শিখনঃ ধারণা এবং তত্ত্বাবলি

শিখনঃ ধারণা এবং তত্ত্বাবলি

১। অন্তর্দৃষ্টি কী?

উত্তরঃ অন্তর্দৃষ্টি হলো এক ধরনের প্রত্যক্ষণ। কোনো ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে প্রত্যক্ষণের মধ্যে যদি অসম্পূর্ণতা থাকে, সেই অসম্পূর্ণতা ব্যক্তির মধ্যে মানসিক চাপের সৃষ্টি করে। যার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ব্যক্তি সক্রিয় হয় এবং অসম্পূর্ণতা পূরণ করে।

২। অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিখন বলতে কি বুঝ?

উত্তরঃ যে শিখন পরিস্থিতিকে সামগ্রিকভাবে প্রত্যক্ষণের পর অংশগুলির মধ্যে যথাযথ সমন্বয় করে প্রতিক্রিয়া করে তাকেই অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিখন বলে।

৩। প্রেষণা কাকে বলে?

উত্তরঃ ‘প্রেষণা’ কথার অর্থ হলো উদ্দেশ্যমুখী আচরণ সম্পাদনের প্রবণতা। এককথায়, ব্যক্তির বিভিন্ন প্রকার চাহিদা পরিতৃপ্তির জন্য যে পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া তার আচরণধারাকে নিয়ন্ত্রণ করে তা হলো প্রেষণা।

৪। অনুরাগ কাকে বলে?

উত্তরঃ অনুরাগের সংজ্ঞা বিষয়ে মনোবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ম্যাকডুগালের মতে, অনুরাগ হলো ব্যক্তির সুপ্ত মনোযোগ। হার্বার্ট বলেন, অনুরাগ হল নতুন জ্ঞান সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি। ড্রেভারের মতে, মনোভাবের গতিশীল অবস্থাই হলো অনুরাগ।

৫। শিখনের শিক্ষককেন্দ্রিক শর্তগুলি কী?

যে সমস্ত শর্তের দ্বারা শিক্ষক যথাযোগ্যভাবে শিক্ষার্থীকে সক্রিয় করতে সক্ষম হন সেগুলিকে শিখনের শিক্ষককেন্দ্রিক শর্ত বলা হয়। এই শর্তগুলি হলো – শিখনের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা, শিখনের বাস্তবমুখী উদ্দেশ্য সম্বন্ধে সচেতন করা, আধুনিক শিক্ষণপদ্ধতির ব্যবহার, বিভিন্ন মাধ্যমের ব্যবহার, শিক্ষার্থীর কৃতকার্যতার সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা, শিক্ষার্থীকে তার অগ্রগতি সম্পর্কে সচেতন করা, শিক্ষণীয় বিষয় আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা, যথাযথ নির্দেশনা দান ইত্যাদি।

৬। শিখন কৌশলগুলি উল্লেখ করো।

উত্তরঃ শিক্ষার্থী যে উপায়ে শিখন সম্পন্ন করে তাকে শিখন কৌশল বলে। সাধারণত যে উপায়ে শিখন পরিচালনা করে তা হলো –

ক) সমগ্র এবং অংশ পদ্ধতিঃ শিখনীয় বিষয়টি যখন সমগ্রভাবে পাঠ করা হয় তাকে সামগ্রিক পদ্ধতি বলে। যখন আংশিকভাবে পাঠ করা হয় তখন আংশিক পদ্ধতি।

খ) সবিরাম এবং অবিরাম পদ্ধতিঃ শিখনীয় বিষয়টি অনুশীলনের মধ্যে বিরতি দেওয়া হলে বলা হয় সবিরাম পদ্ধতি আর একনাগারে পাঠ করা হলে বলা হয় অবিরম পদ্ধতি।

গ) অতিশিখনঃ শিখন সম্পন্ন হওয়ার পরেও যদি অনুশীলন করা হয় তাকে বলে অতিশিখন কৌশল।

৭। শিখনের বিষয়কেন্দ্রিক শর্তগুলি কি?

উত্তরঃ শিখনের জন্য শিক্ষার্থীকে সক্রিয় করে তোলা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীকে আত্ম-সক্রিয় করার বিষয়বস্তু আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে হয়। যেসব শর্ত শিখনীয় বিষয়বস্তুকে আকর্ষণীয় করে তোলে সেগুলি হলো বিষয়কেন্দ্রিক শর্ত। এই শর্তগুলি হলো – শিক্ষণ সহায়ক বস্তু ব্যবহার, শিক্ষামূলক প্রদীপন ব্যবহার, সুলভ বস্তু দিয়ে বিষয়বোধের অনুকূল প্রদীপন গঠন বিভিন্ন মাধ্যমের ব্যবহার ইত্যাদি।

৮। শিখনের সমগ্র পদ্ধতি কী?

উত্তরঃ শিখনের বিষয়বস্তুর সম্পূর্ণটি যখন বারবার পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে শিখন সম্পন্ন করা হয় তাকে বলা হয় সমগ্র পদ্ধতি।

৯। শিখনের আংশিক পদ্ধতি কী?

উত্তরঃ শিখনের বিষয়বস্তুটিকে যখন ছোট ছোট কয়েকটি অংশে ভাগ করে এবং সেগুলি পাঠের মাধ্যমে শিখন হয় তখন সেই পদ্ধতিকে আংশিক পদ্ধতি বলা হয়।

১০। অতিশিখন কী?

যখন শিখন সম্পন্ন হওয়ার পরেও অনুশীলন চালিয়ে যাওয়া হয়, তাকে অতিশিখন বলা হয়।

Similar Posts