প্রস্বেদন কাকে বলে?
উদ্ভিদের দেহাভ্যন্তর থেকে পাতার মাধ্যমে বাষ্পাকারে পানি নির্গমনের প্রক্রিয়াকে প্রস্বেদন বা বাষ্পমোচন বলে। প্রস্বেদন প্রধানত পাতার পত্ররন্ধ্রের মাধ্যমে হয়।
প্রস্বেদনের প্রকারভেদ
প্রস্বেদন কোথায় সংঘটিত হচ্ছে তার ভিত্তিতে প্রস্বেদন তিন প্রকার। যথাঃ
১) পত্ররন্ধ্রীয় প্রস্বেদন,
২) ত্বকীয় বা কিউটিকুলার প্রস্বেদন এবং
৩) লেন্টিকুলার প্রস্বেদন।
প্রস্বেদনের গুরুত্ব
উদ্ভিদ জীবনে প্রস্বেদন একটি অনিবার্য প্রক্রিয়া। প্রস্বেদনের ফলে উদ্ভিদদেহ থেকে প্রচুর পানি বাষ্পাকারে বেরিয়ে যায়। এতে উদ্ভিদের মৃত্যুও হতে পারে। তাই আপাত দৃষ্টিতে উদ্ভিদের জীবনে প্রস্বেদনকে ক্ষতিকর প্রক্রিয়া বলেই মনে করা হয়। এজন্য প্রস্বেদনকে বলা হয় উদ্ভিদের জন্য এটি একটি “Necessary evil”, তবুও প্রস্বেদন উদ্ভিদ জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রস্বেদনের ফলে উদ্ভিদ তার দেহ থেকে পানিকে বের করে অতিরিক্ত পানির চাপ থেকে মুক্ত করে। প্রস্বেদনের ফলে কোষরসের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। কোষরসের ঘনত্ব বৃদ্ধি অন্তঃঅভিস্রবণের সহায়ক হয়ে উদ্ভিদকে পানি ও খনিজ লবণ শোষণে সাহায্য করে। উদ্ভিদ দেহকে ঠাণ্ডা রাখে এবং পাতার আর্দ্রতা বজায় রাখে। প্রস্বেদনের ফলে খাদ্য তৈরির জন্য পাতায় অবিরাম পানি সরবরাহ সম্ভব হয়। পাতায় প্রস্বেদনের ফলে জাইলেম বাহিকায় পানির যে টান সৃষ্টি হয় তা মূলরোম কর্তৃক পানি শোষণ ও উদ্ভিদের শীর্ষে পরিবহনে সাহায্য করে।
উদ্ভিদের প্রস্বেদন প্রক্রিয়া সালোকসংশ্লেষণ ও শ্বসনের মতো পরিবেশে তেমন কোনো প্রভাব রাখে না। তবে পানিচক্রে বাষ্পীভবনে অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠের পানি জলীয় বাষ্প হিসেবে বায়ুমণ্ডলে প্রেরণ করতে স্থলজ উদ্ভিদের প্রস্বেদন প্রক্রিয়া ভূমিকা রাখে। প্রস্বেদনের ফলে প্রচুর পানি বাষ্পাকারে বায়ুমণ্ডলে পৌঁছায়।