11 এবং নিউট্রন সংখ্যা হলো 12।

তাহলে সোডিয়াম এর ভরসংখ্যা হবে = প্রোটন সংখ্যা + নিউট্রন সংখ্যা

= 11 + 12

= 23

ভর সংখ্যা মনে রাখার উপায়

আমাদের অনেকের মৌলসমূহের পারমানবিক ভর মনে থাকে না৷ তাই, আজকে আপনাদের কাছে “১ থেকে ৩০টি মৌলের পারমানবিক ভর মনে রাখার কৌশল” নিয়ে আলোচনা করবো৷

বুদ্ধি-১ঃ
১ থেকে ১০ পর্যন্ত যেকোনো মৌলের (হাইড্রোজেন ব্যতীত) পারমানবিক সংখ্যা দ্বিগুন করলে পারমানবিক ভর পাওয়া যায়৷

উদাহরণসরূপঃ হিলিয়ামের(He) পারমানবিক সংখ্যা ২, এর দ্বিগুন হবে ২×২=৪৷

অতএব, হিলিয়ামের পারমানবিক ভর হবে ৪৷ এভাবে লিথিয়াম(Li), বেরিলিয়াম(Be), বোরন(B), কার্বন(C), নাইট্রোজেন(N), অক্সিজেন(O), ফ্লোরিন(F) এবং নিয়ন(Ne) এর পারমানবিক ভর হবে যথাক্রমে ৬, ৮, ১০, ১২, ১৪, ১৬, ১৮ এবং ২০৷

তবে, এক্ষেত্রে হাইড্রোজেনের পারমানবিক ভর ১.০০৮ (ব্যতিক্রম)৷

 

বুদ্ধি-২ঃ
১১ থেকে ২০ পর্যন্ত জোড় মৌলের পারমানবিক সংখ্যা দ্বিগুন করলে জোড় মৌলের পারমানবিক ভর পাওয়া যায়৷

উদাহরণসরূপঃ ম্যাগনেশিয়ামের(Mg) পারমানবিক সংখ্যা ১২, এর দ্বিগুন ১২×২=২৪৷

অতএব, ম্যাগনেশিয়ামের(Mg) পারমানবিক ভর ২৪৷ এভাবে সিলিকন(Si), সালফার(S), আর্গন(Ar), এবং Ca(ক্যলসিয়াম) এর পারমানবিক ভর হবে যথাক্রমে ২৮, ৩২, ৩৬ এবং ৪০৷

বুদ্ধি-৩ঃ
১১ থেকে ২০ পর্যন্ত বিজোড় মৌলের পারমানবিক সংখ্যা দ্বিগুনের সাথে ১ যোগ করলে বিজোড় মৌলের পারমানবিক ভর পাওয়া যায়৷

উদাহরণস্বরুপঃ সোডিয়ামের(Na) পারমানবিক সংখ্যা ১১, এর দ্বিগুনের সাথে ১ যোগ করলে হয় (১১×২)+১= ২৩৷

অতএব, সোডিয়ামের(Na) পারমানবিক ভর হবে ২৩৷ এভাবে, অ্যালুমিনিয়াম(Al), ফসফরাস(P), ক্লোরিন(Cl) এবং পটাশিয়ামের(K) পারমানবিক ভর হবে যথাক্রমে ২৭, ৩১, ৩৫.৫(ব্যতিক্রম) এবং ৩৯৷

 

বুদ্ধি-৪ঃ
২১ থেকে ৩০ পর্যন্ত জোড় মৌলের পারমানবিক সংখ্যা দ্বিগুন এর সাথে ৪ যোগ করলে জোড় মৌলের পারমানবিক ভর পাওয়া যায়৷

উদাহরণস্বরুপঃ টাইটেনিয়ামের(Ti) এর পারমানবিক সংখ্যা ২২, এর দ্বিগুনের সাথে ৪ যোগ করলে হয় (২২×২)+৪=৪৮৷ অতএব, টাইটেনিয়ামের(Ti) এর পারমানবিক ভর হবে ৪৮৷ এভাবে, ক্রোমিয়াম(Cr), লোহা(Fe), নিকেল(Ni) এবং জিঙ্ক/দস্তা(Zn) এর পারমানবিক ভর হবে যথাক্রমে ৫২, ৫৬, ৬০ এবং ৬৫.৩৮(ব্যতিক্রম)৷

বুদ্ধি-৫ঃ
২১ থেকে ৩০ পর্যন্ত বিজোড় মৌলের পারমানবিক সংখ্যা দ্বিগুন এর সাথে ৫ যোগ করলে জোড় মৌলের পারমানবিক ভর পাওয়া যায়৷

উদাহরনস্বরূপঃ স্ক্যান্ডিয়ামের(Sc) পারমানবিক সংখ্যা ২১, এর দ্বিগুনের সাথে ৫ যোগ করলে হয় (২১×২)+৫=৪৭৷

অতএব, স্ক্যান্ডিয়ামের(Sc) পারমানবিক ভর হবে ৪৭৷ এভাবে ভ্যানাডিয়াম(V), ম্যাঙ্গানিজ(Mn), কোবাল্ট(Co) এবং কপার/তামার(Cu) এর পারমানবিক ভর হবে ৫১, ৫৫, ৫৯ এবং ৬৩.৫(ব্যতিক্রম)৷
Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x