বিস্মৃতি কাকে বলে? | বিস্মৃতির উপকারিতা

বিস্মৃতি কাকে বলে?

স্মৃতির বিপরীত প্রক্রিয়া হল বিস্মৃতি বা বিস্মরণ। পূর্ব অভিজ্ঞতাকে যথাযথভাবে পুনরুৎপাদন ক্ষমতার অভাবকে বলে বিস্মৃতি বা বিস্মরণ। বিস্মৃতি সাময়িক হতে পারে, আবার দীর্ঘকালীন হতে পারে।

প্রতিদিনের জীবনে আমরা অনেক কিছু শিখি, অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করি। কিন্তু সারা জীবন ধরে যা কিছু শিখি তার সবকিছু আমাদের মনে থাকে না। অর্জিত অভিজ্ঞতাকে যখন আমরা মনে সংরক্ষণ করতে পারি তখন তার নাম স্মৃতি আর এই সংরক্ষণের অভাব হল বিস্মৃতি বা বিস্মরণ। আমাদের অর্জিত অভিজ্ঞতার অতি ক্ষুদ্র অংশই আমরা ধরে রাখতে পারি। কোন অভিজ্ঞতা বা শিক্ষণীয় বিষয় পুনরুদ্রেক করতে না পারার নামই বিস্মৃতি। শিখন – স্মৃতি = বিস্মৃতি।

অর্থাৎ বিস্মৃতির অর্থ হচ্ছে যে বিস্মৃত বিষয়টির প্রতিরূপ মস্তিষ্কে সংরক্ষিত হয় নি অথবা হলেও তার পুনরুৎপাদনে কোন না কোন ভাবে অন্তরায় ঘটেছে। কিছু শেখার পর যত সময় যেতে থাকে বা আমরা যত নতুন বিষয় শিখতে থাকি, ততই পর্বের শেখা সব কিছু মনে থাকে না। পূর্বে শেখা হয়েছে এমন কোন বিষয় স্মরণ করার স্থায়ী বা সাময়িক অভাবকে বিস্মৃতি বলে।

বিস্মৃতির উপকারিতা

মনোবিজ্ঞানী রিবর্টের মতে স্মৃতির জন্য বিস্মৃতির প্রয়োজন। মানসিক শক্তির সীমাবদ্ধতার জন্য অজস্র বিষয়বস্তু মনে রাখা সম্ভব নয়। একটি বস্তু বা তথ্য শিখতে গিয়ে যে ভুলগুলো শিক্ষার্থী অসতর্কতাবশত শিখে ফেলে, যেগুলো ভুলে না গেলে শুদ্ধটি সে শিখতে পারবে না। নির্ভূলকে মনে রাখতে হলে ভুলকে ভূলতে হবে, প্রয়োজনীয় বস্তু মনে রাখতে হলে অপ্রয়োজনীয়কে ভুলতে হবে।

এছাড়া, জীবনে অনেক অতৃপ্তিকর ও বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা যেমন – প্রিয়জনের মৃত্যু, কর্মে ব্যর্থতা, লজ্জা – অপমানের ঘটনা, বন্দুর সঙ্গে মনোমালিন্য ইত্যাদি আছে। এই ধরনের অভিজ্ঞতা বিস্মৃত না হলে জীবনের যাতনা বেড়ে যায়। বিস্মৃতি জীবনকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। ভুলে যাওয়া মনে রাখার মতই মস্তিষ্কের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

আরও পড়ুনঃ

Similar Posts