শ্রেণিবিন্যাসের বিভিন্ন ধাপ
শ্রেণিবিন্যাসের প্রতিটি ধাপে তার আগের ধাপের বৈশিষ্ট্যগুলাের সাথে নতুন কিছু বৈশিষ্ট্য যােগ হয়। যত উপরের ধাপ, তার অন্তর্ভুক্ত বৈশিষ্ট্যের সংখ্যা তত কম এবং অন্তর্ভুক্ত জীবের সংখ্যা তত বেশি। আবার যত নিচের ধাপ, তার অন্তর্ভুক্ত বৈশিষ্ট্যের সংখ্যা তত বেশি এবং অন্তর্ভূক্ত জীবের সংখ্যা তত কম। একটি জীবকে প্রজাতি পর্যায়ে বিন্যাসে মূলত আন্তর্জাতিক কোড চিহ্নিত সাতটি ধাপ আছে।
রাজ্য (Kingdom)
পর্ব (Phylum) / বিভাগ (Division)
শ্রেণি (class)
বর্গ (order)
গোত্র (Family)
গণ (Genus)
প্রজাতি (Species)
উপরের ধাপ যেন বড় একটা সেট আর তার নিচের ধাপ হলাে তার উপসেট। রাজ্যের উপসেট হলাে পর্ব, পর্বের উপসেট হলাে শ্রেণি, শ্রেণির উপসেট হলাে বর্গ… ইত্যাদি। শ্রেণিবিন্যাসের এই পদ্ধতিকে বলে নেস্টেড হায়ারার্কি (nested hierarchy)। অনেক সময় পুনরাবৃত্তি এড়ানাের জন্য আগের ধাপের যেসব বৈশিষ্ট্য পরের ধাপেও থাকে, সেগুলাে উহ্য রাখা হয়। সেভাবে লিখলে মানুষের (Homo sapiens) শ্রেণিবিন্যাস হবে এরকমঃ
রাজ্য (Kingdom): Animalia
কারণ, সুকেন্দ্রিক কোষবিশিষ্ট, বহুকোষী, পরভােজী এবং জটিল টিস্যুতন্ত্র আছে।
পর্ব (Phylum): Chordata
কারণ, জীবনের কোনাে এক পর্যায়ে নটোকর্ড থাকে।
শ্রেণি (Class): Mammalia
কারণ, বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ায় এবং লােম/চুল আছে।
বর্গ (order): Primate
কারণ, আঁকড়ে ধরার উপযােগী হাত এবং ঘ্রাণ অপেক্ষা দৃষ্টিশক্তি বেশি উন্নত।
গোত্র (Family): Hominidae
কারণ, শিম্পাঞ্জি, গরিলা, বানর প্রভৃতির সাথে সাদৃশ্য আছে।
গণ (Genus): Homo
কারণ, দেহের অনুপাতে মস্তিষ্ক সবচেয়ে বড় এবং খাড়াভাবে দুই পায়ে হাঁটতে পারে।
প্রজাতি (Species): Homo sapiens
কারণ, চওড়া এবং খাড়া কপাল, খুলির হাড় Homo গণের অন্য প্রজাতির তুলনায় পাতলা এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে উন্নত।
কোনাে প্রজাতিকে শ্রেণিবিন্যাসের কোন ধাপে কেন অন্তর্ভুক্ত করা হলো, তার কারণগুলাে জীববিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে জেনে নিতে হয়, কারণ কোনাে একটা প্রজাতির শ্রেণিবিন্যাস লেখার সবচেয়ে প্রচলিত রীতি এটাই, যেখানে আলাদা করে কারণগুলাে লেখা হয় না।